...যেন এলিভেটরটা অনন্তকালের জন্যে বন্ধ হয়ে গেছে, আমি দাড়িয়ে আছি নিঃসঙ্গ ছাদের রেলিং ধরে।
এখন রাত প্রায় বারোটা। জোছনা ঝলসানো একটা রাত। চাঁদের দিকে বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকা যাচ্ছে না। কেমন জানি ঘোর লাগা একটা অনুভূতি।
গিয়েছিলাম অক্সফোর্ডে। ফিরতি ট্রেনে পুরোটা সময় চাঁদটা আমার সংগেই ছিল। ট্রেনের জানালায় চাঁদ কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর। এখানকার ট্রেনগুলো কেমন জানি নিঃশব্দ। পু ঝিক ঝিক শব্দ নেই।
কেমন জানি অনুভূতিহীন। হা..হা..ট্রেনের আবার অনুভূতি কি? তবুও বাংলাদেশের ট্রেন গুলোতে যেন একধরনের ভালোলাগা দুলুনি থাকে। এখানে যেন সবকিছুই প্রানহীন, চারিদিকে স্বপ্নহীন চোখের সারি। জিজ্ঞেস করলে, এরা উত্তর দেবে, 'ইয়াপ,অল রাইট'। কিন্তু আমি জানি কিছুই রাইট না,সব রং।
এদের কৃত্রিম হাসিতেই ধরা পড়ে এদের নিঃসঙ্গতা।
ড্রেস চেন্জ করে এইমাত্র বিছানায় এলাম। পানি পিপাসা পাচ্ছে কিন্তু বিছানা থেকে উঠতে ইচ্ছা করছে না। টেবিলে দুটো পানির বোতল। একটাতেও পানি নেই।
কিচেনে গিয়ে পানি ভরতেও ইচ্ছা করছে না। দিন দিন কি আরো অলস হয়ে যাচ্ছি? নাকি বয়স হয়ে যাচ্ছে?
ভাবছি, কি নিয়ে ভাবা যায়। ল্যাপটপে পবন দাস বাউলের একটা গান চলছে। ডিনারটা বেশী আগে করে ফেলেছি। ধুর...
কালকে সকালে অফিস আছে।
এক্ষুনি ঘুমিয়ে পড়া উচিৎ। যদিও নিকট অতীতে কোন উচিৎ কাজ করেছি বলেতো মনে পড়ে না। তাই যথারীতি একটা মুভি নিয়ে বসলাম। দ্যা লাস্ট লিজিয়ন। মোটামুটি নতুন মুভি।
কভারে ঐশ্বরিয়ার সুডৌল শরীরের ছবি।
সকালে অফিসের কি হবে কে জানে? জানি না এইভাবে আর কতদিন। রবিন্দ্রনাথের 'বাঁশী' কবিতার হরিপদ কেরানির ঘরে থাকতো একটা টিকটিকি। আমার ঘরে কিন্তু একটা টিকটিকিও নেই। এই হলো আমার সাথে তার মুল পার্থক্য।
অবশ্য তার মতো আমার ঘরে সিদ্ধিদাতা গনেশের ছবি নেই, সেখানে আছে ভ্যান গগের 'ক্যাফে টেরেস'। তবে কবিতাটার আবৃত্তিটা আমি প্রায়ই শুনি। আকবর বাদশার সাথে নিজেকে তুলনা করে মজা পাই, গর্ববোধ হয়। সান্তনা পাই ঐ লাইনটা শুনে, 'ঘরেতে এলোনা সেতো, মনে তার নিত্য আসা যাওয়া...'।
(পুরনো ডাইরি থেকে।
)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।