আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্রয়লার মার্চেন্ট

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

অনেকদিন যাবত ফার্মের মুরগী মানে ব্রয়লারের কেজি চলতেছে ১২৫টাকা। স্টান্ডার্ড সাইজের একটা মুরগীর ওজন থাকে ১কেজি ২শ গ্রাম থেকে দেড় কেজির মত। ঢাকাইয়া পাবলিক মুড়ির মত মুরগী খায়। একটা মধ্যমমানের মুরগার দোকান যেমন জাকিরের দোকানটার কথাই ধরি, সেইটা থেকে ডেইলী পঞ্চাশটা মুরগা বিক্রি হয়। ১০ পার্সেন্ট বাকী যায়, তবে বেশীরভাগই নগদ।

পঞ্চাশটা মুরগার ওজন হইবে ৬৫ কেজির মত। ৮১২৫ টাকা সেল। প্রতিকেজিতে লাভ হয় ১৫/২০টাকা। তবে জাকিরের মুরগী ব্যবসার টিপস শুইনা বেশী মজা লাগলো। সে সবসময় যে পরিমাণ চলে তার চেয়ে ৫/১০টা কম আনে।

কারণ যদি মুরগী না বেচা হয় তবে এক রাইত সেইগুলানরে রাখলেই ১শ/২শ গ্রাম ওজন কমে যায়। তারউপরে সেই মুরগী আবার রাখাও ঝামেলার, খাওয়াইতে হয় - নইলে দেখা যায় ইন্তেকাল ফর্মাইছে। মুরগী কোনদিন কেমন চলে এই নিয়া জাকিরের বিশাল গবেষণা আছে। যেমন মাসের প্রথম শুক্রবার সে ৬০/৭০টা আনে। তবে শুক্রবার যদি ১ তারিখ পড়ে তাইলে এরপরের শুক্রবার এই কামডা করে।

এছাড়া বিশেষ দিনগুলার দিকে নজর রাখতে হয়। শুক্রবার ছাড়া অন্য সরকারী ছুটির দিনেও বিক্রি বেশী হবে। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবের সময় তো কোন কথাই নাই। যেমন পহেলা বৈশাখ, থার্টি ফাস্ট, ঈদ, শবেবরাত, রমজান, পুজা ইত্যাদি সময়ে কত চলবে সেইটা লইয়াও আলাদা আলাদা হিসাব আছে। জাকিরের কথা অনুযায়ী মুরগী কেনার কামটা এখন সবাই মোবাইলেই সারে।

রাত্র দশটার পরে বিভিন্ন মুরগীর ফার্মে ফোন করে। আবার মুরগীর ফার্মের লোকজনও মাঝেমাঝে তারে ফোন করে। তবে এইটা ঘটে যখন মুরগীর ফার্মওয়ালাদের উৎপাদন বেশী হইয়া গেলে। জাকির যা করে তা হইলো তার চাহিদা জানাইয়া দেয়, রেট ঠিক করে তারপরে ভ্যানওয়ালারে ফোন করে। জানাইয়া দেয় অমুক ফার্ম দিয়া তমুক সংখ্যার মুরগী লইয়া আসো - ব্যাছ...সাত সকালে মুরগী হাজির।

মুরগী প্রক্রিয়াজাতকরণেও জাকিরের রয়েছে বিশেষ যত্ন। মুরগী দুইভাবে ছিইলা দেয়, একটারে কয় ড্রেসিং আরেকটা হইলো চামড়া ছিলা। এর জন্য রইছে বিশেষ মেসিন আর একটা গরম পানির পাত্র। মুরগী জবাই-এর পরে দাপাদাপি শেষ হইলে পানির পাত্রে মুরগীটা চুবানো হয়। তারপরে মেসিনের মধ্যে চালান কইরা দেয়।

এটার মধ্যে কাঁটাযুক্ত কিছু আংটা ঘুরতে থাকে যা মুরগীর পালক, পশম আলাদা কইরা ফেলে। তারপরে সেইটাকে বের করে ম্যনুয়ালী একটু পরিষ্কার কইরা দেয়াটাকে বলে ড্রেসিং। আর ঐটাকে যদি চামড়া ছিইলা, পাখনা, ঠ্যাং আলাদা কইরা দেয় সেইটাকে বলে চামড়া ছিল। জাকির কইলো এই পুরা জিনিসটা সে আধুনিক করতে চাইতেছে। আগোরাতে নাকি কি একটা মেসিন দেখছে যেইখানে এইটা হয় আরো দ্রুত।

সে সেই মেসিনটা হাতে বানাইতে চেষ্টা করতেছে। জাকির মুরগী লইয়া আরো গবেষণা চালাইতেছে। গাহেক আকৃষ্ট করার জন্য সে একটা মুরগী প‌্যাকেজ চালু করছে। ৫টা মুরগী কিনলে একটা কোক ফ্রি। যতক্ষণ বইয়া থাকবেন ততক্ষণ কোক খাইবেন।

জাকিরের ব্রয়লার থাইক্কা লাভ হয় দেড়/দুইহাজার টাকা। তবে মাসে এই পরিমাণ প্রায় ৭০/৮০ হাজার টাকা। কোন টেনসন নাই, সন্ধ্যার মধ্যে সব বেচা-বিক্রি শেষ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।