এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
কাক ডাকা ভোরে আর কাউকে না হোক বাবা ওকে ঘুম থেকে ডেকে তুলবেই তা সে যত রাতেই ঘুমাক না কেন , সকালের নাশ্তার জন্য কিছু দরকার হলে তা দোকান থেকে ওকেই আনতে হবে, ঘরের টুকিটাকি কাজ গুলো যেন ওর অপেক্ষাতেই থাকে কখন সে ওগুলোতে হাত লাগাবে আর ঠিকঠাক করবে ... নাহ কাজগুলো যে সে অনিচ্ছায় করে তা নয় বরং ইচ্ছা অনিচ্ছা দুটো মিলিয়েই সে কাজগুলো করে থাকে। ইচ্ছা অনিচ্ছা কথা দুটোর মাঝে বিস্তর পার্থক্য থাকলেও তার কাছে এর আসলে কোন মুল্য নেই, কারন ও জানে কাজগুলো ওকেই করতে হবে তাই ইচ্ছা অনিচ্ছার ধার না ধরেই " আমাকেই করতে হবে তাই করবো" এ কথার উপর ভিত্তি করেই সব কাজ গুলো নিজের হাতেই একের পর এক সমাধা করে চলে ... পড়ালেখায় কখনো যে সে খারাপ ছিল তা নয়, রেজাল্টও কখনো খুব ভালো না করতে পারলেও সন্মানজনক ফলাফল নিয়েই সবসময় ঘরে ফিরেছিল, তবে তার পিঠাপিঠি ভাই বোনেরা যদি এর কাছাকাছি ও রেজাল্ট নিয়ে ঘরে ফিরে তবে তাদেরকে মাথায় তুলে রাখা হয় , ঘরে সেদিন ভাল ভাল রান্না করা হয় কখনো তাদেরকে উৎসাহ দেয়ার জন্য গিফট ও দেয়া হয় আর ওকে বলা হয় পরের বার যেন আরো ভাল রেজাল্ট করে এটা অতোটা ভাল হয়নি ... তার ও ইচ্ছে করে কোন গিফট না হোক মাঝে মাঝে এমন একটু সুন্দর কথা শুনতে একটু আদর পেতে কাজের পরে পড়ার জন্য একটু বেশী সময় পেতে যাতে করে পরীক্ষায় আরেকটু ভাল রেজাল্ট করা যায় ... আর ... উমম ... আরো বিশেষ কিছু পেতে ইচ্ছে করে তবে সেগুলো হয়তো কখনো পাবে না ... বিশেষ কিছুর কথা যখন এসেই গেল তখন ওসব দিকে একটু ফিরে দেখা যাক...
যদিও ওর বিশেষ কিছু গুলো হয়ত সবার জন্য সাধারন কিছু ই হবে তবুও সেগুলো ওর জন্য বিশেষ কিছু হয়েই থেকে যাবে সবসময় ... ঠিক যেমন বাবার হাতটা যদি কখনো ওর মাথায় একবারের জন্যও রাখত তবে হয়তো এর চেয়ে শান্তির আর কিছুই থাকতো না , কোন একটা দিন যদি মায়ের বকুনি বা ভাই বোনদের টিপ্পুনি থেকে রক্ষা পেত তবে হয়ত সেদিনটা ওর জীবনের সবচেয়ে ভাল দিন হয়ে উঠতো ... শুধু কি তাই ... ক্লাসের ছেলে মেয়েগুলো যদি একটা দিন ওকে নিয়ে হাসাহাসি না করতো তবে সে দিনটি হয়ত ওর জন্য পরম শান্তির কারন হতো ... আর যদি মনের কোন উকি দেয়া ভালবাসার মানুষটা তাকে ইচ্ছে করে বোকা না বানিয়ে, তাকে অন্ধকারে না রাখার চেষ্টা করে তার পছন্দের মানুষের সাথেই ঘুরতে যেত তবে হয়ত সেটি হয়ে উঠতো তার জীবনের অন্যতম স্মরনীয় দিন ।
তবুও সে বাসার সবার গালমন্দ শুনে প্রতিউত্তর করে না, সহপাঠীদের টিপ্পুনীকে সিরিয়াসলি না নিয়ে হাসি মুখে ওদের সামনে আরো নিজেকে হাস্যকর জীব হিসেবে পরিগনিত করে, সব কিছু জেনে বুঝেও মনের মানুষটির কাছে ইচ্ছে করেই বোকা সেজে থাকে যাতে ওকে বোকা বানিয়ে সে যে আনন্দ পায় তাতে যেন কখনো কমতি না আসে ... কারন সে জানে এইসব করেই অন্য সব মানুষগুলো শান্তি পায়, নিজেদের মাঝে আনন্দের জোয়ারে ভেসে যায়, আত্মতৃপ্তিতে ভরে ওঠে ওদের মন আর সেই সাথে চরিতার্থ করে নিজেদের কাংক্ষিত সুপ্ত বাসনাগুলো ... আজ তাইতো সে নিজেকে বোকা, তুচ্ছ আর অপদস্ত বানিয়েই অন্য সবার মনে আনন্দের বন্যা বইয়ে দেয়াকেই নিজের পাথেয় করে নিয়েছে ...কারন ও জানে, মানুষের মুখে একটুখানি হাসি ফোটানো পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর অন্যতম।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।