জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখতে চাই। গতানুগতিকতার গন্ডি থেকে মুক্তি চাই। এতে হয়তো শুনতে হবে অনেক অপমানের বাণী। ভয় করি না।
আমার আগের লেখাটা যারা পড়েছেন তাহাদের জন্যে আমার এ লেখাটা পড়তে সুবিধা হবে।
এম,বি,বি,এস ফার্স্ট প্রফ পরীক্ষা দিলাম এই তো কয়েকদিন আগে। মেডিকেল কলেজে প্রত্যেক স্টুডেন্টকেই ৩ টা প্রফ পরীক্ষা দিতে হয়। এবং প্রফ পরীক্ষার সময় সবারই মাথা খারাপের মত অবস্থা হইয়া যায়। পুরো ২ বছরের সিলেবাস এক সাথে দেয়া আসলেই অনেক টাফ। তো আমার প্রফ শুরু হইল যথা সময়ে।
আগের বার ছিল পাশাপাশি ২ তরুণী এবার হইল সামনে-পিছনে ২ তরুণী। যাই হোক এদের কে আমি আগে থেকেই চিনি। কারণ পুরো ২ বৎসর ওদের সাথে পড়েছি। আগেও এদের সাথে পরীক্ষা দিয়াছি। এদের অবশ্য ওত খারাপ মনে হয় নাই কখনও......।
যদিও তারা আমাকে কখনও খুব হেল্প না করিলেও এট লিস্ট ডিস্টার্ব করিতো না। আচ্ছা আমি তো ওদের নাম বলি নাই এখনও......আসল নামটা না হয় নাই দিলাম । হয়তো তারা আমার এ লেখা খানি পড়িতেও পারে। রবিঠাকুরের মত সামনের জনের নাম দিলাম শিশির আর পিছনের জনের নাম কুয়াশা। শিশির খুব লাজুক স্বভাবের মেয়ে ।
খুবই আত্মসম্মান তাহার। এ পর্যন্ত আমাকে কোনদিন পরীক্ষার সময় জিজ্ঞাসা করেনাই কিছু। আর কুয়াশা একটু চালবাজ টাইপের।
যাই হোক প্রথম পরীক্ষার দিন শিশির আর কুয়াশা কেউ কিছু আমাকে জিজ্ঞাসা করে নাই। বেশ স্বস্তিতেই ছিলাম.........।
২য় পরীক্ষা শুরুর সময় দেখি শিশির আমাকে বলিতেছে তুমি আমাকে একটু দেখাইও যদি কিছু না পারি। আমি বললাম ঠিক আছে। পরীক্ষা শুরুর পর শিশির আমাকে জিজ্ঞাসা করিল ৭ নং প্রশ্নের উত্তর কি?আমি বিলম্ব না করিয়া তাহাকে কইলাম। একটু পরে আমি তাহাকে এবার একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলাম। দেখি সে আমাকে কিছুই কইতেছেনা।
এমনকি এমন ভাব করিতেছে যে আমার কথা শুনতেছেই না। আমারও মেজাজ খারাপ হইতে লাগিল। একটু পরে আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করিল.........। আমি এবার তাহার কথা অগ্রাহ্য করিলাম। দেখি সে আমারে কইতেছে ইমির প্লিজ...আমি আবারও তাহার কথা অগ্রাহ্য করিলাম...।
দেখতে দেখতে পরীক্ষার সময় প্রায় শেষ ...। আমারে শিশির কইতেছে ইমির তোমার পায়ে পড়ি আমাকে একটু দেখাও না প্লিজ...। আমি কইলাম পায়ে কেন ?"বক্ষে পরিলেও তোমারে দেখাইব না। তুমি আমারে তো দেখাইলা না। " বলতেই সে আমারে বল্ল "কি দেখবা বল।
আমি তোমাকে সবই দেখাইব। " আহা ভাগ্যটা আবারও সুপ্রসন্ন হইলনা । সব দেখাইতে চায় কিন্তু আজ যে আমি পরীক্ষার হলে!!
যাই হোক তাড়াতাড়ি আমি দেখিয়া লইলাম প্রশ্নের উত্তরখানি......অতঃপর ভাবিলাম শিশিরের সাথে একটু বেইমানি করি। কারণ শিশিরের মধ্যে একটু খানি পরিবর্তন হয়। যা হবে তাহার জন্যে দিন বদলের সনদ।
তাহার পরেও আমি পারিলাম না শিশের বদন খানির দিকে চাহিয়া। আমি উদার হস্তে তাহাকে সবই দেখিতে আমন্ত্রণ জানাইলাম...। শিশিরও যথারীতি দেখিতে লাগিল। এমন সময় আমাদের ডিউটিরত এক এক্সটারনাল আসিয়া ছোঁ মারিয়া শিশিরের খাতা খানি লইয়া গেল। আর আমারে একটা ঝারি লাগাইল ঐ ব্যাটা।
আমি মনে মনে কইলাম "ওহে এক্সটার্নাল কি করিলা তুমি??কেন তুমি হইলে এত নিঠুর? তুমি কি দেখিতে পারো না বক্ষের ভিতর সেই উত্তাল ঢেউ?"
পরীক্ষা শেষ হইবার পর দেখি শিশির কাঁদিতেছে। বুঝিতে পারিতেছিলাম না আমার কি তাহার চোখের জল মুছিয়া দেয়ে উচিৎ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।