আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিপাইমুখঃ ভারতের হাইড্রোপলিটিক্সের রেসের ঘোড়া.... নিজের ল্যাজে পা পড়ার পর ভারতও এখন প্রতিবাদী!!!

যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি

১৯৭৬ সাল। পশ্চিম বঙ্গ, বিহার আর অন্ধ্রপ্রদেশের নকশাল আন্দোলনের সহযোগী গণনাট্যের অজিতেশ বন্দোপাধ্যায় এ সময় একটি নাটক লিখলেন ফারাক্কা নিয়ে। স্টেজ শো করতে না পেরে নাটকটি রেডিওতে প্রচারের ব্যবস্থা করলেন। বার দুয়েক প্রচারের পর পরই সেখানেও নিষিদ্ধ হলো। নাটকটিতে বলা হয়েছিল: ফারাক্কা বাঁধের কারণে সেখানকার অধিবাসীদের ভিটেমাটিহীন হবার কথা।

আরো বলা হয়েছিল এই বাঁধের কারণে আগামীতে ভাটি অঞ্চলের মানুষদের দুর্দশার কথা। চুয়াত্তরে ঋত্তিকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এ যেমন শুকনো নদীতে নখর দিয়ে এক আজলা পানির জন্য মানুষকে কাতরাতে দেখা গেছিল, তেমনি ফারাক্কা নিয়ে লেখা নাটকটিতেও মানুষের পানির জন্য পাতালে নেমে যাওয়ার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছিল। এর ঠিক এক দশক পরেই সেই নাটকীয় দৃশ্যের বিবরণ দেখছে ওই অঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষ! ফারাক্কা এখন দগদগে বাস্তব! আজ ‘গণনাট্যদল’ নেই! নেই টিপাইমুখ বাঁধ হলে সেখানকার অসহায় মানুষদের নিয়ে প্রতিবাদ করার কেউ। যে মনিপুরের মানুষ বছরের পর বছর প্রতিবাদ করছিল, কেন্দ্রের থাবায় সেই প্রতিবাদ ছত্রভঙ্গ তো হয়েছেই, সেখানে রাজ্য শাসিত সরকার বদলে কেন্দ্রের শাসন জারি হয়েছে। অকুপাইড টেরিটোরির মত ভারতীয় সেনারা গোটা মনিপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

অত্যাচারিত হওয়ার চরমক্ষণে বাধ্য হয়ে মনিপুরের নারীরা সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় নেমেছিল! তাদের বিরোধিতার কারণ ছিল যে বাঁধ নির্মিত হলে মনিপুর রাজ্যের ৩১১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা স্থায়ীভাবে জলমগ্ন হয়ে যাবে। যার মধ্যে আছে ২২৯.১১ বর্গ কি.মি. সংরক্ষিত বনভূমি আর আবাদী কৃষি জমি ও আবাসন এলাকা। এতে জেলিয়াংগ্রং ও হামার আদিবাসীর ৪০/৫০ হাজার লোক উচ্ছেদ হয়ে যাবেন। আমাদের কাপ্তাই বাঁধে যেমন অবস্থা হয়েছিল পার্বত্য আদিবাসীদের। তাছাড়া এই বিশাল বাঁধটি যে অঞ্চলে তৈরি হতে যাচ্ছে তা একটা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা।

১৯১৮ সালের ৭ মাত্রার রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প সহ ১০০ বছরের ভূকম্পন প্রবণতা থেকে এ ঝুঁকি উপেক্ষা করতে পারে কেন্দ্র, কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা ? পানি কি ভাবে জীবন? বাংলাদেশের চার-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড তৈরি হয়েছে গঙ্গা(পদ্মা), ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা(বরাক) নদী ব্যবস্থায়। এই গঙ্গা-বহ্মপুত্র-মেঘনা নদী ব্যবস্থা ৫টি দেশ যথা ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও বাংলাদেশব্যাপি রয়েছে। এই অববাহিকায় পৃথিবীর প্রায় ১০ ভাগ মানুষ বাস করে, এই পানি সম্পদ আমাদের খাওয়া, গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সেচ-এর কাজে লাগানো, সমুদ্রের লোনাপানি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর রক্ষা করে কৃষি-বন ও আর্সেনিকের মতো বিষক্রিয়া রোধ, নৌ চলাচল, প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ও মাছের চাষ করা, পানির দূষিতকরণ রোধ করা, শিল্প-কারখানার জন্য পানি সরবরাহ, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশুর খামারের জন্য পানি, বনাঞ্চল ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ নানা প্রয়োজন পূরণ করে। এইভাবে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা বেসিনের জলপ্রবাহের সাথে আমাদের জীবনপ্রবাহ সম্পর্কিত হয়ে আছে। পানি ছাড়া প্রাণ ও প্রকৃতির সহজিয়া বিকাশ রুদ্ধ হতে বাধ্য।

মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি লোকালয় হোক বা নগরায়ন হোক সবই নদী কেন্দ্রেীক। জীবন, অর্থাৎ পানির আধার যে নদী, যা মানুষ সৃষ্টি করেনি, মানুষ কেবল জন্মসূত্রে ভোগদখল করার অধিকার পেয়েছে, সেই দখলিস্বত্ব এখন টেকনোলজি আর জীবন- বিলাসের প্রয়োজনে মানুষের ক্ষমতাবান অংশ কুক্ষিগত করতে চাইছে, করছেও। ফারাক্কা আর টিপাইমুখ, কে বেশি ধ্বংসাত্মক? ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে হুগলি-ভাগীরথী নদীতে পানি টেনে কোলকাতা বন্দরকে নব্য রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। তারও আগে গঙ্গাকে উত্তর প্রদেশ, বিহার ইত্যাদি স্থানে অসংখ্য বাঁধ ও সংযোগ খাল করে সেচের জন্য পানি সরিয়ে নেয়ায় পশ্চিমবঙ্গে ভাগিরথী-হুগলী নদীর পানি প্রবাহ কমে আসে। কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বাড়ানো ও সেচের জল যোগান দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সীমানার ১১ মাইল উজানে মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা নামক স্থানে ফারাক্কা বাঁধ দেয়া হয়।

১৯৫১ সালে ভারত এ পরিকল্পনা করে এবং ১৯৬১ সালে বাঁধের কাজ শুরু হয় এবং ১৯৭৪ সালে তা শেষ হয়। পরীক্ষামূলকভাবে বাঁধ চালুর কথা বলে তারা স্থায়ীভাবে চালু করে দেয়। যার ফলে বাংলাদেশের ৩৭ ভাগ অঞ্চল ও ৩ কোটি মানুষ চরম ক্ষতির শিকার হয়েছে। স্থায়ী মরুকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ। টিপাইমুখে বাঁধ দরকার কেন? দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে আর্থিক-সামরিক সাম্রাজ্য ও আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

তারই অংশ হিসাবে এবং ভারতীয় একচেটিয়া পুঁজির মুনাফা বাণিজ্য স¤প্রসারণের জন্য পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পানি, তেল, কয়লা,গ্যাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, ইস্পাতসহ ভারী শিল্প স্থাপন, বাণিজ্যিক ও পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকা স্থাপন, সামরিক স্থাপনা নির্মাণ ইত্যাদি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও প্রকল্প নিয়ে ভারত এগুচ্ছে। এই বাঁধে সরাসরি সাধারণ জনগণের স্বার্থ না থাকায় টিপাইবাঁধ বিরোধী একটা বড় আন্দোলন মনিপুর-মিজোরাম জুড়ে চলমান রয়েছে। এখন ভারতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। চীনের উত্থান ও চীন-রাশিয়ার মিলিত নব সুপার পাওয়ারকে চতুর্দিক থেকে (মধ্য এশিয়া, পূর্ব-ইউরোপ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান) বেষ্টনি দিয়ে হুমকি এবং ভারসাম্যের মধ্যে রাখার মার্কিনী রণকৌশলের সাথে ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তার কৌশলের কাকতালীয় মিলকেও আমলে আনতে হবে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহকে কেন্দ্র করে এই মহাপরিকল্পনার একটা অংশ হচ্ছে টিপাইমুখে বরাক নদীতে বাঁধ।

অথচ বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা! টিপাইমুখ ছাড়াও বাঁধ আরো আছে। ভারত,পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটান আগামী ২০ বছর টিপাইমুখের মত আরো ৪৪৯ টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে ১.৫ লক্ষ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে! এবং এই বিশাল প্রকল্পের গন্ধ পেয়েই ছুটে এসেছে বিশ্বব্যাংক আর তাদের বরকন্দাজ অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলে গ্রীণহাউস ইফেক্ট কোন মাত্রায় বাড়বে সেটা ভাবনারও বাইরে! প্রকৃতির ওপর মানুষের মাস্তানি বন্ধ করার কাজটা করতে হয় সেই মানুষকেই। প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক কী - এটা ধর্ম, দর্শন ও ভাবের দিক এবং সর্বপরি আমাদের রাজনৈতিক সত্ত্বার দিক থেকে বুঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটাই হবে আমাদের সকলের আগামী দিনের নতুন চিন্তা, ভাবদর্শনের উৎস; যে কোন কথা, দাবি তোলার আগে তার প্রাণের দিক, প্রয়োগের দিক, বিবেচনার দিক নির্ণয় করা জরুরী।

এখানে অনেককে দেখা যাচ্ছে "বাঁধ দিলে" আমাদের পানির প্রাপ্যতা ও এর টেকনিক্যালিটি নিয়ে বিস্তর ঘাটাঘাটি করে দ্বিগগজ পন্ডিত সাজার চেষ্টা করছে, ক্যলকুলেটর নিয়ে বসে গেছে। ১৯৯৬ সালের পানিচুক্তিতে বিস্তর এসব গবেষণা উপাত্ত বসিয়ে নিশ্চিত করে, আমরা শান্তনা পেতে চেয়েছিলাম যে এইবার পানি ঠিকঠাক পরিমাণ মত আসবে। কিন্তু ফলাফল শূণ্য! বাস্তবে পানি চুক্তির পরিমাণ মত আসে নি। ভারত নতুন যুক্তি হাজির করেছে এটা "প্রকৃতির দোষ"। আমাদের পানি মন্ত্রীও ভারতের মুখপাত্র হয়ে একই কথা বলছে।

জনগণ অত গভীরে যেতে পারে না। তারা এই ব্যুরোক্র্যাটিক এলম বিষয়েও জানে না, শুধু এতটুকুই জানে সে পানি পাচ্ছে কি-না? সবধরণের বাঁধ, ব্যরেজ, পানি সরিয়ে নেবার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া ছাড়া আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারব না। প্রকৃতি আর বাংলাদেশ প্রত্যক্ষভাবে একাকার। এর একটি বাদ দিয়ে অপরটি অর্থহীন। আনন্দবাজারের আত্মপোলব্ধিঃ নিজের ল্যাজে পা না পড়া পর্যন্ত গোখরো খেয়াল করে না যে তার ছোবলে কি পরিমানে বিষ! ভারত যখন টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে ‘কিসিকো কেয়ার নেহি করেঙ্গে’ নীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন চীন টিপাইমুখের চেয়েও বিশাল প্রকল্প হাতে নিয়ে বসে আছে! যা বাস্তবায়ন হলে আমাদের প্রধান নদী যমুনাও শুকিয়ে যাবে! যমুনা মানে ব্রহ্মপুত্র ।

যা ভারতের পূর্বাঞ্চলের শ্বাসনালি। আর এটা দেখেই আনন্দবাজারের মাতম শুরু হয়ে গেছে! তারা ১০ জুন, ২০০৯ তাদের সম্পাদকীয়তে লিখছে.......... আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় এখানে “নদীর উৎসে বাঁধ দিচ্ছে চিন শুকিয়ে যেতে পারে ব্রহ্মপুত্র বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করছে বেজিং। তাতে ভারতের সর্বনাশ। জীববৈচিত্রও বিপন্ন। নয়াদিল্লি, এখনও পর্যন্ত, নির্বিকার।

সব ঠিকঠাক থাকলে এই বছরেই ব্রহ্মপুত্র নদের মৃত্যুঘন্টা বাজাতে শুরু করবে চিন! চিন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রায় ২৯০০ কিমি এই জলরাশির মৃত্যু-পরোয়ানা সই হয়ে গিয়েছিল বছর তিনেক আগেই। এবার অরুণাচল সীমান্তের অদূরে, চিনের পার্বত্য অঞ্চলে ‘ইয়ারলুং সাংপো’ নদীতে বাঁধ এবং অজস্র ক্যানাল তৈরি করে, টারবাইনে বহতা নদীস্রোতকে ছিন্নভিন্ন করে ৪০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা প্রায় পাকা। এত বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দুনিয়ায় এই প্রথম! বিদ্যুৎ উৎপাদনে আপত্তি নেই। কিন্তু কৈলাস পর্বতের ‘জিমা ইয়াংজং’ হিমবাহ থেকে বেরিয়ে আসা সাংপো নদীর ওই স্রোতোধারাই তো এ দেশের অরুণাচল প্রদেশে ডিহং, খানিক বাদে অসমে পৌঁছে ব্রহ্মপুত্র। একটু পরে বাংলাদেশে ঢুকে নাম বদলে যমুনা! তিন দেশের মধ্যে দিয়ে ছুটে-যাওয়া আন্তর্জাতিক এক নদীর উৎসে বাঁধ দিয়ে তার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে চায় চিন! ভারতের বিপদ চিনা আশ্বাস, সাংপো প্রকল্পের ফলে ব্রহ্মপুত্র নদে আর বন্যা আর হবে না।

প্রকল্পের জলবিদ্যুৎ ভারত এবং বাংলাদেশকেও বিক্রি করা হবে। প্রথম আশ্বাসটিকে নদীবিজ্ঞানীরা উড়িয়ে দিচ্ছেন। বাঁধ তৈরি করে নদীতে জলপ্রবাহের গতি যদি কমিয়ে দেওয়া হয়, নীচের দিকে আরও বেশি পলি জমবে। তাতে প্রবাহ রুদ্ধ হয়ে বন্যা বাড়বে। হিমালয়ের ধ্বসপ্রবণ এলাকায় যে ভাবে টানেল তৈরি করা হচ্ছে, ভারতের পক্ষে সমূহ বিপজ্জনক! এশিয়ার বেশির ভাগ বড় নদীর উৎসই তিব্বতের হিমবাহ অঞ্চলে।

সেই সব নদীকে বেঁধে ফেলার পরিকল্পনা তৈরি। জল-রাজনীতি বেয়েই দক্ষিণ এশিয়ায় নিজের ষ্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব বাড়াতে চায় চিন। আর ভারত? রুদ্ধ প্রবাহের দিকে মনোযোগ নেই, চিনের সঙ্গে নদী নিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও নেই। শুধু বেজিং পাকিস্তানকে ক’টা জঙ্গি বিমান দিল, সে দিকে নজর। অবশ্য, প্রতিবাদ ভারতেরও শোভা পায় না।

আন্তর্জাতিক নদীতে বাঁধ তৈরির জল-রাজনীতিতে সে-ও সিদ্ধহস্ত। কখনও ফরাক্কায় বাঁধ দিয়ে পদ্মায় জলপ্রবাহ রুদ্ধ করে সে, আবার কখনও ঝিলমে ‘বাগলিহার’ আর শতদ্রুতে ‘ভাকরা নাঙ্গাল’ তৈরি করে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশকে মরুভূমি বানিয়ে দেয়! বড় বাঁধের রাজনীতিই এখন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি!” এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে আনন্দবাজার পত্রিকা “ভারতের বিপদ” আখ্যা দিয়ে যে কথাগুলি বলছে, ঠিক সেই একই বিপদ টিপাইমুখ বাঁধের কারণে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঘটবে! বাংলাদেশের যে বিপদ ইতোমধ্যে ঘটেছে সেটাও তারা অস্বীকার করতে পারছে না! অথচ আমাদের মতলববাজ রাজনীতিক, ততধিক ধান্ধাবাজ মিডলক্লাস পেইডআপ প্যারাসাইট দালাল, নিজেকে সমাজের কোথাও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে হাজির করতে ব্যর্থ পেছনের সারির ছিঁচকে চোর টাইপের উজবুকরা তাদের দালালীর ক্যালকুলেটর টিপে টিপাইমুখ বাঁধের ‘উবগারিত্ব’ উগরে চলেছেন! ওয়াইড মিডিয়ার সেই সব তালেবরদের কিছু অনাহুত ছাও-পোনা যুগে যুগে উচ্ছ্বিষ্ট লাভের আশায় ফেউ হয়ে ঘুরতেই থাকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।