আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কি?

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল এই আন্দোলন সুন্দর। কোন কিছুর দাবিতে আমরা অনেক দিন এইভাবে একত্রিত হই না। তাই সুন্দর। অভূতপূর্ব নয় তবে, দুর্লভ-পূর্ব। কিন্তু এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কি? পুলিশিয় কড়া নিরাপত্তার ভেতরে এই অবস্থান কার উদ্দেশ্য সফল করছে? "রাজাকারের ফাঁসি নিশ্চিত হওয়ার আগে আমরা যে ঘরে ফিরে যাব না", এই ঘোষণাকে কতটা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে সরকার? নাকি দাঁত ও নখর-হীন, শুধুই স্লোগানে মুখর ব্যাপক এই আস্ফালনকে শুধুই কাজে লাগানো এটা জেনে যে, এর কোন ভবিষ্যৎ নাই, ফলাফল নাই? বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার।

আমার নিজেরই পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমরা কি বলতে চাই না যে, এই লঘু বিচার মানি না? এবং এই বিচার সাজানো? দলগুলোর মধ্যে গোপন আঁতাত হয়েছে? সরকারই এর নাটেরগুরু? তারা আমাদের নিয়ে খেলছে? যদি তাই হয় জামাতশিবিরকে প্রত্যাখ্যান করে, এবং তাদের দোসর হিসেবে সরকারকে দায়ী করে এই আন্দোলন সরকার বিরোধী আন্দোলন। তবে সরকার এত মজা পাচ্ছে কেন? তাদের নেতানেত্রীরা ওখানে কি করছে? তারাও কি দাবী করে যে তাদের দল নিয়ন্ত্রিত সরকার গোপন আঁতাত, সমঝোতা করেছে জামাত শিবিরের সাথে? স্লোগান ও দাবীগুলোও খুবই কৌশলী। কেউই ঝেড়ে কাশছে না। "রাজাকারের ফাঁসি চাই।

" অজামাতশিবির সবাই তাই চায়। "তুই রাজাকার তুই রাজাকার"। অপরাধ প্রমাণের মাধ্যমে রাজাকার প্রমাণিত হয়েছে বলেইতো শাস্তি হয়েছে, তা লঘুই হোক, আর গুরুই হোক। সুতরাং এই শ্লোগানও গুরুত্ববহ নয়, আবেগবহ*। তারপর আর যা আছে রাজাকার বাংলা ছাড়, পদ্মামেঘনাযমুনা, ইত্যাদি ইত্যাদি, কিন্তু কোনটাই এই আন্দোলনের ভিত্তিকে চিত্রিত করে না।

আমরা যদি বলতে চাই, এই বিচার আপসের বিচার, গোপন আঁতাতের বিচার, তবে আমাদের স্পষ্ট করে তা বলতে হবে। বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। সুতরাং আমরা যদি বলতে চাই, এই বিচার স্বাধীনভাবে হয়নি, তবে কই বলি? বলি না কেন? বললেও এত কম কেন? আইনজীবীরা, বিশেষজ্ঞরা বলছে তথাকথিত, সেকেলে মানসিকতার কারণে সর্বচ্চ শাস্তি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আইন সংশোধন নিয়েও চিন্তা করা হচ্ছে। কিন্তু যদি আইন সংশোধন হয় তবে কি কাদের মোল্লার বর্তমান দণ্ড বাতিল করে তবেই পুনরায় তাকে বিচারের আওতায় আনা যাবে? যদি বর্তমান রায় বাতিল করতে হয়, তবে কি বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশও বাতিল হয়ে যাবে? নাকি বর্তমান রায় বহাল রেখেও পুনরায় এদের ট্রাই করা যাবে? আমরা যদি বলতে চাই, আরে রাখেন এইসব ফালতু কথা, সবই আপনাদের চাল।

তবে আমাদের ঝেড়ে কেশে স্লোগানে স্লোগানে তাই বলতে হবে!! গান গেয়ে দেশপ্রেমে আবেগপ্রবণ হয়ে লাভটা কোথায়? ভাল লাগে, এইতো? ভাল লাগছে শুধু এটাই যে এই আন্দোলন জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে মানুষকে সোচ্চার করছে। রাজাকারের বিচার যে সবাই চায়, তাই প্রমাণিত হচ্ছে। স্লোগানগুলো দিতে ভাল লাগে। একমনা মানুষের জমায়েতে একসাথে থাকতে ভাল লাগে। হাটা চলা করতে ভাল লাগে।

চাসিগেরেট খেতে ভাল লাগে। কিন্তু যতক্ষণ না, মানুষ রাজাকারের ফাঁসি চেয়ে ও জামাত শিবিরকে প্রত্যাখ্যান করে তাদের অবস্থান কার বিরুদ্ধে, তা পরিষ্কার করছে এবং তার সাথে সাথে যতক্ষণ না সরকার এই আন্দোলনকে সিরিয়াসলি নিচ্ছে, তাদের টনক নড়ছে, মানুষ ঝুঁকি নিচ্ছে এই আন্দোলন কি গতি পাচ্ছে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।