খাওয়ার পর বাড়তি খাবার সংরক্ষণ করাটা গরমের এ সময়ে একটু মুশকিলই। গরমে, এমনকি ফ্রিজে রাখা খাবারও বেশিক্ষণ ভালো রাখা কঠিন। আর সেটা খেতে ভালোও লাগে না। তার চেয়ে বরং বেঁচে যাওয়া খাবারটা দিয়ে বানিয়ে ফেলুন নতুন কিছু। নাশতায়, অতিথি আপ্যায়নে বা বাচ্চাদের টিফিনের জন্য মজাদার সব খাবার তৈরি করতে পারেন।
কীভাবে, তা জানিয়েছেন রান্নাবিদ সিতারা ফিরদৌস।
জেনে নিন
রান্না করা মাংস বেঁচে গেলে সেটা পরের দিন সকালে পরোটা বা রুটির সঙ্গে খাওয়া যায়। প্রথমে আলু ছোট ছোট করে কেটে হালকা তেলে পেঁয়াজ, মরিচ দিয়ে ভেজে তার সঙ্গে মাংসটা মিশিয়ে নিন। ভুনা বা ভাজা করে পরিবেশন করতে পারেন রুটি বা পরোটার সঙ্গে।
মাংসের তরকারির সঙ্গে ছোলা বা বুটের ডাল সেদ্ধ করে মিশিয়েও সকালের নাশতায় খাওয়া যায়।
বাড়তি রান্না করা মাংসের সঙ্গে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, সেদ্ধ সবজি, শসা, মরিচ, টমেটো, ক্যাপসিকাম কেটে মাখিয়ে নিন। এর সঙ্গে টক দই বা মেয়োনেজ মেখে একটু রেখে দিন। রোল বা স্যান্ডউইচের পুর হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া শিঙাড়া বা সমুচাও বানাতে পারেন এ দিয়ে। চপের ভেতরেও একটু করে এই পুর দিতে পারেন।
রান্না করা বড় সামুদ্রিক মাছ, রুই মাছ—এসব যদি বাড়তি থাকে, তবে মাছের কাঁটা ছাড়িয়ে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, সেদ্ধ সবজি, শসা, টমেটো, ক্যাপসিকাম কেটে মিশিয়ে হালকা তেলে ভেজে নিন। এ দিয়ে রোল তৈরি করতে পারেন।
রান্না করা মাছের কাঁটা বেছে তার সঙ্গে ধনেপাতা, পুদিনা পাতা দিয়ে চপ তৈরি করতে পারেন।
বাড়তি মাছটার সঙ্গে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, সবজি মিশিয়ে মাখন বা মেয়োনেজ দিয়ে পুর তৈরি করে নিতে পারেন। পাউরুটির ভেতরে এই পুর দিয়ে স্যান্ডউইচ মেশিনে স্যান্ডউইচ তৈরি করতে পারেন।
অনেক সময় পাউরুটি খাওয়া হয়ে গেলেও এর শেষ কয়েকটি টুকরা রয়ে যায়। এসব পাউরুটির পাশের শক্ত অংশ ফেলে দিয়ে পাউরুটি কিউব করে কেটে নিন। ওভেনে টোস্ট করে একটু মাখন বা একটু তেল দিয়ে হালকাভাবে ভেজে সালাদের ওপর দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
যদি মুরগির মাংস বাড়তি রান্না করা থাকে, তবে তা দিয়ে চিকেন বল তৈরি করা যায়। প্রথমে রান্না করা মুরগির মাংস থেকে হাড় ছাড়িয়ে নিন।
মাংসে টমেটো সস, লবণ, গোলমরিচ, কিউব করে কাটা পাউরুটির অংশ মিশিয়ে মেখে বলের আকারে করে ডুবো তেলে ভেজে নিন।
একইভাবে চিংড়ি মাছের সঙ্গেও টমেটোর সস, লবণ, গোলমরিচ মিশিয়ে নিন। এবার পাউরুটি কিউব করে কেটে সেটা মেশাতে হবে। তারপর বলের আকার করে ডুবো তেলে ভাজতে হবে।
মিষ্টি রয়ে গেলে সেটা দিয়েও নতুন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করা যায়।
কাস্টার্ড বানিয়ে তাতে ওই মিষ্টি দিয়ে দিলে খেতে একটু ভিন্ন স্বাদ লাগে। আবার পুডিং বা কেকের সঙ্গে মিষ্টি কেটে পরিবেশন করা যেতে পারে। দইয়ের ভেতরে মিষ্টি ছোট ছোট করে কেটে দেওয়া যেতে পারে কিংবা ফলের সঙ্গেও মিষ্টি কেটে দিয়ে পরিবেশন করা যায়।
বেঁচে যাওয়া নানা ধরনের মিষ্টি একত্র করে তাতে একটু দুধ মিশিয়ে পেস্তা, কিশমিশ দিয়ে একটু তেল ছিটিয়ে চুলায় নাড়াচাড়া করতে হবে। আঠালো হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
শিশুরা বেশ মজা পাবে এটি খেতে।
অনেক সময় বাড়তি রান্না করা ডাল থেকে গেলে সেটাকে চুলায় দিয়ে শুকিয়ে ভর্তা করে খাওয়া যেতে পারে।
ডাল মাখা মাখা করে তাতে ধনেপাতা, টমেটো দিয়ে বাড়তি রান্না করা সবজি দিয়ে খেতে পারেন।
খাবার যেন নষ্ট না হয়
রান্না করা গরম খাবার ঠান্ডা করে বাটিতে বা কনটেইনারে ভরে ফ্রিজে রাখতে হবে। ফ্রিজ যদি না থাকে, তবে চুলায় গরম করে খাবারটাকে ঠান্ডা করে তারপর ঢেকে রাখতে হবে।
ওভেনে খাবার একবার গরম করে তারপর ভেতরের গরম বাতাসটা বের করে দিয়ে ওভেন ঠান্ডা করে নিন। তারপর এটি আবার ব্যবহার করুন।
গ্রন্থনা: নাঈমা আমিন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।