আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ছোটবেলা আর গুজরান খা-১!

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

মাথার মাঝে আর শব্দরা আনাগোনা করেনা। হয়তো শব্দ গুলো করেছে অভিমান অথবা ভাগুলো সব জানিয়েছে বিদায়। মাথার মধ্যে প্রতিদিন একটা শব্দই বারবার ঘুরে ফিরে আসে-কেপিআই। অনেকদিন পর গুজরান খার লেখাটা পড়লাম।

মনে পড়ে যায় তার কিছু কথা বড়ই ইতং বিতং। মনে পড়ে একটা কথা আবছায়া," ফড়িং এর দিকে চাইয়া থাকবি, দেখবি শুধু রং, আর যখন উড়াল দিবো তখন তাকাবি অন্যদিকে, নাইলে প্রবলেম!" : পবলেম এর মানে কি? : এই জন্যই কইছিলাম মাদ্রাসায় যাইস না, মুল্লা হইয়া মূলা ঝিলাইতে টাইম লাগবো না। তয় ঘাসফড়িং উড়াল দিলে কখনো চাইয়া দেখবি না, সুন্দর জনিস তোর কপালে নাই। তোর কপালে আছে গরম কড়াই! কথা শুনে তখন মনে হয়েছিলো আমার মাথার এন্টেনার সাইজ অন্যান্য সবার থেকে ছোট তাই তার কথা মাথায় ধরে না, তবে এটা জানতাম সে কখনো মিথ্যা বলে না। সবচেয়ে ভালো লেগেছিলো রেদওয়ান ভাই এর ব্যাপারে বলেছিলো তার সমাধানের কথা।

হ্যা, তাকে দেখে মনে হয় সে অতিপ্রাকৃত কেউ, মনে হয় এ জগতের কেউ না, তাই এই জগৎ সম্পর্কে বড্ড উদাসীন! কোয়ান্টাম এনটেঙ্গলমেন্ট নিয়ে পড়ছিলাম। প্রথমে আগ্রহটা ছিলো টেকিওনিক পার্টিক্যাল নিয়ে যদিও এটা একটা হাইপোর মধ্যে পড়ে। তবে ঘাটতে ঘাটতে সুব্রমোনিয়ামের দেয়া এনটেঙ্গলমেন্টের পেপারটা পেলাম। ও বলেছিলো ইলেক্ট্রনের স্টেট গুলোর মাঝে প্রোবাবিলিটির প্রিসিসিশন কতটা বেশী এবং এই প্রিসিশন লগটা বা ইভেন্ট অন্য কোনো কিছুর সাথে মিলে কিনা! প্রথমে ব্যাপারটা যতটা ভয়াবহ মনে করেছিলাম পরে যখন টোটাল যাবতীয় রিসার্চ পেপার নিয়ে বসলাম আর উপাত্ত গুলো দেখলাম তখন মনে হলো অধিকাংশ ধ্রূবক আর চলক রাশির নামই শুনি নাই। বেকুবের মতো ঘাটাঘাটি করতে করতে একটা লেখা হাতে পেলাম।

লেখাটা শুধু এতটুকুই ছিলো অসাধারন মানুষও মাঝে মাঝে বড় বড় ভুল করে। রবীন্দ্রনাথ একবার নাকি মুসোলিনির দাওয়াত গ্রহন করেছিলেন। স্বশরীরে দেখা করে খানিক ক্ষণ কথাও বললেন, তাকে এটাও বললেন যে একটা আত্নজীবনী লেখার। বৈঠক শেষে মহাকবির অভিব্যাক্তি ছিলেন এরকম যে, মুসোলিনী একজন মহান নেতা এবং খুবই অতিথিপরায়ন। তার মতো মহান নেতার সাঠে আলাপ আলোচনা উনি বড়ই আনন্দিত।

আমি কিছুক্ষণ হাসলাম, যেই লোক জালিয়াওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের জন্য নিজের নাইট উপাধি ত্যাগ করলেন সেই লোক মুসোলিনির মতো লোককে মাথায় তুললেন, আফসোস আমি থাকলে মুসোলিনিকে ঘাড়ে তুলে বাতিস্তার মতো একটা আছাড়ই দিতাম। আমি ফিজিক্স পড়া মাথায় উঠলো। ছোটবেলার কথা আবার মনে পড়ে যায়। ফিরে আসি আগের চিন্তায়। পাটক্ষেতের মাঝে ছুটে যেতাম ঘাশফড়িং ধরবো বলে।

দক্ষিণা হাওয়ায় উড়ে যেতো শার্টের কাপড়। তখন অমিতাভের বোতাম খোলা শার্টের স্টাইল চলছিলো। হাটতে হাটতে উষ্টা খাই গুজরান খার উপর। উল্লেখ্য উনি পাটক্ষেতে বসে হিস্যু করছিলেন। : (আমার কানটা ধরে বললেন) ভজা, মরার আর জায়গা পাই না? : আপনি এইখানে পাটক্ষেত নস্ট করতেছেন কেন? দেখতেছেন না, ফড়িং এ পাট সব খাইয়া ফেলাইলো! : বলে কি চাদু, ফড়িং এ যদি পাটশাক না ভাইজা খায়, তুমি তাইলে ঘাস খাওয়া শুরু করো।

তাইলেই তো সমস্যা কেল্লাফতে। এখন আমার মাথা না খাইয়া ভাগ, নাইলে লাঠির বাড়ি। আর শোন, কালকা স্কুলে যাওনের আগে দাদারে আগে দোকানে নিজে পাঠাইয়া স্কুলে যাবি? : কেন, দাদায় কি তুমারে থেটারিং দিছে? সে কোনো উত্তর দেয় নাই। তারপরের দিন স্কুল থেকে এসে শুনি দাদা নাকি রিক্সায় এক্সিডেন্ট করেছেন। বেশী ব্যাথা অবশ্য পাননি।

রিক্সা থেকে নামবার সময় পিছন থেকে আরেকটা রিক্সা ধাক্কা দেয়ায় কিছুটা বেমক্কা গুতা খেলেন। ব্যাপারটা আমি তেমন গা করিনি, অবশ্য গা করার কথাও নয়, কারন ছোটবেলা থেকেই আমার স্মৃতিশক্তি প্রচন্ড দুর্বল, দৃস্টি ছিলো ক্ষীণ। হয়তো সারাদিন আকাশ পানে চেয়ে থাকা একটা অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছিলো। যখন মন টা ভালো থাকতো তখন আলে ভালে ছোট কাকার সাথে রেসলিং এ নামতাম। তখন বাবার মুখে শুনতাম গামা পালোয়ান নামের একজন আছেন যে আমেরিকায় রেসলিং করে।

: আব্বা, রেসলিং কোন দোকানে পাওয়া যায়! : রেসলিং একটা খেলা, কুস্তাকুস্তি। : তাইলে আসো, তুমার লগে কুস্তাকুস্তি করি! : (কান ধইরা বলে) সারাদিন বড়ই আচারের বয়ামে পইড়া থাকলে হবে, এখনও ক লিখতে বললে স্বর - অ লেখো, ৩১ লিখতে কইলে ১৯ লেইখা আসো। শুনলাম গতকালকাও নাকি স্কুলে বেতের বাড়ি খাইছো। যাও পড়তে যাও! আমি কান ডলতে ডলতে জানালার সামনে একটা বই খুলে কাঠাল গাছের কচি পাতা দেখতে লাগলাম। শুনেছি যখন আম পাকে তখন নাকি কালবৈশাখী ঝড় হয়, তখন নাকি আর আম পাড়তে গাছে ইটা মারতে হয় না, কুড়লোই পাওয়া যায়।

আবার মাঝে মাঝে নাকি আকাশ থেকে বরফও পড়ে। আমি অপেক্ষায় থাকতাম কখন বরফ পড়বে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।