আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহবাগ যেতে চাওয়ায় বেদম প্রহার, টিসি পেল ক্যামব্রিয়ান স্কুল ছাত্ররা। ক্যামব্রিয়ান ও বাশার এর জামায়াত সম্পৃক্ততা এখনই খতিয়ে দেখা হোক।

যা বিশ্বাস করি না, তা লিখতে-বলতে চাই না, পারবোও না। কিন্তু যা বিশ্বাস করি, তা মুখ চেপে ধরলেও বলবো, কলম কেড়ে নিলেও লিখবো, মারলেও বলবো, কাটলেও বলবো, রক্তাক্ত করলেও বলবো। আমার রক্ত বরং ঝরিয়েই দাও, ওদের প্রতিটি বিন্দুর চিৎকার আরও প্রবল শূনতে পাবে। সারা দেশ যখন শাহবাগমুখী তখন ঢাকার ক্যামব্রিয়ান স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ গণজাগরণের প্রজন্ম চত্বরে যেতে চাওয়ায় ১৪-১৫ জন শিক্ষার্থীকে বেদম পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু পেটানো নয়, এ জন্য তাদের স্কুল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

অভিভাবকদের এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে একজন অভিভাবক নিশ্চিত করেছেন। অভিভাবকরা এ ঘটনার পর তাঁদের সন্তানদের আর ওই স্কুল ও কলেজে না পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতকাল বুধবার অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছে শাহবাগ যাওয়ার আবেদন করার পর পরই তাদের বারিধারার জামালপুর টাওয়ারে অবস্থিত স্কুল ও কলেজ শাখার সভাকক্ষে ডেকে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। শিক্ষার্থী পেটানোর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দাঁড় করায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা শুধু শাহবাগ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদনই করেনি, তারা শাহবাগের আন্দোলনে শরিক হতে অন্য ছাত্রদেরও প্রলুব্ধ করেছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিঘি্নত হয়েছে মনে করেই কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্র্থীদের ওপর নির্যাতন চালায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্যাতনের শিকার দশম শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত হোসেন ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গুলশান থানায় গতকাল একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-৭৬৯) করেছে। অন্য ছাত্রদের অভিভাবকরা এ ঘটনার প্রতিকার পাওয়ার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে। নির্যাতিত অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সাহিম জানায়, তাকে শুধু অমানুষিক নির্যাতন করাই হয়নি, তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি দেওয়া হয়েছে। এতে তার শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। নির্যাতনের শিকার একাধিক ছাত্র বলে, গতকাল সকাল ১০টার দিকে আবেদনপত্র নিয়ে অফিস কক্ষে যাওয়ার পর পরই পেটানোর পাশাপাশি তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোনসেট ভেঙে ফেলা হয়, যাতে ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে কাউকে না জানানো যায়।

নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা ঘরে বসে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে নতুন প্রজন্মের গণজোয়ারের দৃশ্য প্রতিদিন দেখছে। সারা দেশের ব্লগার, বিভিন্ন পেশাজীবী, ছাত্র-শিক্ষক, যুব শ্রেণীর লাখ লাখ মানুষ সেখানে সমবেত হচ্ছে। সবাই একাত্তরের নরঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছে। তাই ওই কাতারে দাঁড়ানোর জন্য ক্যামব্রিয়ান কলেজের সব শিক্ষার্থীর পক্ষে তারা কর্তৃপক্ষের কাছে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে গিয়ে একাত্মতা প্রকাশের জন্য একটি লিখিত আবেদন করে। এতেই কলেজ কর্তৃপক্ষ খেপে যায়।

নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের বেদম পেটানোর সময় বলা হয়, শাহবাগ যাওয়ার খায়েশ মিটিয়ে দেওয়া হবে। অভিভাবকরা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীই শাহবাগে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে। তার অনুমতি দেওয়া না দেওয়ার এখতিয়ার কলেজ কর্তৃপক্ষের রয়েছে। তাই বলে এ জন্য তাদের পিটিয়ে আধমরা করার অধিকার তাদের নেই। আরাফাত হোসেনের বাবা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্যামব্রিয়ান কলেজের এমন ন্যক্কারজনক আচরণে যুদ্ধাপরাধীর চেহারা প্রকাশ পেয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তরালে জামায়াতি পক্ষপাতিত্বের কথা জানলে কখনো সেখানে সন্তান ভর্তি করতেন না বলে তিনি জানান। একাধিক ছাত্রের অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করতে চাওয়ার জন্য এ ধরনের ঘটনার শিকার হওয়া দেশে নজিরবিহীন। ইতিমধ্যে একজন শিক্ষার্থীকে টিসি দেওয়া হয়েছে। অন্যদেরও পর্যায়ক্রমে টিসি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্যামব্রিয়ান স্কুল ও কলেজের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার দুই ছাত্রকে বেত দিয়ে মারার কথা স্বীকার করে বলেন, কয়েক জন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে অন্য শিক্ষার্থীদের জড়ো করছিল, যার প্রেক্ষিতে তাদেরকে শাসন করা হয়েছে।

কারণ এ প্রতিষ্ঠানে কোনো ঘটনা ঘটলে এর দায় তাদেরকেই নিতে হবে। কোনো ছাত্রকে বেত দিয়ে মারধোর করা আইনসঙ্গত কি না- সে প্রশ্ন তুললে চেয়ারম্যান বাশার নিরুত্তর থাকেন। শিক্ষার্থীদের তিনি শাহবাগ যেতে বাধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, কোনো স্থানে নিয়ে যেতে হলে অভিভাবকদের অনুমতি প্রয়োজন। তারা এ অনুমতি না নিয়েই শাহবাগ যাওয়ার জন্য জড়ো হতে থাকে। এদিকে,অবৈধ মাদরাসায় লাখ লাখ টাকা অনুদান দিচ্ছেন বিতর্কিত শিক্ষা ব্যবসায়ী ও ক্যামব্রিয়ান কলেজের মালিক এম কে বাশার।

ময়মনসিংহের ফুলপুরের এক মাদরাসায় বইও দিয়েছেন বাশার। শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের সাথে নানাভাবে সুসম্পর্ক স্থাপন করে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ছদ্মবেশী জামায়াত নেতা বাশার। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাশারের শিক্ষা ব্যবসায়ে সহায়তা করছেন আয়ের সাথে ব্যয়ের ও বয়সের সাথে ওজনের সঙ্গতিহীন কয়েকজন সংবাদকর্মী ও তথ্য কর্মকর্তা। জিয়া-খালেদাপুত্র তারেক রহমানের হাত ধরে উত্থান হওয়া এই ব্যবসায়ী এখন দেদার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা বোর্ডের বিতর্কিত ও অপসারিত চেয়ারম্যান শাহেদা ওবায়েদের সাথে ছবিযুক্ত কিছু বিষয় সামনে নিয়ে আসার জন্যে তদন্ত চলছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার একজন জানান।

সবকিছুর সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষী হলে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক এই রকম প্রতিষ্ঠান ও কর্তাব্যাক্তিদের।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.