বুকের ভেতর বহুদূরের পথ.........
মতিন গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ এর কর্ণধার মতিন সাহেব বেড়াতে গিয়েছেন ক্যারিবিয়ান। কী একটা বিজনেস মিটিং আছে সেখানে, সাথে কিছু মৌজ মাস্তি করারও প্ল্যান আছে। এদিকে বাসা-বাড়ি দেখাশুনার ভার কেয়ারটেকার সুলেমানের উপর। প্রায় দু'দিন ধরে চেষ্টার পর মতিন সাহেবকে মোবাইলে পাওয়া গেল।
- স্যার একটা সমস্যা হইছে।
- কী সমস্যা খুইলা ক।
- না মানে, আমাগো তোতাপাখীডা মইরা গেছে।
- মইরা গেছে মানে? কী কইতাছস তুই এই সব? আমার পুরষ্কার পাওয়া তোতা, যে কিনা তড়তড় কইরা কথা কইতো- হ্যায় মইরা গেছে? আইচ্ছা যাউগ্গা, ক্যামনে মরলো হেইডা ক?
- মরা গোশত খাইয়া মরছে স্যার।
- অ্যাঁ! মরা গোশত খাইয়া মানে? মরা গোশত খাইবো ক্যান? তোতার খাওনের লাইগা কত কিছু আছে বাড়িতে। আইজকা তরা এইগুলা কী শুনাইতছস আমারে? হাছা কইরা ক, তরা তোতারে মরা গোশত খাওয়াইছস?
- কী যে কন স্যার, আমরা কিল্লেইগা খাওয়ামু।
তোতায় নিজেই মরা গোশত খাইছে। মরা ঘোড়ার গোশত।
- আরে এইহানে মরা ঘোড়ার কথা আহে কেমনে? মরা ঘোড়া পাইলি কই?
- ক্যান স্যার আমাগো 'পঙ্খীরাজ'? ওর গোশতই তো খাইছে।
- হায় হায়, কী কছ এগুলা!! আমার 'পঙ্খীরাজ' মইরা গেছে? কত কুটি টাকা দিয়া রেসের লেইগা কিনছিলাম। আর হেই ঘোড়া মইরা গেলগা? ঐ, ঐ, ফকিন্নির পোলা, ঠিক ঠাক মত ক 'পঙ্খীরাজ'রে মারলো কুন হালায়?
- কেউ মারে নাই স্যার, নিজেই মরছে।
সারাদিন পানির বড় বড় ড্রাম টাইনা ঘোড়ার জানে কিছু আছিলোনা স্যার।
- মানে? কী কইতাছস! তর মাথার ঠিক আছে? আমার রেসের ঘোড়ারে দিয়া তরা পানি টানাইছস!! খাড়া, আইয়া লই দেশে....
- এত চেইতেননা স্যার। ঘরে আগুন লাগলে কি করুম কন? হাতের কাছে যা পাওয়া গেছে সবই কাজে লাগাইতে হইছে।
- ঐ হারামজাদা, তরা তো দেহি আমারে পাগল বানাইয়া ছাড়বি। ঘরে আগুন লাগছে মানে? আমার ঘরে আগুন লাগছে?
- তাইলে আর কইতাছি কি।
সব পুইড়া ছাই হইয়া গ্যাছে গা।
- হায় হায়! ঘর পুইড়া ছাই হইয়া গেছে গা? ক্যামনে লাগলো আগুন?? নিশ্চয়ই তরাই ষড়যন্ত্র কইরা লাগাইছস।
- কী যে কন স্যার, আপনের নুন খাইয়া এত বড় বেঈমানী করুম? ঐ তো, মোমবাতির আগুন পইড়া গেল জানলার পর্দার উপরে। তারপর এই পর্দা থেইকা সেই পর্দা, পুরা ঘরে আগুন ছড়াইয়া গেল।
- মোমবাত্তি! ঘরে মোমবাত্তি আইবো কই থেইকা? ইলেকট্রিসিটি গেলে আইপিএস আছে, জেনারেটর আছে।
মোমবাতি জ্বালাইতে গেছে কোন শুয়োরের বাচ্চা?
- মোমবাতি কি আর এমনে এমনে জ্বালাইছে স্যার। ঘরে শোকসভা চলতাছিলো। এহন তো এই নতুন ফ্যাশন চালু হইছে। মোমবাতি জ্বালাইয়া মড়ারে স্মরণ করে।
- শোকসভা মানে? কীসের শোকসভা?? আমি তো অর্ধেক পাগল হইয়াই গেছি এহন তরা আমারে পুরা পাগল বানাবি।
কীসের শোকসভা, কার শোকসভা খুইলা ক আমারে।
- না মানে আমাগো মেমসাবের।
- কী কইতাছস তরা এইসব!!! আমার বউ মইরা গেছে?
- হ, এইতো গতকাল রাইতের ঘটনা।
- কেমনে মরলো ভালা মতে ক।
- হইছে কি, মেমসাব বিকালে কখন জানি ঘর থেইকা বাইর হইছে, আমরা কিচ্ছু জানিনা।
গভীর রাইতে চুপে চুপে ঘরে হান্দাইবার লাগছিলো। আমি তো চিনি নাই, মনে করলাম কে না কে। আপনের একটা কিরিকেট ব্যাট আছেনা, ঐ যে টেন্ডুলকার, ওয়া, লারা এগো সাইন করা- ঐডা দিয়া দিছি ঠাইসা এক বাড়ি। এক বাড়িতেই মেমসাব.........
|
|
নীরবতা.......................
|
|
............আরো নীরবতা................
|
|
..............................হিমশীতল নীরবতা............
সুলেমাইন্না!!!! আমার টেন্ডুলকারের সাইন অলা কিরিকেট ব্যাটের যদি কিছু হইছে, তরে কিন্তু খাইছি। (ব্লগারদের মতামতের প্রেক্ষিতে এই অংশটুকু এডিট করা হৈলো)
পুরা জিনিসটা যদি মোশারফ করিম (মতিন সাহেব) আর ফজলুর রহমান বাবুরে (সুলেমান) দিয়া অভিনয় করানো যাইতো, চিন্তা করেন তো কেমন হইতো...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।