আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা ভূলিনি তোমাদের। তোমাদের উৎসর্গের কারনেই আজ আমরা পেয়েছি ছোট্ট এই বাংলাদেশ।



কৃষ্নচূড়া আর রক্ত পলাশের, রঙীন জাল বুনে একুশে এসো আজ, শান্ত পায়ে পায়ে নতুন ফাল্গুনে। ১৯৪৮ সালে আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষনা দিলো "Urdu must be state language of pakistan" । সহ্য হলোনা বাংলার মানুষের। সহ্য হলোনা বাংলার দামাল ছেলেদের। বুকের ভিতরের সিংহটা যেন জেগে উঠল সবার।

মুসলমান, হিন্দু, খ্রীষ্টানে সেদিন কোন ভেদাভেদ থাকলোনা। প্রতিবাদে ফেটে পড়ল সমগ্র বাংলাদেশ। ক্রমে সে প্রতিবাদ রুপ নেয় প্রতিরোধে পাকিস্তানী শাষকরা বাঙ্গালীদের দাবী না মেনে তাদের উপর লাঠিচার্জ করে, শত শত ছাত্রকে জেলে ভরে রাখে। এরপর ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী সালাম, রফিক, জব্বার সহ ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক সবাই নেমে পড়লো রাজপথে। উর্দুকে তারা কখনই বাংলাদেশের মাতৃভাষা হতে দেবেনা।

"মাতৃভাষা বাংলা চাই", স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠল বাংলার রাজপথ। পাকিস্তানী সৈন্যরা এই অবস্থা দেখে এলোপাথারী গুলি চালাতে লাগলো। রক্তে রন্জিত হয়ে উঠল রাজপথ। তবুও থামলো না বাংলার সিংহ হৃদয় ছেলেরা। পাকিস্তানী ঐ হায়নাদের কোন কথা তারা মানবেনা।

মাতৃভাষা বাংলার জন্য জন্য তারা আজ তাদের ছোট্ট কিন্তু দামী জীবনটা বিলিয়ে দেওয়ার জন্যই যেন পথে নেমেছে। একে একে রাস্তায় লাশ পড়তে লাগলো সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিকের। শুরু হলো ভাষার জন্য ভিন্ন এক অদম্য লড়াই। সেই শুরু। হতে পারে সেদিন শুধু রাস্তার পর রাস্তা জুড়ে বাঙ্গালীরই লাশ পড়ে ছিল।

কিন্তু সেইদিনেরই পথ অনুসরন করে ১৯৭১ সালে সালে শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। গেল হাজার হাজার সাধারন মানুষের প্রান, শত শত বাংলার মা বোনের সম্মান। অর্জন করলাম আমরা "বাংলাদেশ" নামে ছোট্ট একটা মাতৃভূমি। সেই ৫২' র ভাষা আন্দোলন আর ৭১' এর মুক্তিযুদ্ধের জন্যই আজ আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি, স্বাধীনভাবে চলতে ফিরতে পারছি। ওই দিনটার জন্যই আজ আমরা মানচিত্রের মধ্যে খুব ছোট হলেও একটা জায়গা দখল করতে পেরেছি।

আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারী এলে, শুধু বাংলাদেশই না বরং সারা বিশ্ব বাংলাদেশের সম্মানে দিনটি সম্মানের সাথে পালন করে। শুধুমাত্র ভাষার জন্য একটা র্দূদান্ত যুদ্ধ শুধু বিরলই না বরং একমাত্র, আমাদের এই মুক্তিযুদ্ধ। আজ সেই দিন। আজ আমার শহীদ মিনারে যাব, ফুল দেব, বাংলার গান গাবো। ২২ তারিখ আসবে, আমরা সব ভূলে যাব।

আমাদের ভূললে চলবেনা, এটা বিশ্ব এইডস দিবস না, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস না, যে শুধু একটা দিনই মনে রাখলে চলবে। এটা ভাষা আন্দোলন দিবস, এটা আমাদের মার্তৃভাষা দিবস যা বছরের ৩৬৫ টি দিনই আমাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। ৩৬৫ দিনই সেই সব ভাষা সৈনিকদের জন্য, যারা বাংলা মায়ের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেছিল, তাদের জন্য আমাদের হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত হবে, " আমি কি ভূলিতে পারি "।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।