যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৭টি যৌথ নদী রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি নদীর পানি-প্রবাহ ভারত অমানবীয় ও অপ্রতিবেশীসুলভভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। এভাবে বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তে গংগা, উত্তরে তিস্তা, পূর্বে গোমতি, উত্তর-পূর্বে মানু নদীর স্বাভাবিক গতি রূদ্ধ করা হয়েছে। এবার খড়গ উঠেছে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে সর্ববৃহৎ যৌথ নদী বরাকের দিকে।
বরাকের উজানে টিপাইমুখে বাঁধ নির্মিত হচ্ছে।
এর ফলে সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকায় ভয়াবহ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। সিলেট-মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চলে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। টিপাইমুখে একটা হাইড্রোইলেক্ট্রিক ড্যাম এবং ফুলারতলে ব্যারেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ভয়াবহ পরিবেশ, প্রাকৃতিক তথা মানবীয় বিপর্যয়ের কারণ হবে। যদিও ভারত সরকার টিপাইমুখ ড্যাম থেকে ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলছে।
ঠাসা পাথরে গড়ে ওঠা টিপাইমুখ বাঁধ এর উচ্চতা হতে যাচ্ছে ১৬২.৮ মিটার।
মনিপুর রাজ্যের টিপাইমুখ গ্রামের বরাক ও তুয়ভায় নদীর মোহনা থেকে পাঁচশ মিটার ভাটিতে ড্যামটি নির্মিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তে যেখানে বরাক ঢুকেছে সেই আমালসিদ থেকে জায়গাটার দূরত্ব হবে ১৯৫ কিমি। টিপাইমুখ বাঁধ এর পরিকল্পকরা বলেছেন যে এই বাঁধের ফলে তৎসলগ্ন কাছার অঞ্চলে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু বরাকের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বিঘ্নিত করায় তা সিলেট অঞ্চলের কমবেশী ৪৭টা হাওরের পানিশূণ্যতা সহ নানাবিধ ভূত্ত্বাতিক পরিবর্তন সংগঠন করে দীর্ঘমেয়াদের জন্য বিশাল অঞ্চলে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। এসব কারণে অত্র অববাহিকার মানুষ দীর্ঘদিন যাবত বিরোধিতা করছেন এই বাঁধ নির্মাণের।
শুধু বাংলাদেশ নয়, খোদ মনিপুরের লোকজনের বিরোধীতার কারণে দীর্ঘদিন বাঁধ তৈরী প্রক্রিয়াটি থেমে ছিল।
এখন আবার জোরেশোরে টিপাইমুখ বাঁধের কাজ এগিয়ে চলছে। সিলেট অঞ্চলের জীব-বৈচিত্র, ভূ-পরিস্থ পানি ব্যবস্থাপনায় বরাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখন হতে যাচ্ছে অভিশাপের গাঁথা - সুরমা, কুশিয়ারা সহ মেঘনা ব্যাসিনের মানুষের দুঃখ হয়ে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বরাক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।