ফেসবুক আইডি:নাই
ইঁদুর একটি স্তন্যপায়ি প্রানি। ক্ষতিকারক প্রানি। ৪-৮ ইঞ্চি লম্বা হয়। খুব দ্রুত চলাচল করে, মাটিতে গর্ত করে থাকে এবং জমির ফসল, ঘরের আসবাব, কাপগড় প্রভৃতি কেটে নষ্ট করে।
------------
নিজের হাতে মেরে ১০ হাজার ইঁদুরের লেজ শুকিয়ে নিজের ঘরে সংরক্ষণ করে রেখেছেন মোঃ ফহিম উদ্দীন।
নিজের বাড়ির ইঁদুর নিধন করতে গিয়ে এখন ইঁদুর মারা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন তিনি ৩/৪টি ইঁদুর ধরে মারতে না পারলে অস্থির হয়ে উঠেন। ৭০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধের বাড়ি বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার দাসপাড়ার হাজীপাড়া মহল্লায়। পেশায় তিনি একজন কৃষক। ইঁদুর মারতে তার সহযোগী হিসাবে কাজ করে গ্রামের একদল শিশু-কিশোর।
তারাও ফহিম উদ্দিনের মত ইঁদুর শিকারে পারদর্শী হয়ে উঠেছে।
গত ১০ বছর ধরে তিনি ইঁদুর শিকারের নেশাতে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। তার এই শখ মেটাতে তিনি ইঁদুর মারা ফাঁদ তৈরি করেছেন। তাজা ইঁদুর ধরে মারতে পারবেন বলে তিনি সেই ফাঁদটি বানিয়েছেন। ফহিম উদ্দিনের কারণে বর্তমানে তার মহল্লায় ইঁদুরের উৎপাত কমে গেছে।
ইঁদুর শিকারের কথা মনে পড়লে তিনি তার ফাঁদ নিয়ে ছুটে যান বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে অথবা অন্যান্য মহল্লায়। তার আবিষ্কৃত ফাঁদটি পেতে ইঁদুরের জন্য অপেক্ষা করেন। কখনো ফাঁদ পেতে ইঁদুর শিকার করতে না
পারলে হাতে তুলে নেন কোদাল ও খোন্তা। এই কোদাল ও খোন্তা দিয়ে ইঁদুরের গর্ত দেখে দেখে অবশেষে না ধরতে পারা পর্যন্ত অভিযান চলতে থাকে। নেশার কারণেই বৃদ্ধ বয়সেও কোদাল কোপাতে বিরক্তবোধ বা কষ্ট পান না বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
তার প্রতিবেশী শিক্ষক মহিদুল ইসলাম জানান, তার ফাঁদে বিভিন্ন সময়ে বিচিত্র ধরনের ইঁদুর ধরা পড়ে । কোন কোন ইঁদুরের ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি । সেসব ইঁদুরের লেজও বিচিত্র ধরনের । সেই লেজগুলো তিনি বার বার দেখান এবং আনন্দ পান।
ইঁদুরের লেজ সংরক্ষণ পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত না হওয়ায় অনেক লেজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তার কয়েক হাজার লেজ বিড়াল নষ্ট করায় তিনি কষ্ট পেয়েছেন। এখন যা রয়েছে সেগুলো শুকিয়ে বস্তায় রেখেছেন। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, তার ইঁদুর শিকারের এ নেশা বন্ধ করার চেষ্টা করেও কাজ হয়নি। এখনো বৃদ্ধ বয়সে ইঁদুর শিকারে তিনি ব্যস্ত সময় কাটান।
বাগমারার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শামসুল হক জানান , গত বছর ইঁদুর নিধন অভিযান উপলক্ষে ফহিম উদ্দিন ১ হাজারের বেশি ইঁদুরের লেজ জমা দেন।
এজন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
------------
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের গরিব কৃষক বিনয় কুমার কর্মকার গত এক বছরে একাই প্রায় ৪০ হাজার ইঁদুর মেরে সাড়া ফেলেছেন৷ একইসঙ্গে কৃষি অধিদপ্তরের ঘোষিত ইঁদুর মারা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন বিনয়৷ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন একটি ১৪ ইঞ্চি রঙ্গিন টেলিভিশন৷ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত খাদ্যশস্যের ১০ শতাংশেরও বেশি খাদ্য চলে যায় ইঁদুরের পেটে৷ আর তাই ইঁদুর মারতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কৃষি অধিদপ্তর ইঁদুর মারার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে৷ এতে সাড়াও নাকি পাওয়া গেছে বেশ৷ কৃষি অধিদপ্তরের মুখপাত্র আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে কৃষকেরা আড়াই কোটির মত ইঁদুর মেরেছে৷
--------------
সিংহ ও ইঁদুর
সনাতন রূপঃ একটা ছোট ইঁদুর ঘুমন্ত সিংহের মুখের ওপর দিয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে তার ঘুম ভাঙিয়ে দিল। সিংহ খুব রেগে ইঁদুরটাকে ধরে মেরেই ফেলছিল, তখন ইঁদুর খুব কাকুতি-মিনতি করে তাকে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও, একদিন হয়তো আমি তোমাকে রক্ষাও করতে পারি।
ইঁদুরের কথা শুনে সিংহ হেসেই বাঁচে না, তবু কী মনে করে তাকে ছেড়ে দিল।
তারপর অনেক দিন পার হয়ে গেছে, হঠাৎ একদিন সেই সিংহ একটা শিকারির জালে আটকা পড়ে গেল।
সিংহের গর্জন শুনে ইঁদুর ছুটে এসে তার ধারালো দাঁত দিয়ে জালের দড়ি কাটতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সিংহ মুক্তি পেয়ে যায়। ইঁদুর বলল, দেখেছ, তুমি আগে বিশ্বাস করোনি, কিন্তু প্রয়োজনে একটা ছোট ইঁদুরও তোমাকে রক্ষা করতে পারে।
সুবচনঃ ভালো কাজের প্রতিদান পাওয়া যায়।
আধুনিকঃ সিংহ একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির জিএম।
নেংটি ইঁদুর সেই কোম্পানির পিয়ন। সিংহ প্রতিদিন দুপুরে লাঞ্চ করে তার এয়ার কন্ডিশন্ড ঘরে চেয়ারে হেলান দিয়ে একটা দিবানিদ্রা দেয় এবং তখন কেউ তাকে বিরক্ত করে না।
একদিন সিংহ তার দৈনন্দিন দিবানিদ্রা দিচ্ছে, তখন হঠাৎ করে একটা জরুরি ফাইলের দরকার পড়ল। নেংটি ইঁদুর পা টিপে টিপে সিংহের টেবিল থেকে ফাইলটি নিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ হাতে লেগে পানির গ্লাসটা নিচে পড়ে গিয়ে ঝন ঝন শব্দ করে ভেঙে গেল। সিংহ সেই শব্দে চমকে জেগে উঠল।
ইঁদুরকে দেখে খপ করে ধরে ফেলে হুঙ্কার দিয়ে বলল, তোকে কতবার বলেছি ঘুমোনোর সময় শব্দ করবি না?
ইঁদুর কাঁচুমাচু হয়ে বলল, ভুল হয়ে গেছে স্যার।
ভুল? সিংহ গর্জন করে বলল, আজ তোর একদিন কি আমার একদিন। তোর চাকরি যদি আমি এখন না খাই-তোকে আমি আস্ত গিলে খাব!
ইঁদুর হাত জোড় করে বলল, মাপ করে দেন স্যার। আর এই ভুল হবে না। ছেলেমেয়ের সংসার, না খেতে পেয়ে মারা যাব।
তুই মারা গেলে আমার কী? সিংহ চোখ লাল করে বলল, তোর মতো বেজন্মা অপদার্থ একটা নেংটি ইঁদুরের তো মরাই উচিত।
নেংটি ইঁদুর কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল, ও রকম করে বলবেন না স্যার, কিছু বলা যায় না, এ রকম তো হতেও পারে যে একদিন আপনাকে আমি বিপদ থেকে রক্ষা করব।
তুই বিপদ থেকে রক্ষা করবি আমাকে? সিংহ হঠাৎ হা হা করে হেসে উঠে বলল, তোর কথা শুনে আমি হেসে মরে যাই।
হাসতে হাসতে সিংহ বিষম খেয়ে যায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী মনে করে সে নেংটি ইঁদুরকে ছেড়ে দিল।
বছরখানেক পর এন্টিকরাপশন অফিসারেরা জাল পেতেছে দুর্নীতিপরায়ণ অফিসারদের ধরার জন্য।
আর সেই সঙ্গে ধরা পড়ল সিংহ। কঠিন জাল, আটকা পড়ে প্রাণপণে চিৎকার করছে সিংহ। সেই চিৎকার শুনে তার পিয়ন নেংটি ইঁদুর ছুটে এল। জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে, স্যার?
দেখছিস না, এন্টিকরাপশনের জালে আটকা পড়েছি!
নেংটি ইঁদুর জালটা ভালো করে পরীক্ষা করে বলল, শক্ত জালে আটকা পড়েছেন স্যার। এই যে ফাঁসটা আপনার ঘুষ খাওয়ার ফাঁস।
এইটা আপনার বিদেশি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের ফাঁস। এইটা অফিসের জিনিসপত্র নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের ফাঁস। এইটা স্ত্রীর নামে বেআইনিভাবে সম্পত্তি কেনার ফাঁস। এইটা তহবিল তছরুপের ফাঁস। এইটা···
কথা বন্ধ কর নেংটি ইঁদুর।
পারলে আমাকে বাঁচা।
নেংটি ইঁদুর বলল, কঠিন সমস্যা, তবে দেখি চেষ্টা করে।
তখন সে তার ধারালো দাঁত দিয়ে কুট কুট করে ফাঁস কাটতে শুরু করল। একটা একটা করে সবগুলো ফাঁস কেটে দেওয়ার পর সিংহ শেষ পর্যন্ত ছাড়া পেল। ইঁদুর দাঁত বের করে হেসে বলল, বলেছিলাম না স্যার, ছোট বলে অবহেলা করতে হয় না! এত বড় বিপদ থেকে আপনাকে উদ্ধার করে দিলাম কিনা?
সিংহ মাথা নাড়ল, বলল, তা ঠিক।
আয় কাছে আয়।
নেংটি ইঁদুর কাছে এগিয়ে গেল, ভাবল, সিংহ নিশ্চয়ই এখন মোটা হাতে বকশিশ দেবে। কিন্তু ইঁদুর কাছে যেতেই সিংহ তাকে খপ করে মুঠোর মাঝে ধরে ফেলে বলল, তোকে আর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না, তুই আমার সব কথা জেনে গেছিস। তোকে ছেড়ে দিলে সব জানাজানি হয়ে যাবে!
এই বলে সিংহ কপ করে ইঁদুরকে গিলে ফেলল।
দুর্বচনঃ ভেবেচিন্তে মানুষের উপকার করতে হয়।
[আধুনিক ঈশপের গল্প থেকে সংগৃহীত]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।