আমি হঠাৎ করে গল্প লিখার বৃথা চেষ্টা করছি যানি না কোথায় গিয়ে এর শেষ হবে।
আজ খুব সকালে অনুর ঘুম ভাঙ্গল। সচরাচর এত সকালে উঠে না আনু কিন্তু কাল সারা রাত ঠিক মত ঘুম হয়নি তাই খুব ভোরে উঠেই ঘরের জানালাটা খুলে দিল। সবে বসন্ত শুরু হয়েছে তারপরও বাতাসে শীতের আবেশ রয়ে গেছে। সকালের মিষ্টি রোদ বারান্দায় এসে পরছে।
অনু একটা বই হাতে নিয়ে ঘড়িতে দেখল সকাল সাতটা, বারান্দায় এসে বসল অনু। বইটা খুলে বাইড়ের দিকে তাকিয়ে রইল । কোলের উপর বইটা ঐভাবেই খোলা পরে আছে পড়ায় একদমই মন নেই তার। নিজের মনেই বলে ওঠে অনু সব কিছু এত সুন্দর সাভাবিক তাহলে তার মন কেন এত উদাস। কিছুক্ষন পর অনু টের পায় তার গাল বেয়ে কখন অশ্রু বয়ে যাচ্ছে সে টেরও পায়নি।
আজ থেকে ঠিক দুই বছর আগে একটি অনুষ্ঠানে নিলয়ের সাথে অনুর পরিচয়। পরিচয় পর্বটা ছিল খুব অদ্ভুত। মনে হলে এখনও অনুর খুব হাসি পায়। অনু একা একা বসে ছিল দেখে নিলয় এসে অনুর সাথে কথা বলা শুরু করে। প্রথমটায় অনু খানিকটা বিরক্তি প্রকাশ করে।
নিলয়ের যেন তা চোখেই পরছেনা অথবা দেখেও না দেখার ভান করছে। নিলয় নিজের পরিচয় দিল। অনুও নিজের পরিচয় দিল। অনু যেন তার বাল্লকালের বন্ধু এমন ভাবে গল্প জুরে দিল নিলয়। অনু হুম হ্যা রকমের উত্তর দিচ্ছিল।
তাতেও নিলয়ে যেন কোন সমস্যা নেই একনাগারে কথা বলেই যাচ্ছে বলেই যাচ্ছে। একটা সময় অনু খুব মন দিয়ে নিলয়ের কথা শুনতে শুরু করল। আর নিজের মনেই অবাক হল নিলয়ের মধ্যে কিছু আছে যা খুব সহজেই মানুষকে কাছে টানে। অনুষ্ঠান শেষে চলে আসার পালা কিন্তু অনুর আসতে ইচ্ছা হচ্ছিলনা। কিন্তু যেতে হবে উপায় নেই।
মাত্র ঘন্টা খানেক কথা বলেই নিলয়কে বন্ধু মনে হয়েছে অনুর। নিলয় নিজ থেকেই তার কার্ডটা পকেট থেকে বের করে অনুর হাতে দিয়ে অনুর নাম্বারটা চাইল। অনু নিজের নাম্বারটা দিয়ে বিদায় জানিয়ে চলে আসে। সারা রাস্তা নিলয়ের কথা ভাবতে ভাবতেই বাড়ি ফেরে অনু।
রাতের খাবার শেষ করে সবে একটা বই নিয়ে বসেছে অনু।
দু'পৃষ্ঠা পড়তেই মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল ঝনঝন করে। বইটা রেখে মোবাইলটা হাতে নিয়ে নাম্বারটা একবার দেখে নিল, অপরিচিত নাম্বার। হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে পরিচিত কন্ঠ নিলয়ের।
নিলয়: বিরক্ত করলাম নাতো?
অনু: না
নিলয়: চিনতে পারছ?
অনু: হ্যা আপনি নিলয়।
নিলয়: আপনি?? আমাকে আপনি কেন বলছ? আমরাতো বন্ধু এখন, আমাকে তুমি করে বল।
অনু: আপনিও যাহ্ । হুট করে তুমি বলা যায় নাকি?
নিলয়: তাহলে আমিও আপনি বলব। যদিও আমার আপনি বলতে ভাল লাগেনা। প্লিজ আমাকে তুমি করে বল।
অনুর হাসে পায়।
হেসে উঠে অনু। হাসতে শুনে নিলয় ওর খুব প্রশংসা করে।
নিলয়: তোমার হাসিটা খুব সুন্দর অনু।
অনু: (লজ্জা পেয়ে) তাই বুঝি?
নিলয়: হুমম। কই তুমিতো আমাকে তুমি করে বলছ না।
অনু: (হেসে) আচ্ছা বাবা এই নাও এখন থেকে তুমি করেই বলব। এবার খুশিত? তুমি একটা পাগল নিলয়।
নিলয়: থ্যাংক ইউ অনু। আমি যানি আমি পাগল।
নিলয় কি করে, কোথায় থাকে, পরিবারে কে কে আছে এই সব বিস্তারিত বলতে থাকে।
নিলয়রা দু'ভাই এক বোন। বোন সবার বড়, বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ভাই ব্যবসা করে তার সাথেই থাকে। বাবা মা অন্য শহরে থাকেন। নিলয় একটা কম্পিউটার ফার্মে চাকরি করে।
অনুও নিজের কথা বলে, এক ভাই এক বোনের মধ্যে অনু বড় অনার্স ৩য় বর্ষ। ছোট ভাই ও'লেভেল দিচ্ছে। বাবা চাকরি করেন আর মা গৃহিনী।
দ্বিতীয় দফা পরিচয়ের পালা শেষ। কিন্তু অনু আর নিলয়ের কথা আর শেষ হয়না।
কথা বলতে বলতে সময় কতটা গড়াল তার হিসেব নেই অনুর। দরজায় টোকা পরল,
মা: অনু, এই অনু আর কত ঘুমাবি? ঘড়িতেযে দুপুর দুটা বাজে সে খেয়াল কি তোর আছে? তোর বাবা ডাকছে জলদি ওঠ.. অনু এই অনু।
অনু: আসছি মা।
অনু খুব অবাক হয় সারা রাত কি এত কথা বলল? অনুর চাইতে নিলয়ই কথা বলেছে বেশি। অনু শুধু শুনেছে।
অনু: নিলয় দুপুর হয়ে গেছে। এবার রাখি।
নিলয়: না প্লিজ, আমি আরো কথা বলব।
অনু: মা ডাকছেতো।
নিলয়: ডাকুক
অনু: এই হয়েছেটা কি তোমার, আমাকে এই বয়সে বকা খাওয়াতে চাও??
নিলয়: এই বয়স মানে তুমি কি বুড়ি?
অনু: হুম বুড়িইতো।
নিলয়: আচ্ছা তাহলে তুমি আমার বুড়ি।
অনু : তুমি আসলেই একটা পাগল। এই আমি এবার যাই পরে আবার কথা হবে।
নিলয়: আচ্ছা যাও তাহলে।
ফোন রেখে দিয়ে মা, মা ডাকতে ডাকতে নিজের ঘর থেকে মার ঘরের দিকে যায় অনু।
চলবে। ........
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।