আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লেখা আসতেছে,নাম আসতেছে না… কি করুম….

প্রকাশিত লেখার সর্বস্বত্ব লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতিরেকে লেখার আংশিক বা পূর্ণ অংশ কোন ধরনের মিডিয়ায় পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না।

'এই যাবে?'ঢাকা শহরের কোন রিকশাওয়ালাই এর উত্তরে বলবে না যামু'। এই ব্যাটাও তার ব্যাতিক্রম না। যতটা পারে বিরক্ত ভাব ফুটায় রেখেছে মুখে।

ভাবটা এমন সে হাওয়া খেতে বের হয়েছে। উটকো লোক এসে বিড়ি ধরানোর দেয়াশলাই চাচ্ছে। মতিন সাহেবের ইচ্ছে করছে থাপরে ব্যাটার লুঙি নষ্ট করে দিতে। দেয়া যাচ্ছে না। হাতে বাজার না থাকলে দেয়া যেত।

এই নিয়ে আট নম্বর রিকশাওয়ালার সাথে তিনি ভাব জমানোর চেষ্টা করছেন। ভাব জমছে না। কেউ কলাবাগান যেতে রাজি হচ্ছে না। 'কই যাইবেন? আপনে একা?' ''কলাবাগান,মাঠের উলটা দিকে'। ' যতটা আন্তরিক ভাব দেখানো যায় মতিন সাহেব ফুটায় তুললেন।

'হারামজাদা আমি একা না দোকা সেইটা দিয়া তোর কি কাম' ভাবটা যতটা সম্ভব ভেতরে ঢুকায় নিলেন। চট করে"তোমার কষ্ট হলে মাঠের সামনে নামিয়ে দিলেও হবে" চেহারায় ভাবটা ফুটায় তুললেন। কাজ হলো। ব্যাটা রাজি হয়ে গেল। ঢাকা শহরে তিন টাইপের রিকশাওয়ালা আছে।

টাইপ এক, এরা ঢাকা শহরের ভাব বুঝে গেছে, কেমনে টাকা কামাইতে হয় এরা জানে। প্রেমিক-প্রেমিকা, আপুমনি ছাড়া এরা পারতপক্ষে কাউকে উঠায় না। টাইপ দুই, এদের পরিবার আছে, এরা সাত-আটটা পোলাপাইন চাবকে কুল পায় না। সকাল সকাল বউকে তালাক দিয়ে বের হয়, সন্ধ্যা সন্ধ্যা ফিরে আসে। বউও কিছুই হয় নাই এমন ভাব করে তারে খাবার তুলে দেয়।

এই টাইপও ঢাকা শহর চেনে। কিন্তু এদের উদাস হওয়ার দিন শেষ। টাইপ তিন মাই ডিয়ার টাইপ। এরা কেবল আসছে। এখনো অলি-গলি চিনে উঠতে পারে নাই।

বনানী রেলগেট পাঁচ টাকা বললেও রাজি হয়ে যাবে। এরাই রিকশাওয়ালাদের মধ্যে সবচেয়ে উদাস টাইপ। এখনো ঠিক করে নাই দেশে ফিরে যাবে না থাকবে। থেকে গেলে এরা টাইপ এক বা দুইতে ঢুকে যাবে। এই ব্যাটাকে তৃতীয় শ্রেণীর মনে হচ্ছে।

বাজার নিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর রিকশায় উঠা ঠিক হয় নাই। এরা উলটে দিতে পারে। আজকে বাসায় গিয়ে মিতুর মাকে টাইট দিতে হবে। টাইট ছাড়া মেয়েছেলে চালানো ঠিক না। গুনে গুনে সাত প্যাঁচ।

শুক্রবারে সাতসকালে বাজারে পাঠানো রুটিন হয়ে গেছে। এই রুটিন ভাংতে হবে। মিতুর মাকে দিয়ে হাসানকেও টাইট দিতে হবে। সম্পর্কে শালা, নিজে টাইট দেয়া ঠিক হবে না। এইসব সম্পর্ক হ্যান্ডল করতে হয় চেইন রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে।

হারামজাদা দিন দিন রাত করে ফিরছে। আরে ব্যাটা না ফিরলেই পারিস। তোকে ফিরতে বলছে কে? কোন কাজ নাই,কাজের বালাই নাই। ব্যাটা বাজারটা করে দিলেও তো পারিস। মেজাজ খিঁচড়ে যাচ্ছে।

ঠিক করা দরকার। একটা সিগারেটও ধরানো দরকার। নাস্তা করে বের হওয়া হয় নাই। পেট গুরগুর করছে। এই বয়সে পেট খালি রাখা ঠিক না।

‘স্যার, মাথা ঘুরায়। আর যামু না। ’ চলবে……

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.