আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক্সক্লুসিভ পোস্ট: চোর ধরার নতুন উপায় "বোতল পড়া"

অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই

আমার বাসায় একবার এক বন্ধুর বন্ধু এসেছিল। ঢাকার বাইরে থাকে আমাদের এলাকায় বোনের বাসায় এসেছে সেখান থেকেই আমার বন্ধুর পরিচয়ের সুত্রে আমার বাসায় এসেছে। সকালে এসে দুপুর পর্যন্ত ছিল এবং খাওয়ার পর চলে গেল। কিন্তু বন্ধুরা চলে যাবার পর পরই বাসা থেকে চার্জে থাকা ২টা মোবাইল গায়েব। ২টা সেটই যথেষ্ট দামী।

বাসায় আমার মা-বাবা,আমি,এক কাজিন,বাসায় কাজে মাকে সাহায্যের জন্য আমাদেরই গ্রামের এক ফুপু আর ছিল বন্ধু ও তার বন্ধু। সন্দেহ যতই করি না কেন এমন পরিস্থিতিতে একজন মেহমানকে সরাসরি চার্জ করা সম্ভব হয় না। বন্ধুর এবং আমার পরিবারের সন্মানও জড়িত। কিন্তু ফোনসেটগুলো তো আর এভাবে চলে যেতে দেয়াও যায় না। তখন আরেক মহাজ্ঞানী বন্ধু যার স্বনির্বাচিত নাম শ্রীযুক্ত মোশে কুরবান বড়ুয়া ( পিটার ) সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এল।

আমাদের এক হুজুরের কথা বললো, যে কিনা "বোতল পড়া" দিয়ে চোর বের করে ফেলবে। শতভাগ গ্যারান্টি। জীবনে চাল পড়া,তেল পড়া বহুত শুনেছি কিন্তু বোতল পড়া! যাক ওস্তাদ (শ্রীযুক্ত মোশে কুরবান বড়ুয়া (পিটার) যখন বলছে তখন ভরসা করতেই হয়। বিকেলে ঘটনার সময় উপস্থিত সবাইকে বাসায় উপস্থিত করিয়ে বন্ধু ও বন্ধুর অনুমুতি নিয়ে আব্বুর কাছ থেকে ২০০০ টাকা হাদিয়ে নিয়ে আমি আর ওস্তাদ "পড়া বোতল" আনতে চলে গেলাম। বাসা থেকে বের হয়েই ওস্তাদ বললো যে,বোতল মোতল পড়ার ঘটনা ভুয়া, আমরা একটা খালি কোকাকোলার কাচের বোতলে ভ্যাজলিন লাগিয়ে রুমের লাইট বন্ধ করে টেবিলে মোমবাতি জ্বলায়ে একটু দুরে রেখে দিব যাতে বোতলে যে ভ্যাজলিন লাগানো আছে সেটা বোঝা না যায়।

সবাইকে বলবো যে ঐ বোতল ধরে উচ্চারন করে বলতে যে আমি চুরি করি নাই। আর বলবো যে,মিথ্যা কথা বললে হাতে মধ্যেই বোতল ফেটে যাবে। সুতরাং যে চোর ও বিশ্বাস না করলেও ঐ রুমে একা একা বোতল ধরবে না। কারন এসব ব্যাপার সবাই একটু প্রেশার খায়ই। আর যার হাত শুকনো থাকবে সেই চোর।

যে চুরি করে নাই বোতল ধরতে তার কোন আপত্তি হবে না আর ওদের হাতে ভ্যাজলিন থাকবে সুতরাং শুকনো হাতই চোর! আর এই পদ্ধতি আগেও ফল দিয়েছে। আমি তো শ্রীযুক্ত মোশে কুরবান বড়ুয়া (পিটারের) বুদ্ধিতে খুশী হয়ে গেলাম। বাসায় এসে খুব সিরিয়াস ভাবে সবাইরে বললাম যে হুজুর খুবই গরম লোক। আমি ওনার দর্শনে মুগ্ধ ইত্যাদি। আমি আর ওস্তাদ ছাড়া সবাই বিশ্বাস করলো আমাদের কথা।

সবাইকে ওযু করালাম যেন মানসিক প্রেশারটা বেশী গাঢ় হয়। একে একে বাসার সবাই রুমে ঢুকে বোতল দুই হাতে ধরে বলে আসলো যে আমি মোবাইল চুরি করি নাই, আব্বু-আম্মুকেও পাঠালাম। সবাই বের হবার পরে আমরা তাকে আরেকটা রুমে নিয়ে হাত চেক করলাম। দরজার বাইরেই দাড়িয়ে ছিলাম আমি যেন কেউ উচ্চস্বরে বলে না উঠে যে "বোতলের গায়ে কি? " তাহলেতো কট!! সবারই হাতে ভ্যাজলিন পেলাম শুধুমাত্র বন্ধুর বন্ধু যে চুরিটা করছিল একমাত্র ওর হাতেই কোন ভ্যাজলিন নাই। আমরা পরে তারে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে বললাম ঘটনা কি,সাথে বললাম যে আপনি ধরা পড়ছেন।

সুন্দর মত মোবাইল দিয়ে দেন নইলে মাইর তো খাইবেন পরে সুদ সহ মাইরের দাম দিবেন। পরে আমরা গিয়ে তার বোনের বাসা থেকে মোবাইল দুটো নিয়ে আসি। মোবাইল তো পাইলামই সাথে হাদিয়ার ২ হাজার টাকা দিয়ে স্বাদে গিয়ে নান-কাবাব সাটাইলাম আর আরেকবারের মত মনে মনে বললাম "পীর ফকির তো কারো গায়ে লেখা থাকে না "! আপনাদের কারো যদি এমন চুরির ঘটনা ঘটে তাহলে মনোযোগ দিয়ে "বোতল পড়া" দিয়ে দেখেন । আমি ১০০০% নিশ্চিত সঠিক চোরের উপস্থিতিতে এটা করতে পারলে কাজ হবেই হবে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.