আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রচন্ড গরমে কয়েকজনের টেক্সট রিপ্লাই, আর আমি

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
আজকাল কাছে গাড়ি নাই সুতরাং কর্মক্ষেত্রে যাইতে হলে পাবলিক ট্রান্সপোর্টই একমাত্র ভরসা। যদিও এতে করে সময় বেশী নষ্ট হয়, শরীরেও বেশী কষ্ট অনুভুত হয়, তার পরেও ওতে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যাহার কারনে একলা একলা নিজের গাড়িতে করে যাওয়ার চাইতে অনেকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাইতে পছন্দ করেন । খোলাশা করিয়া বলিলে ঝাতির মাথার ডান্ডার বাড়ি পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকায় সাম্প্রতিককালের একটি ঘটনা কিন্চিৎ বোরকা পরাইয়া ঝাতি আপনাদের সামনে প্রকাশ করিতেছে ..... আবহাওয়াবিদদের মতে দিনের শুরুটায় অল্প রোদ আর তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও দিন বাড়িবার সাথে সাথে তাহা চরম গরমে পরিনত হইবার সম্ভাবনা আছে জেনে বড়ই বিচলিত হইয়া একখানা হাফ শার্ট আর পাতলা দেখিয়া একখানা সামারের প্যান্ট পরিয়া বাহির হইলাম ... রাস্টা ঘাটে মানুষ তখনো বেশী চলাচল করছিলো না, তাই ঠিকমতো বুঝিতে পারিলাম না গরমটা খুব বেশি নাকি একটু কম ... মাথার মধ্যে ঘুরিতেছিল আজকের তাপমাত্রা ২২° সে. সুতরাং রাস্তাঘাটে আজকে রং বেরং এর প্রজাপতি দেখিতে পাওয়া যাইবার কথা , অথচ রাস্তাঘাট এত ফাকা কেন ? এই গরমে কপাল দিয়া ঘাম ঝরিয়া পড়িলেও তাহা মুছিয়া দেয়ার তো দুরের কথা জিজ্ঞাসা করারও কেউ নাই যে তোমার কি বেশী গরম লাগিতেছে ? মনটা বড়ই ব্যাকুল হইলে একজনকে টেক্সট করিলাম -- বাহিরে প্রচন্ড গরম, এর মাঝেই আমি কাজে যাইতেছি ... উত্তর আসিলো -- তুমি কাজে যাও আমি গোসল করিয়া নিজেকে ঠান্ডা করিতেছি, আহা আহা কি শান্তির ঠান্ডা পানি । বেষ্ট অফ লাক। মনে মনে তাহাকে রিপ্লাই দিলাম -- তোর উইশ এর খেতা পুড়ি। দ্বিতীয় জনকে টেক্সট করিলাম -- কি রে খবর কি, এ দিকে আজকে চরম গরম পড়িয়াছে, এখন এই গরমের মাঝে কি পান করিলে দেহ মনে শীতল পরশ পাওয়া যাইতে পারে, কোন আইডিয়া ? উত্তর আসিলো -- তোমার কি ভালো লাগবে তাহা তো জানি না , তবে আমি ঘরওয়ালীর বানানো টাটকা তরমুজের শরবত খাইতেছি ... তোমাকে ফোনের মধ্য দিয়ে একটু শরবত পাঠাইলাম, দেখতো কেমন হয়েছে, স্বাদ টা কেমন হয়েছে জানাইতে ভুলিও না কিন্তু... আমি রিপ্লাই দিলাম -- আমার সাথে মশকরা করিতেছ? তিনি আবার জানাইলেন -- ভ্রাতা, মনে হইতেছে বেহেশতের অমৃত পান করিতেছি, বিশ্বাস না হয় তোমার ভাবীকে ফোন করিয়া জিজ্ঞেস করিতে পারো ... আমি মনে মনে তাহাকে বলিলাম -- এই দিন দিন না আরো দিন আছে .... তখনো বাস আসে নাই , এ জন্য আরেকজনকে টেক্সট করিলাম -- কি হে , খবর কি ... শুনেছি ঐ শহরে নাকি আজকাল মরুভুমির মত গরম অনুভুত হয়, তোমরা কেমনে টিকে আছ একটু জানাবা ? উত্তর আসিলো -- দোস্ত , এখানে গরমে অতিষ্ট সবাই তাই ছুটি নিয়ে বান্ধবী সহকারে বিচের উদ্দেশ্যে রওনা হইয়াছি, আপাতত তাহার সাথে বিজি আছি, পরে রিপ্লাই দিচ্ছি .... সবাই এমন জবাব দিচ্ছে দেখে মনটা বড়ই বিচলিত হইয়া গেল , ভাবিলাম সবাই আমাকে গরম থেকে বাচার পরামর্শ না দিয়ে বরং আমার শরীরে যেন হিটার গরমের পরিমান বাড়াইয়া দিতেছে .... শেষমেষ সবেধন নিলমনী, আমার যক্ষের ধনকে টেক্সট করিলাম, তাকে বিস্তারিত ঘটনা জানাইয়া বলিলাম -- এখন কি করিবো বলো, তুমি যাহা বলিবে তাহাই আমি করিব। এবার অপেক্ষার পালা , কোন জবাব আসে না দেখিয়া একই টেক্সট পর পর দুবার পাঠাইলাম ... অবশেষে জবাব আসিলো --- তুমি না কাজে যাইতেছ , এত কিছু কখন করিলে ? জবাব দিতে বিলম্ব হওয়ার জন্য দুঃখিত , আমি এসি ছেড়ে দিয়ে আমার জননীর কোলে মাথা রাখিয়া ঘুমাইতেছিলাম ... তুমি শান্ত হইয়া কাজে যাও... সাক্ষাতে কথা হইবে। এর জবাবে কি বলিব , কি বলিব না ভেবে না পাইয়া অবশেষে সেল ফোনটির ঘাড় ধরিয়া পকেটে ঢুকাইয়া দিলাম। কিছুক্ষন পরে বাস আসিলে তাহাতে বসিয়া দেখি সেখানে এসি চালানো হয়েছে .... বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব শরীরের প্রতিটি অনু পরমানুকে ছুয়ে গেল .... কিছুক্ষন পরে মনের কোনে এক বিচিত্র ভাবনার উদয় হলো --- আমার চারপাশের এত উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরির মাঝে কতক্ষন যে এই ঠান্ডা পরিবেশ অনুভুত হবে তাহা অনিশ্চিত মনে হইতে লাগিলো .... নিজেকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি এসির আবহাওয়াকে স্হির রাখার নিমিত্তে অবশেষে আবার পকেট থেকে সেল ফোনটি বাহির করিয়া পরবর্তি টেক্সট লিখিতে শুরু করিলাম ....
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।