পথ বাঁধতে চেয়েছিল বন্ধনহীন গ্রন্থি...
আজ আমার বেস্ট বান্ধবীর জন্মদিন ছিল...ইউনিভার্সিটিতে ক্যাচালের কারনে ক্লাস বন্ধ থাকায় ভাবলাম ওর বাসায় ঘুড়ে আসি...ওর ছোটখালামনিকে ফোন দিলাম, খালামনির পিচ্চি আস্থা পড়ে নালন্দায়, ঠিক হল যে ওর ছুটি হলে খালামনি আমাকে আড়ঙ্গের সামনে থেকে তুলে নিবে। যেহেতু খালামনির সাথে ডেট বারোটায় তাই উঠলাম ১০টার দিকে, উঠে গদাইলস্করী চালে নাস্তা খেয়ে পেপারটা হাতে নিতে গিয়ে মনে পড়ল যে গাজা/ফিলিস্তিনের সহিংসতা দেখতে চাইনা বলে পেপার পড়ার উপর নিজের দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রায় ভঙ্গই করে ফেলছিলাম... প্রতিদিন ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের লাশ দেখতে যে বুকের পাটা দরকার তা আমার নাই, এর চেয়ে মূর্খের মত সংবাদপত্র থেকে দূরেই থাকি নাহয় কিছুদিন...
গত কয়েকদিন ধরেই হঠাত হঠাত উদাস হয়ে যাচ্ছি...ব্যাপারটা খুবই বিরক্তিকর!... ভাইরে...আমি কবিও না সাহিত্যিকওনা...দুপুরে ডাইল[!] দিয়ে ভাত খেয়েছি, ডাইলে লবন ছিলনা, এই জাতীয় দিনলিপি লেখার মধ্যেই আমার লেখালেখি সীমিত, এই ধরনের ভাবের উদাসীনতা অন্তত আমাকে মানায় না...নিজের উপরে নিজেই চরম বিরক্ত হয়ে পিসি ছাড়লাম, দেখিযে একটা সিনেমা ডাউনলোড প্রায় শেষ, এই দেখে 'fight club' ডিএল দিলাম, সিনেমাটা ছিল আমার কাছে, কিন্তু আমি দেখার আগেই কে যেন মেরে দিয়েছিল...
ব্লগ আর ফেইসবুক চেকাতে চেকাতে সাড়ে এগারোটা বেজে যাওয়ায় তাড়াহুড়া করে যখন রেডী হচ্ছি তখন বাপ্পী[আমাদের cr] এর ফোন, হারামজাদা কয় কিনা মোটু ক্লাস দিসে আজ দুপুর দুইটায়...এই হইল আমাদের ডিপার্টমেন্টের ফাইজলামীর নমুনা, পুরা ইউনিভার্সিটিতে ক্যাচাল করে মানুষজন গুলিগোলা খাক, কিন্তু আমাদের কেলাস ছল্বেই......[আরেকবার এমন হয়েছিল, পুরা ইউনিভার্সিটিতে বিরাট গোলমাল, শুধু আমাদের ক্লাস চলছে, সেসময় এক মাস্তান গোছের কেউ ধরাম করে দরজা খুলে ক্লাসে ঢুকে স্যারকে বলেছিল, দাড়াও তুমার কেলাস নেওয়া আমি বাইর করতাছি, ঠ্যাং ভাইঙ্গা হাতে ধরায় দিবনে শালা!, বেচারা স্যার ভয়ে আমাদের ক্লাস ছুটি দিয়ে দিয়েছিল!] রেগে মেগে ভাবলাম ইল্লি নাকি...ক্লাস দিলেই করতে হবে? আমার কি সাধ আহ্লাদ বলে কিছু নাই...? ক্লাসে ডোন্ট কেয়ার ভাবের সাথে গুল্লি মেরে রওনা দিলাম আড়ং এর উদ্দেশ্যে, ছোটমনির সাথে গাড়িতে অতঃপ্র গন্তব্য উত্তরা ১, পুরাটা রাস্তা আস্থার সাথে বকবক করে কাটালাম...পিচ্চি জান্টুশটা আমাকে 'যাও পাখি বল তারে' আর 'কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে' এই দুইটা গান শুনালো...আমার পিসিতে স্যামসাং পিসি সুট নাইক্কা...নাহলে আপনাদেরকেও শুনাতাম...
তারপর প্রিয়াংকার বাসায় গেলাম, আদিবাও আসল, ঐখানে লাঞ্চ করলাম কেক কাটলাম, আস্থা আর প্রিয়াংকাকে মেহেন্দি দিয়ে দিলাম, তারপর খালামনির সাথে আবার বাসায় চলে আসলাম, হা বিতং করে আর বলতে ইচ্ছা করছেনা...আমার সো কল্ড উদাস হওয়াটা আবার আমাকে পেয়ে বসছে...গতকাল নেটে কোথায় যেন পড়েছিলাম যে 'গাজা'তে ইস্রায়েলী বদমাশেরা একটা স্কুলে বোমা মেরেছে, বাচ্চাগুলার কথা ভেবেই পেটের ভিতরে পাঁক দিয়ে উঠছিল, তারপরে হঠাত এক মৃত বাচ্চার ছবি দেখলাম, বিল্ডিঙ্গের টুকরা টাকরার ভিতরে পড়ে আছে, কি অবহেলায় এত আদরের, যত্নে গড়া ছোট্ট শরীরটা...ইশশিরে!...বাচ্চাটা এত্ত সুন্দর যে কান্না আটকানো যাচ্ছিলনা...আটকাতে চাইনি, জানি আমার এই বেহুদা কান্নায় এই বাচ্চা বা তার পরিবারের কোনই লাভ হবেনা...কিন্তু আমরা যারা এই এদের কথা ভেবে দুঃখ করছি, তাদের নিস্ফল আক্রোশ ঐ ইতর গুলার জন্য যারা এই হত্যাযজ্ঞের জন্য দায়ী তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাড়াবেই...
আমার মাথা এই গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক আউলা...কিচ্ছু ভাল্লাগছেনা...মারামারি, রক্তারক্তি, খুনাখুনি, এইসব আমার চরম অপছন্দ, আমার বন্ধুরা হাজার বলেও আমাকে 'স'
এর সবগুলা দেখাতে পারেনি, এই গাজা'ইয় হারামীগুলার কান্ডকীর্তি দেখে, এদের একেকজনকে
ডেকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করছে, এইযে ভাইসাহেব, এই স্কুলে যেখানে আপনারা বোমা মারলেন সেখানে কি বাচ্চারা পড়ে, নাকি জঙ্গীদের ট্রেইনিং দেয়া হয়...
ধুর! এইসব বলে আর কি হবে? কিস্যুই না...জাতিসঙ্ঘের কথাই শুনেনা কুকুরগুলা...আমি
কোন গাছের পেয়ারা যে আমার কথায় এরা বেইল দিবে?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।