আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেরোরিজম, ওয়াট ইজ ইট? এবং টেরোরাইজিং টেরোরিস্ট অর্থই বা কী? প্রথম পর্ব!

ইমরোজ

আজকে সন্ধ্যার দিকে একটা পোস্ট পড়ে সেটা নিয়ে লিখতে বসেছি। পোস্টটি ছিল জাকির নায়েক আর ওসামা বিন লাদেন বিষয়ক। লিখেছেন, ক্যাপটেন হ্যাটারাস। পোস্টে লেখা তেমন একটা ছিল না, একটা ভিডিও ক্লিপ দেখলাম। এবং সেটা বার বার দেখলাম।

প্রত্যেকটি কথা বার বার শোনার চেষ্টা করলাম। আসল কথায় আসি। প্রথমে আমাদের কাছে একটা জিনিস ক্লিয়ার হওয়া দরকার। সেটা হলো, টেরোরিজম অথবা সন্ত্রাসবাদী আসলে কী? আমরা কী আদৌ সেটা বুঝি? একজন মানুষকে যখন জোড় করে মেরে ফেলা হয় বা খুন করা হয় তাকেই টেরোরিজম বলে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বলে।

এটা কোন বিশেষায়িত সঙ্গা নয়, তবে আমার মত অনেক সাধারণ মানুষ এইটাই বিশ্বাস করে বলে আমার ধারণা। জাকির নায়েক একটা কথা বলেছেন, "টেরোরাইজিং দ্যা টেরোরিস্ট"। এখানে টেরোরাইজ করছে তালেবান, সোজা কথা, আর টেরোরিস্ট হলো আমেরিকা। এই দুই পক্ষ। আমি এখানে মুসলমান, খ্রীষ্টান ইহুদি ধর্মের কোন লোককে পক্ষ মানতে চাই না।

তালেবান শাসন-আমল কে একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, তারা আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর সেখানকার সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষতি করেছে। মেয়েদের কাজ করা বন্ধ করে দেওয়া তার মধ্যে অন্যতম। অনেক আফগানিস্তানীকেও তারা হত্যা করেছে। এসব কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। আর এসব কর্মকান্ড সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ভেতরেই পর।

আবার আরেকটু পেছনের দিকে যাই। তালেবানদের আসলে কারা তৈরী করেছে? সোজা উত্তর, আমেরিকা। তাহলে মুরগী আগে না ডিম আগের মত হয়ে গেল ব্যাপারটা। কাকে কী বলবেন? এখন আসুন দেখি এই দুই পক্ষের মধ্যে আরও কি কি ব্যাপার বিরাজ করছে। আমেরিকা অনেক সাহসী ও শক্তিশালী জাতি।

সম্ভবত এই একটি জাতই আছে যারা দুই দিক দিয়ে যুদ্ধ করে। একটা হলো সামনে দিয়ে। আরেকটা হলো পেছন দিয়ে। কিন্তু সমস্যা হলো এইভাবে যুদ্ধে জেতা সম্ভব, কিন্তু সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারে হিটলারের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের যুদ্ধে একটা বিশেষ সময় দেখা গেল হিটলারের জেনারেলরা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

এবং সেটা আমেরিকারই অবদান। ভেতরে ভেঙ্গে দিলে, বাইরে হিটলারের কোন শক্তিই থাকবে না। তেমনভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার সাথে আমেরিকার স্নায়ু যুদ্ধ চলে। এবং রাশিয়াকেও আমেরিকা ভেঙ্গে দেয়। আর এই ভাঙ্গাভাঙ্গির একপর্যায়ে জন্ম নেয় তালেবানরা।

তালেবানদের আমেরিকা ইউজ করে, এখন দেখে তারাই তাদের সব থেকে বড় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হলো, আমেরিকা কী সন্ত্রাসী? নাকি তালেবানরা সন্ত্রাসী? বুঝতে হবে, জাতি ধর্ম নির্বিশেষের বিচার এই যে দুইটাই সমান সন্ত্রাসী। তালেবানও সাধারণ মানুষ মারে, আমেরিকাও সাধারণ মানুষ মারে। বেসিক ডিফারেন্স বলতে গেলে একটাই, দুইজনের মারার ধরণ দুইরকম। একজনেরটা আকস্মিক (তালেবানদের) আরেকজনেরটা বলে কয়ে।

ভয় তালেবানদের নিয়ে বেশি, কারণ আকস্মিক হামলায় কোন আত্মরক্ষামূলক ব্যাবস্থা নেওয়া যায় না, কিন্তু বলে কয়ে মারলে, কিছুটা ব্যবস্থা করা যায়। জাকির নায়েক বিন লাদেন সম্পর্কে বলেছেন, "What ever he does, if he is on the path of Islam I support him". সম্পূর্ণ ভুল কথা। আমেরিকাকে যখন রাশিয়ান নিধনে তালেবান সাহায্য করেছিল, তখন কী জাকির নায়েক এই কথা বলতে পারতেন? যে কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডই যে কোন ধর্মে হারাম। এটাকে তিনি এভাবে জাস্টিফাই করতে পারেন না। তাহলে সাধারণ মানুষ সেটাকে মেনে নেবেন না।

আমিও তা মানি না। একটা কথা আমাদের বুঝতে হবে সব আমেরিকান, ইসরাইলিই যেমন সন্ত্রাসী না, আবার সব মুসলমানও সন্ত্রাসী না। তাই যেকোন স্থানে ইহুদি পাইলে মারব, খ্রীষ্টান পাইলেই মারব অথবা মুসলিম দেশ হলেই পরমাণু শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলব, তা একেবারেই ভুল। পক্ষপাতিত্ব। এই সাধারণ জিনিসগুলোই আমাদের আজকের বিশ্বে সব থেকে বড় সমস্যা।

এরপরের পর্বে আমি আরও বিস্তারিত আলোচনা করব, আশা করছি...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।