একজন ইউনুস খান বেঁচে থাকতে চান গণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং উদ্যেগ গ্রহণের মাঝে।
পৃথিবীর সব বড় বড় লেখকদের বই ডিজিটালে রূপান্তরিত করে এক বিশাল অনলাইন লাইব্রেরী গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছিলো গুগল। এই উদ্দেশ্যে সব বড় বড় লেখক ও প্রকাশকদের সাথে গোপনে একচেটিয়া চুক্তিও করে তারা। এই বিষয়টি প্রকাশ পেলে আমেরিকার সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে ভার্চুয়াল জগৎ পর্যন্ত তুমুল বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। খবর বিবিসি অনলাইনের।
১২৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে বিভিন্ন লেখক প্রকাশকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলো গুগল। এই বিষয়টি নিয়ে যুদ্ধ যখন তুঙ্গে তখন গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের সুশীল সমাজ। এ মামলার শুনানী ছিলো শুক্রবার। কিন্তু নিউইয়র্ক কোর্ট আপাতত শুক্রবারের বদলে মঙ্গলবারে শুনানীর দিন ধার্য করেছে।
বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, সব মিলিয়ে গুগল বেশ একটা ঝামেলার মধ্যেই আছে।
সময় যতো গড়িয়ে যাচ্ছে গুগলের পক্ষ বিপক্ষ দল ততই ভারি হচ্ছে। এদিকে জানা গেছে, আসন্ন শুনানিকে সামনে রেখে গুগল তার দল গোছাচ্ছে। গুগলের দলে আছে খ্যাতিমান প্রফেসর থেকে শুরু করে ছাত্র-এমনকি সমাজ কর্মীরাও।
পাশাপাশি, এই দুঃসময়ে গুগল তার পাশে পেয়েছে বেশ কিছু নামিদামি সংগঠনের সমর্থন। এদের মধ্যে রয়েছে আমেরিকার ‘লিডারশিপ কনফারেন্স অন সিভিল রাইটস’ এর প্রেসিডেন্ট ওয়েড হেন্ডারসন।
তিনি গুগলের এই কার্যক্রমকে সমর্থন করে বলেন, ‘জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করা সবার মৌলিক অধিকার। তথ্য একজন ব্যক্তিকে অনেক কিছু জানতে, শিখতে সাহায্য করে। তেমনি তাকে সৃষ্টিশীল একজন মানুষে পরিণত করার ব্যাপারেও সাহায্য করে। ’ হেন্ডারসন বলেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক সমাজে তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে সবার সমান সুযোগ থাকা দরকার। ’
আমেরিকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ‘ইউনাইটেড স্টেটস স্টুডেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন’ এর প্রেসিডেন্ট গ্রেগরি সেনডানার নেতৃত্বে এই ছাত্র সংগঠনটিও পাশে এসে দাঁড়িয়েছে গুগলের।
অকুণ্ঠ সমর্থন দান করে গ্রেগরি বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহে থাকা মিলিয়ন মিলিয়ন বইয়ের জগতে ঢোকার বিশেষ সুযোগ শুধু তারাই পায় যারা এর বিশাল ব্যয় বহনে সক্ষম। অথচ গুগলের সুবিশাল ডিজিটাল অনলাইন লাইব্রেরিতে শুধুমাত্র একটা আঙ্গুলের টোকাতেই প্রবেশ করতে পারবে যে কোন সাধারণ ছাত্র। ’
এদিকে গুগলের বিরুদ্ধ পক্ষও বেশ শক্তিশালী বলেই দেখা যাচ্ছে। গুগলের বিরুদ্ধ পক্ষরা মিলে একটা মৈত্রী চুক্তি করেছে। সমস্ত বিরুদ্ধ পক্ষকে একত্রিত করে একটি মৈত্রীতে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে একটি অলাভজনক ইন্টারনেট সংস্থা।
এই সংস্থার সাথে একটি কোয়ালিশন গঠন করেছে টেকনলজির আরও দিকপালরা। এদও মধ্যে রয়েছে, যেমনঃ ইয়াহু, মাইক্রোসফট তেমনি আমাজন এর মত বহুল পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোও। এদের দলেও আছে বিভিন্ন লাইব্রেরি, প্রকাশন, লেখক এবং সাংবাদিকরাও।
এই সংস্থার একজন সদস্য পিটার ব্রান্টলি বলেছেন, ‘আজ থেকে সাতশো বছর আগে গুটেনবার্গের ছাপাখানার আবিষ্কার, তথ্য প্রবাহের গতিকে পথ দেখিয়ে যেমন একটি নতুন যুগে পৌঁছে দিয়েছিলো; তেমনি ব্যাপকভাবে বই ডিজিটালে রূপন্তর করা হলে এটা আমাদের বই পড়ার অভ্যাস ও লেখার অভ্যাসকে পরিবর্তন করে একটি নতুন যুগের সুচনা করবে। ’
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, গুগলের ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী আমাজন ডট কম গুগলের এই চুক্তিকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলেই মনে করছে।
তাদের মতে, এই ডিজিটাল লাইব্রেরীর কর্তৃত্ব এককভাবে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং গুটিকয় প্রকাশকের হাতে থাকা ঠিক নয়। এর ফলে তারা একচেটিয়া ব্যবসা করবে। এতে সমস্যায় পড়বে বইয়ের ক্রেতা, লাইব্রেরী ও সাধারণ ছাত্ররাও।
এদিকে গুগলের বিরুদ্ধে অন্যের তথ্য অবৈধ ভাবে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ‘ফেডারেল ট্রেড কমিশন’ সাধারণ মানুষের তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুগলকে একটি নীতিমালা তৈরি করতে বলেছে।
এই বিষয়টি মাথায় রেখে গুগল তার অনলাইন ডিজিটাল লাইব্রেরীর জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করেছে। এই নীতিমালার আওতায় দশ মিলিয়ন বই তার ডিজিটাল লাইব্রেরীর জন্য প্রাথমিক ভাবে মনোনিত করেছে গুগল।
এ. টি. সি-র চেয়ারম্যান জন লিবোউইজ বলেছেন, গুগল তার প্রণীত নীতিমালা অনুসরণ করছে কিনা তা তারা ভাল করে পরীক্ষা করে দেখবেন।
সব দিক দেখে মনে হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও, গুগল একচেটিয়াভাবে অনলাইন লাইব্রেরীর অনুমোদন পাবে কি-না তা ৭ অক্টোবরের আগে আর জানা যাচ্ছে না। কারণ কোর্ট এই চুক্তির উপর চূড়ান্ত সুনানির দিন ধার্য করেছে ৭ অক্টোবর।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।