আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাইবেলে পূর্ববর্তী শ্রেষ্ঠ জাতি ইহুদীদের পরাজয়ের একটি ঘটনা...

কোন একদিন.. এদেশের আকাশে... কালেমার পতাকা দুলবে, সেদিন সবাই ... খোদায়ী বিধান পেয়ে দু:খ বেদনা ভুলবে..

এটি হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের প্রায় এক হাজার বছর আগের ঘটনা৷ সে সময় আমালিকারা বনী ইসরাঈলদের ওপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছিল৷ ইসরাঈলীদের কাছ থেকে তারা ফিলিস্তিনের অধিকাংশ এলাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল সামুয়েল নবী তখন ছিলেন বনী ইসলাঈলদের শাসক৷ কিন্তু তিনি বার্ধক্যের জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন৷ তাই ইসরাঈলী সরদাররা অন্য কোন বক্তিকে নিজেদের নেতা বানিয়ে তার অধীনে যুদ্ধ করার প্রয়োজন অনুভব করছিল৷ কিন্তু তখন বনী ইসরাঈলদের মধ্যে অজ্ঞতা এত বেশী বিস্তার লাভ করেছিল এবং তারা অমুসলিম জাতিদের নিয়ম, আচার-আচরণে এত বেশী প্রভাবিত হয়ে পড়েছিল যে, খিলাফত ও রাজমন্ত্রের মধ্যকার পার্থক্যবোধ তাদের মন-মস্তিস্ক থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল৷ তাই তারা একজন খলীফা নির্বাচনের নয় বরং বাদশাহ নিযুক্তির আবেদন করেছিল৷ এ প্রসংগে বাইবেলের প্রথম আমুয়েল গ্রন্থে নিম্নলিখিত বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ হয়েছেঃ ''সামুয়েল সারা জীবন ইসরাঈলিদের মধ্যে সুবিচার করতে থাকেন৷. ………………..তখন সব ইসরাঈলী নেতা একত্র হয়ে রামা'তে সামুয়েলের কাছে আছে৷ তারা তাঁকে বলতে থাকেঃ দেখো, তুমি বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে পড়েছো এবং তোমার ছেল তোমরা পথে চলছে না৷ এখণ তুমি কাউকে আমাদের বাদশাহ নিযুক্ত করে দাও, যে অন্য জাতিদের মতো আমাদের প্রতি সুবিচার করবে৷………..একথা সামুয়েলের খারাপ লাগে৷ তিনি সদাপ্রভূর কাছে দোয়া করেন৷ সদাপ্রভু সামুয়েলকে বলেনঃ যে বাদশাহ তোমাদের ওপর রাজত্ব করবে তার নীতি এই হবে যে, সে তোমাদের পুত্রদের নিয়ে যাবে,তার রথ ও বাহিনীতে চাকর নিযুক্ত করবে এবং তারা তার রথের আগে আগে দৌড়াতে থাকবে৷ সে তাদেরকে সহস্রজনের ওপর সরদার ও পঞ্চাশজনের ওপর জমাদার নিযুক্ত করবে এবং কাউকে কাউকে হালের সাথে জুতে দেবে , কাউকে দিয়ে ফসল কাটাবে এবং নিজের জন্য যুদ্ধাস্ত্র ও রথের সরঞ্জাম তৈরী করাবে৷ আর তোমাদের কন্যাদেরকে পাচিকা বানাবে৷ তোমাদের ভালো ভালো শস্যক্ষেত্র, আংগুর ক্ষেত ও জিতবৃক্ষের বাগান নিয়ে নিজের সেবকদের দান করবে এবং তোমাদের শস্যক্ষেত ও আংগুর ক্ষেতের এক দশমাংশ নিয়ে নিজের সেনাদল ও সেবকদের দান করে দেবে৷ তোমাদের চাকর-বাচক, ক্রীতদাসী,সুশ্রী যুবকবৃন্দ ও গাধাগুলোকে নিজের কাজে লাগাবে এবং তোমাদের ছাগল-ভেড়াগুলোর এক দশমাংশ নেবে৷ সুতরা তোমরা তার দাসে পরিণত হবে৷ সেদিন তোমাদের এই বাদশাহ, যাকে তোমরা নিজেদের জন্য নির্বাচিত করবে তার কারণে তোমরা ফরিয়াদ করবে কিন্তু সেদিন সদাপ্রভু তোমাদের কোন জবাব দেবেন না৷ তবুও লোকেরা সামুয়েলের কথা শোনেনি৷ তারা বলতে থাকে,না আমরা বাদশাহ চাই, যে আমাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে৷ তাহলে আমরাও অন্য জাতিদের মতো হবো৷ আমাদের বাদশাহ আমাদের মধ্যে সুবিচার করবে, আমাদের আগে আগে চলবে এবং আমাদের জন্য যুদ্ধ করবে৷ . ………………. সদাপ্রভু সামুয়েলকে বললেনঃ তুমি ওদের কথা মেনে নাও এবং ওদের জন্য একজন বাদশাহ নিযুক্ত করে দাও৷'' (৭ অধ্যায়, ১৫ শ্লোক থেকে ৮ অধ্যায় ২২ শ্লোক পর্যন্ত)৷ ''আবার সামুয়েল লোকেদের বলতে থাকেন…………….. যখন তোমরা দেখলে আম্মুন সন্তানদের বাদশাহ নাহাশ তোমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে তখন তোমরা আমাকে বললে, আমাদের ওপর কোন বাদশাহ রাজত্ব করুক অথচ তোমাদের সদাপ্রভু খোদা ছিলেন তোমাদের বাদশাহ৷ সুতরাং এখন সেই বাদশাহকে দেখো, সদাপ্রভূ তোমাদের ওপর বাদশাহ নিযুক্ত করেছেন৷ যদি তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় করো, তাঁর উপাসনা করো, তাঁর আদেশ মেনে চলো এবং সদাপ্রভূর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ না করো আর যদি তোমরা ও তোমাদের বাদশাহ, যে তোমাদের ওপর রাজত্ব করে,সবাই সদাপ্রভূ খোদার অনুগত হয়ে থাকো তাহলে তো ভালো৷ তবে যদি তোমরা সদাপ্রভূর কথা না মানো বরং সদাপ্রভূর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করো, তাহলে সদাপ্রভুর হাত তোমাদের বিরুদ্ধে উঠবে, যেমন তা উঠতে তোমাদের বাপ-দাদাদের বিরুদ্ধে৷………….. আর তোমরা জানতে পারবে এবং দেখতেও পারবে যে, তোমরা সদাপ্রভূর সমীপে নিজেদের জন্য বাদশাহ নিযুক্তির আবেদন জানিয়ে কত বড় অনিষ্ট করেছো৷ …………….. এখন রইলো আমার ব্যাপার, আর খোদা না করুন, তোমাদের জন্য দোয়া না করে আমি সদাপ্রভুর কাছে পাপী না হয়ে যাই৷ বরং আমি সেই পথটি, যা ভালো ও সোজা, তোমাদের জানিয়ে দেবো৷'' (১২ অধ্যায়, ১২ থেকে ১৩ শ্লোক পর্যন্ত)৷ বাইবেলে সামুয়েল গ্রন্থের এই বিস্তারত বিবরণ থেকে একথা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, বাদশাহী তথা ব্যক্তি একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠার এই দাবী আল্লাহ ও তাঁর নবী পছন্দ করেননি৷ এখন প্রশ্ন উঠতে পারে,কুরআন মজীদে এ প্রসংগে বনী ইসরাঈলের সরদারদের এই দাবীর নিন্দা করা হয়নি কেন? এর জবাবে বলা যায়, এখানে আল্লাহ যে উদ্দেশ্যে এ ঘটনাটির উল্লেখ করেছেন তার সাথে এই দাবীটির ঠিক বেঠিক হবার বিষয়টির কোন সম্পর্ক নেই৷ এখানে আল্লাহর উদ্দেশ্য হচ্ছে এ বিষয়টি সুস্পষ্টকরে তুলে ধরা যে, বনী ইসরাঈলরা কতদূর কাপুরুষ হয়ে গিয়েছিল,তাদের মধ্যে স্বার্থান্ধতা কতখানি বিস্তার লাভ করেছিল এবং নৈতিক সংযমের কেমন অভাব পরিলক্ষিত হয়েছিল যার ফলে অবশেষে তাদের পতন সূচিত হলো৷ মুসলমানরা যাতে এথেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং নিজেদের মধ্যে এই দুর্বলতাগুলোর প্রশ্রয় না দেয় সেজন্যই এর উল্লেখ করা হয়েছে৷ (ইসলাম.net.bd) আমাদের দেশে যে গনতন্ত্রের চর্চা হয়ে থাকে তা আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাচারী বানিয়ে দিচ্ছে। তারা ক্ষমতায় গিয়ে যা ইচ্ছে তাই করে, তাদের সাথী দুর্নিতীবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, সন্ত্রাসীদের লালন করে আর মিডিয়ার বাজে ব্যবহার করে। আর দিনের পর দিন আমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বিদেশীদের হাতে চলে যাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছি। আমাদের পতনও প্রায় অবধারিত। আমাদের উচিত তা প্রতিরোধ করা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.