নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
চোর: পর্ব-১ Click This Link
রেললাইনের ক্লিপ চোর। অতি নিম্ন শ্রেনীর চোর। ভয়াবহ হুমকি যাত্রীদের জীবনের। কমলাপুর থেকে বনানী এজন্য বেশ স্পর্শকাতর হয়ে আছে।
ফাইবার অপটিক চোর।
মোবাইল কোম্পানী ও সংলগ্ন গ্রাহকদের চরম ভোগান্তিতে ফেলে মাঝে মাঝে এ চোররা। বোকারা ফাইবার চুরি করেনা, করে পাইপ ও সামান্য তামার কয়েল! তবে ঘাগু ফোনকোম্পানীগুলা এখন এমন ফাইবার বসাইতাছে যেখানে কোন তামা নেই। আশা করা যায় এ চুরি বন্ধ হবে অচিরে। চোররা গুড বাই।
মুরগী চোর।
অবশ্যই গ্রাম্য চোর। তবে বিলুপ্তপ্রায়। ধানের একটি লম্বা সাড়ি ছিটিয়ে দিয়ে তারা মুরগীকে জায়গামত নিয়ে যায়। তারপর..।
বই চোর।
এই চুরি নাকি জায়েজ! তাই আজকাল বই আর ধার দিইনা। দিলেও মোবাইলে নোট রেখে দিই! বর্ননার কিছু নেই, ঘনিস্ট বণ্ধুরা এ অপকর্মটা করে। আমার ফাঁসি চাই, পরার্থপরতার অর্থনীতি, Marketing Management By Kotler (ইন্ডিয়ান কালার ভার্সন, ৯০০ টাকা দিয়ে কেনা, নীলক্ষেত কপি হলে দু:খ ছিলনা!) সম্প্রতি চুরি যাওয়া আমার কটি বই।
কলম চোর। বর্ননা- ঐ।
কলিগ, পাশ্বযাত্রী, ক্লাসমেটদের হাতেই..। প্রতিরোধ করার আদি ও অকৃত্তিম উপায়- ক্যাপ খুলে নিজের কাছে রাখা।
ভোট চোর। জাল ভোট দেয়া বা প্রশাসনকে ধমকিয়ে/যোগসাজস করে পছন্দের মার্কায় ব্যালট বাক্স পুরানো। এমনকি গননার সময়ও টুকটাক নয়ছয় হয়।
তবে এরশাদের আমলে বাক্স কে বা কারা ভরিয়ে দিত। আওয়ামীলিগ এ চুরিতে ওস্তাদ। ১৯৭০, ৭৩ সালের মত জোয়ারের কালেও তারা ব্যাপক ভোট চুরি করত বলে মুরুব্বীরা কৈছে। জায়গামত বিএনপিও কামটা শিখছে। এমনকি জামায়াতও সাতকানিয়া, চৌদ্দগ্রামের মত জায়গায় চুরিটা করে বলে ব্যাপক অভিযোগ।
ইন্ডিয়ায়ও ভোট চুরি একটি পুরনো রাজনৈতিক অভ্যাস। স্পীকার আবদুল হামিদ হাওর অঞ্চলে দুর্গমতার সুযোগে নিয়মিতই ভোট চুরি করেন বলে শুনা যায়। সাকা চৌধুরির কামটা ভোট ডাকাতির পর্যায়ে পড়ে বলে জানি। চলতি সংসদের নির্বাচনে আওয়ামীলিগ ভাল অংকের ভোট চুরি করেছে বুঝা যায়।
কোরান শরীফ/খতমে কোরান চোর।
হুজুররা এ চুরি করেন। ৩০ পারা কোরান শরীফ ১০ জনে পড়তে কমপক্ষে ২ ঘন্টা লাগার কথা। হাফেজ হলে আরও কম। কিন্তু অনেক নন-হাফেজ কিভাবে জানি কামটা ৩০ মিনিটে সারেন! এ নিয়ে জনমনে ব্যাপক সন্দেহ। আমার জানা একটি ঘটনায় হুজুরকে গৃহকর্তা চ্যালেন্জ করলে শেষতক বাকিটা তিনি ঘরে গিয়ে পড়েন বলে স্বীকার করেন!
ট্রেন/বাসের ভাড়া চোর।
বিনা টিকেট ও বাংলাদেশ রেলওয়ে শব্দদুটি অঙ্গাঙ্গি জড়িত। বিশেষ করে শাখালাইন গুলাতে টিকেট কাটা একধরনের বোকামি বলে লোকজন ঠাউরায়! দুরপাল্লার বাসের ভাড়া মাইর দেয়া অসম্ভব হলেও শহরে এটা ঘটছে। কলাবাগানের টিকেট কেটে দিব্যি অনেকে শ্যামলী অবধি...। তাই বাসওয়ালারা এখন চেকার সিস্টেমে..।
তেল/মসলা চোর।
ছুটা কাজের বুয়াদের আদি পেশা। মেসে ব্যাচেলর পোলাপাইনের জন্য এটা চিরন্তন ভোগান্তির ইস্যু। কিছু করার নাই। তবে ডেইলি বেসিসে বাজার করে অনেকে ঠেকানোর চেস্টা করছেন।
আইডিয়া চোর।
বাংলাদেশের এড কোম্পানীগুলা কামটা হামেশাই করে। বিভিন্ন দেশের এড কালেকশান করে বাংলায় মেরে বড় মাপের ক্রিয়েটিভ বনে যান। বাংলালিংকের তিন্নি-মোনালিসার দেশ দেশ দেশ প্রথম এডটি টেলিনর পাকিস্তানের (টেলিনর টকশো) নকল!
ট্যাক্স চোর। সমাজের বেশীরভাগ লোক এ চুরিতে জড়িত। সরকারের কাছে এটা চাই সেটা চাই হাজারো দাবি থাকলেও ট্যাক্স নামক শব্দটা শুনলেই আমরা আকাশ থেকে পড়ি ও কিছুটা ভয় পাই।
স্কুলের বই পুস্তকে কোন আলোচনা না থাকা, অজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে দায়ী। যাহোক কোটিপতি লোকজনও রিটার্নে নিজেকে মিসকীন দেখাচ্ছেন। ব্যবসার খাতা ৩ টি। নিজেরটা, ব্যাংকের জন্য ও রাজস্ব বোর্ডের জন্য একটা! মজার ব্যাপার হল ট্যাক্স অফিসের কর্মচারীরা কদর করেন এদেরকে। নিয়মমাফিক ট্যাক্সদাতাকে নয়!! গত বছর স্থানীয় কর অফিসে গিয়ে এরকম ব্যবহারই আমি পেয়েছি।
ইনকাম ট্যাক্স উকিল নামে সমাজে একধরনের পেশা গড়ে উঠেছে পাবলিকরে ট্যাক্স ফাঁকি শেখানোর জন্য (মূলত।
ঘুম চোর। বাচ্চারা। মায়ের পীড়াপীড়িতে দুপুর বেলায় বিছানায় গিয়ে ঘুমের ভান ধরে পড়ে থাকে। ক্লান্ত মা ঘুমিয়ে পড়লে বাচ্চা সুযোগ বুঝে পগারপার।
আমরা ছোটবেলায় এমনটি করেছি। নিস্পাপ চুরি!
ফল-ফলাদী চোর। প্রতিবেশীর বাগানের কলাটা, বেলটা, বরই,আম, আনারস যখন যা পাওয়া যায়। শসা, মিস্টি আলু, তরমুজ। মোটাদাগে ফল সমুহ।
অনেক গৃহকর্তাই এতে মাইন্ডকরেননা। অনেকে আবার ধাওয়া দেন। গাছের ফল নাকি চুরি করে খাওয়া জায়েজ?
সরকারী অর্থ-চোর। বিরাট, মোটা, রাস্ট্রঘাতি চুরি। বাংলাদেশ, নাইজেরীয়া, পাকিস্তান, কেনিয়া এ চুরিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
মূলত টেন্ডার ও অকশন প্রহসনের মাধ্যমে চুরিটা সাধিত হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বন, স্থানীয় সরকার, সওজ, পাউবো, পুলিশ, রেল, ওয়াসা, শুল্ক, বিমান, মিলিটারী, বিচারালয় কে নেই এ চুরিতে। ৪ র্থ শ্রেনীর পিয়ন থেকে মুখ্য সচিব, সৈনিক থেকে জেনারেল, পেশকার থেকে জজ, গ্রাম্য কর্মী থেকে মন্ত্রীসভার সদস্য সবার শ্যন দৃস্টি রাজকোষের দিকে। যে দু চারজন সৎ আছেন তারা নিগৃহিত, ক্লান্ত, প্রায় ভিখারীর মত অবস্থা। এক সহকারী কমিশনারকে চিনি প্রতিমাসে বাবা থেকে ২০০০ টাকা নেন! বউ সহ নাহলে সংসার চালানো কঠিন।
আরেকজন সিনিয়র সহকারী কমিশনারকে চিনি হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে। চাকুরীর ৫ বছরে গ্রামে জমি কিনে (১০ লাখ) পাকা বাড়ী (২০ লাখ) করেছেন। জ্ঞাতটা লিখলাম, অজ্ঞাত অংক উক্ত চোরই ভাল জানেন!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।