আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনপুরার পাইরেটেড ভিসিডি আছে?

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

মনপুরা ব্যবসা সফল ছবি। অনেক দিন পরে বাংলাদেশের সিনেমা হলে সব শ্রেণীর দর্শক গিয়েছে এই বাংলাদেশের প্রেমের ছবি দেখতে। গিয়াস উদ্দীন সেলিমের পরিচালনা ছবির গল্প, মিলি, চঞ্চলের অভিনয়, এবং অর্ণবের সুরারোপ করা গান, সব মিলিয়ে ছবিটির দর্শক চাহিদা প্রবল। দর্শক চাহিদা প্রবল বলেই একটা সম্ভবনা ছিলো এই ছবিটা পাইরেসির শিকার হবে, এবং অবশেষে এই আশংকা সত্য হয়েছে, গতকাল সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন ক্যাবল অপরেটর এই ছবির পাইরেটেড ভিসিডি দেখানো শুরু করে ডিশের লাইনে। গিয়াসউদ্দিন সেলিম এবং এ ছবির সংশ্লিষ্ট অন্য সবাই ব্যক্তিগত ভাবে সকল ক্যাবল অপরেটরকে অনুরোধ করে সাময়িক ভাবে এই ছবির পাইরেটেড ভিসিডি প্রদর্শন বন্ধ করতে সফল হলেও এর শেকড়ে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন, বাংলাদেশের বাস্তবতাই এমন- এই দেশ সফটওয়্যার পাইরেসিতে বিশ্বে ২য় স্থান অধিকার করেছে, প্রথম স্থান ভারত কিংবা চীনের, তবে বাংলাদেশের ৯২% সফটওয়্যার পাইরেটেড।

এখানে পাইরেসী আইন তেমন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হয় না, এমন কি সরকার কিংবা প্রশাসনের কোন অংশ আদতে পাইরেসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এটাও নির্ধারণ করা নেই। এই সার্বিক সংযোগহীনতা কিংবা সমন্বয়হীনতা বাংলাদেশে পাইরেসীকে উৎসাহিত করছে। এটাকে বাস্তব ধরে নিয়ে অন্য নির্মাতারা নিজেদের ছবির ডিভিডি, ভিসিডি কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে নিজেরাই লাভের অঙ্ক ঘরে তুলছে, গিয়াসউদ্দিন সেলিম এ দিক থেকে খুব বেশী ব্যবসায়িক বুদ্ধিসম্পন্ন মনে হয় না। বাংলাদেশের বাস্তবতা মেনে নিয়েই তার মার্কেটিংয়ে নামা উচিত ছিলো। গত ৪ মাস এই ছবির পাইরেটেড ভিসিডি বাজারে আসে নি, তার কারণ সম্ভবত এই ছবি সংশ্লিষ্ট মানুষেরা নিজেরাই প্রতিটা প্রেক্ষাগৃহের খোঁজখবর রেখেছেন নিয়মিত।

বাংলাদেশের ছবির দর্শক বাংলাদেশে প্রচুর, তবে এই বিকল্প ধারার বাণিজ্যিক ছবিগুলোর প্রধান চাহিদা বিদেশে, যদি নিজেরা উদ্যোগী হয়ে এই ছবির কলাকুশলীগণ ছবির ডিভিডি তৈরি করে বিদেশে নির্ধারিত দামে বিক্রয় করতো তবে আরও লাভবান হওয়ার সম্ভবনা ছিলো, এমন কি বিদেশের কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে এ ছবি চালালেও বাড়তি লাভের সম্ভবনা ছিলো। বিদেশে বাঙ্গালীরা অন্তত ৫০ মাইল গাড়ী চালিয়ে ছবি দেখতে আগ্রহী। যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে, সেটা ফেরানো যাবে না। ক্যাবল অপারেটরদের দোষ দেওয়ার কিছু নেই, তারা নিজেরাই ভিসিডি কিনে প্রদর্শন করছে, মূলত প্রশাসনিক জটিলতা কিংবা সমন্বয়হীনতাকে দোষারোপ করা যায় এই বিপর্যয়ের জন্য। এখন পর্যন্ত দোষীদের বিষয়ে কোনো অনুমাণ করা যায় নি, পাইরেটেড ছবির ব্যবসা যারা করে তাদের সংখ্যা হাতে গোনা, এদের যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই হয়তো জানা যাবে, কারা কোথা থেকে এই ছবির প্রিন্ট সংগ্রহ করে ভিসিডিতে রুপান্তরিত করেছে।

শাস্তির পরিমাণ যেমনই হোক, যদি দোষী ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করবার ব্যবস্থা করা যায় আদালত উপযুক্ত কারণ দর্শিয়ে এই ব্যক্তিকে বিশাল অঙ্কের জরিমাণা প্রদান করে একটা উদাহরন সৃষ্টি করলে ভবিষ্যতে পাইরেসীর প্রকোপ কমলেও কমতে পারে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।