দুর তরি ছাই, সকাল সকালই ঝামেলা, মেজাজটা কার না খারাপ হবে, এমন একটা অপবাদ মাথায় এসে পড়লে।
:: >বাবার চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভাঙ্গাল, ( কিন্তু বাবা তো সহসা এত লম্ফ জম্ফ করে না, বুঝলাম বিরাট কিছু ঘটেছে। )
: তোমার সাত সকাল বেলা কি হলো, এত চিল্লাফাল্লা করতাছো কেন বলল মা।
: চিল্লাফাল্লা করতে কি সাত, আট সকাল লাগে নাকি।
:: ::: বাবার এই কথা শুনে আমরা সবাই হেসে ফেললাম।
অবশ্য বাবার কড়া চাহনিতে গম্ভীর হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।
:: বলি আমার পকেট থেকে একহাজার টাকা কে নিলো।
:: মা সহ আমরা সবাই অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে রইলাম। এমন তো হবার কথা না, কোন দিন তো বাবার পকেট থেকে কেউই না বলে টাকা নেয় নাই। তাহলে তো বাবার লম্ফ জম্ফ দেওয়ার কারন ঠিকই আছে।
: তুমি এই সব কি বলতাছ বলল মা।
:: তোমাদের কি মনে হয় আমি মসকারা করতাছি.
:: আমি তোমাকে সেই কথা বলেছি নাকি, আমি বললাম সত্যি নাকি ।
:: বাবা পাঞ্জাবীটা মা'র হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল এখানে গত রাতে পাচঁ হাজার টাকা রেখেছিলাম, সকাল বেলা উঠে পাঞ্জাবীর পকেট থেকে চশমা নিতে গিয়ে দেখি চশমাটা নাই। আমার বুকটা ধক করে উঠল, টাকা গুনেতে গিয়ে দেখলাম এক হাজার টাকা ও নাই
:: বাবার মতো আমার কলজেটা ধক করে উঠলো, কারন বাবার চশমাটা মাঝে মাঝে আমি ব্যবহার করি, কিন্তু আমার সম্পূন্ন খেয়াল আছে গত রাতে বাবার চশমাটা আমি ব্যবহার করি নাই, অথচ ঘুম থেকে উঠে পড়ার টেবিলে চশমাটা দেখলাম, তখন কি আর জানি এত কিছু ঘটে গেছে। এখন তো সব দোষ আমার উপর এসে পড়বে।
এবং পড়ল তাই
:: :: পরক্ষনেই দেখলাম কাজের মহিলার হাতে বাবার চশমা। সে মুচকি মুচকি হাসসে। তার হাসি দেখে আমার পিলে চমকে গেল।
:: কিরে তুই চশমা কোথায় পেলি বলল বাবা কাজের মহিলাকে।
:: কই আর পামু, খালুজান, যেহানে পাওয়ার কথা সেইহানেই পাইছি।
:: মা ঝাজের সাথে বলল, কোথায় পাইছোত,
:: ক্যান মুরাদ ভাইজানের পড়হার টেবিলে।
:: মা, বাবা দুজনেই আমার দিকে কটমট করে চাইলো, এবং বলল কি তোর এত উন্নতি হয়েছে। এখনই পকেট মারা শুরু করে দিসত, আর দিন তো পইড়া রইছে.।
:: আমি কোন ভাবেই বুঝাতে পারলাম না যে টাকাটা আমি নেই নাই। কিন্তু তাদের একই কথা তুই ছাড়া তো আরো কারো সাহস নাই যে পাঞ্জাবীর পকেটে হাত দেই,
:: ঠিক আছে আমি হাত দেই কিন্তু শুধু চশমা দেওয়ার জন্য,
:: কিন্তু তারপর ও তাদের একই কথা তুই চশমা দিতে এসে লোভে পরে টাকা ও নিয়েছত।
::: এর মাঝে বাবা মাকে শুধু বলল তোমার ছেলেরে সামলাও না হলে ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের কেলেঙ্কারী হতে পারে। এই অপবাদ মাথায় দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম,
না কিছু একটা করতে হবে, আসল চোরকে বের করতেই হবে। তাই বুদ্ধি করে কিছু চাউল নিয়ে বাড়িত হাজির হলাম,( শুনেছি চাউল পড়ার নাকি কাজ হয়, কিন্তু আমি চাউল না পরিয়ে নিলাম, কারন আমাদের মাঝ থেকেই তো কেউ না কেউ টাকাটা চুরি করেছে। ) বাড়ি গিয়ে দেখি এখনো সেই আলোচনাই চলছে।
:: মা আমাকে দেখেই বলল, টাকা দে
: মা বিশ্বাস করো আমি টাকা নেই নাই।
: তার মানে, তুই কি বলছে চাস, টাকা আমি নিসি।
: আমি তোমাকে সেই কথা বলেছি নাকি।
:: বলতে বাকি ও রাখস নাই।
:: আমি তো বললাম আমি নেই নাই, কিন্তু এখনই পরিস্কার হবে যাবে কে টাকা নিসে,
:: বাবা বলল মানে,
:: বাবা আমি চাউল পড়াইয়া এনেছি, সেই চাউল খাইলে, যে টাকা নিসে তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হবে।
:: ভাই জান আপনি হেইকতা বিশ্বাস লন নাকি।
বলল কাজের মহিলা।
:: আমি জোড় গলায় বললাম, অবশ্যই বিশ্বাস করি। তাতে আসল চোর বের হবে যাবে।
:: ভাই জান আমি কিন্তু খামু না, আমি এটি বিশ্বাস করি না।
:: বাবা ও বিশ্বাস করে না এই আলতু ফালতু,
:: মনে হয় মা আমাকে বাচাঁর জন্যই বলল, হু ।
মুরাদ যেহেতু বলছে চাউল পড়া খাইলে কাজ হবে । আমরা সবাই খেয়ে দেখতে পারি ।
অনিশ্চা সত্ত্বে ও সবাই খাইলো কিন্তু কোন কাজ হইল না, না হবারই কথা কারন আমি তো চাউল পড়াইয়া আনি নাই।
:: কাজের মহিলা আমারে অবাক করে দিয়ে বলল, ভাইজান আপনি তো খান নাই।
:: আমি ও চাউল মুখে দিয়ে চিবাতে লাগালাম।
:: ভাই জান এবার থুথু ফালান,
:: আমি থুথু ফালাইয়া তো অবাক, শুধু আমি না বাবা, মা দুজনেই অবাক হয়ে আমার থুথুর দিকে চেয়ে রইল, আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।
কারন আমার থুথুর সাথে অনেক খানি রক্ত বের হয়েছে।
:: কাজের মহিলাটা মিচ মিচাইয়া হাসসে ।
:: বাবা শুধু বলল আমি বলছিলাম না ভবিষ্যতে আরো খারাপি আছে। ।
। ।
:::মা শুধু আমার দিকে কট মট করে চেয়ে রইল। । ।
আমি আর কিভাবে বুঝাবো টাকা আমি চুরি করি নাই। :
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।