খোয়াকিং সরোইয়া বাস্তিদা। অষ্টদশ শতাব্দির চিত্রশিল্পিদের মধ্যে অন্যতম এই স্পেনিশ শিল্পি সরোইয়া। স্পেনের ইতিহাসে শ্রেষ্ট শিল্পি ফ্রানসিসকো গয়া এবং পাবলো পিকাশোর অন্তবর্তী সময়ে আর্বিভূত এই শিল্পি তার অনাবদ্য শিল্প সৃষ্টির মধ্যদিয়ে শিল্পের পরিমন্ডলে নন্দিত শিল্পিদের মাঝে নিজেকে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন। গতানুগতিক সকল বিধি উপেক্ষা করে বিষয়বস্তুকে যে ভাবে দেখতেন ঠিক অনুরুপ ভাবেই অঙ্কনের ভেতর দিয়ে ফুটিয়ে তুলতেন এই নন্দিত শিল্পি।
১৮৬৩ সালের ২৮ শে ফেব্রুয়ারী স্পেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ভালেন্সিয়ায় জম্মগ্রহন করেন এই বরেন্য শিল্পি।
তার জম্মের ২ বছর পর মা বাবাকে হারান তিনি। মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে পিতামাতা মৃত্যুবরণ করার পর বোনসহ সরোইয়া আপন খালার তত্ত্বাবধানে লালিত পালিত হন। শিল্পির খালু ছিলেন পেশায় একজন তালাওয়ালা।
১৮৭৪ সালে সরোইয়া স্হানীয় একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এরং পরাশুনার পড়শাপাশি তার খালুর পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কিনতু কয়েক বছর পর এই কিষোর সরোইয়ার ভেতরে শিল্পের প্রতিভা প্রকাশ পেতে শুরু করে এবং ১৮৭৭ সালে তিনি স্হানীয় শিল্পকলা একাডেমীতে ভর্তি হন।
দীর্ঘ একযুগ প্যারিস, রোমে অবস্হান করে শিক্ষালাভ শেষে ১৮৯০ সালে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং মাদ্রিদে পেশাগত প্রতিষ্ঠান খুলে চিত্রকলা র্চচ্চা শুরু করেন।
১৮৮০ সালে তার শিল্পকর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ এল ইরিস সোসইটির পক্ষ থেকে রৌপপদক লাভ করেন। এরপর ভেলেনসিয়া রিজিওনাল প্রদর্শনীতে প্রথম স্বর্নপদক অর্জন করেন। এরপর ১৮৮৪ থেকে ১৮৯০ সাল অবধি অনুষ্ঠিত প্রদশর্নীতে তার চিত্রকলাকে পুরুস্কারে ও পদকে ভুষিত করা হয়। ১৯০০ সালে এক্সপোজিশন ইউনিভারশাল প্যারিস শিল্পি সরোইয়াকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের শিল্পি হিসেবে স্বীকৃতি দান করে সম্মানজনক পদকে ভূষিত করে।
এরপর ১৯০৬ সালে প্যারিস , ১৯০৭ সালে জার্মানীর কোলন এরং ১৯০৮ সালে লন্ডনের প্রদর্শনীতে তার চিত্রকলা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার জনপ্রিয় চিত্রকলার মধ্যে " স্নান শেষে আটপৌরে গোলাপি গাউন সজ্জা" , "এখনোও তারা বলছে মাছ ধরা ব্যায়বহুল" ছবিগুলো ১৮৯৫ সালে জাতীয় শিল্প প্রদর্শনীতে পুরুস্কার লাভ করে। ১৯২৩ সালে ১০ই এপ্রিল দুরারোগ্য ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে এই বিশ্ববরেন্য শিল্পি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
খোয়াকিং সরোইয়া তার শিল্পকলায় ইউরোপীয়দের জীবন যাত্রা এবং ঐতিহ্য নিপুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। তার প্রতিটি শিল্পে ছিল জনমানবের উপস্হিতি।
ভূমধ্যসাগরীয় অন্ঞ্চলের মনোরম দৃশ্য, সমুদ্র সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশ নিখুত ভাবে তার তুলিতে স্হান পেয়েছিল। তার প্রতিটি ছবিতে রঙের স্পন্দন এবং উজ্জ্বলতা ছিল বাস্তবতায় পরিপূর্ন। আর সে কারণে সরোইয়া ইউরোপের শিল্প অনুরাগীদের মন জয় করতে পেরেছিলেন এবং তাদেরই অনুপ্রেরণায় শিল্পি নতুন নতুন শিল্প সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ হতে পেরেছিলেন।
http://en.wikipedia.org/wiki/Joaquín_Sorolla
মন্টেলিয়ন আর্টিলারী পার্কে প্রতি রক্ষা । ১৮৮৪ সাল।
ভেলেনসিয়ার অভিনয় মঞ্চের দৃশ্যপটাবলী। ১৮৯৩ সাল।
বালকেরা সমুদ্র সৈকতে । ১৯১০
ল্যান্ডস্কেপ । শিল্পির ফুলের বাগান।
শিল্পির সহধর্মীনি ও কন্যাদ্বয়।
স্নান শেষে আটপৌরে গোলাপি গাউন সজ্জা ।
ঘোড়ার স্নান। ১৮৯০ সাল।
জাহাজের পাল সেলাই ।
১৮৯৬ সাল।
সমুদ্র সৈকতে পায়চারী। ১৯০৯ সাল।
ঝরনার প্রতিবিম্ব । ১৯০৮ সাল।
এখনোও তারা বলছে মাছ ধরা ব্যায়বহুল। ১৮৮৪ সাল।
পড়ন্ত বিকেলের সূর্য। ১৯০৩ সাল ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।