আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোবাইল টিজিং : আমাদের ভেতরের আরেক অন্ধকার

রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্র

মাঝে মাঝে ভাবি, মোবাইল না থাকলে কী হতো। গভীর রাতে যাদের সাথে কথা বলি, তাদের সাথে আদৌ যোগাযোগ হতো কি? কী প্রয়োজন ছিলো কথোপকথন যন্ত্রের? মোবাইল কি মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়নি? নাকি কমেছে? চিঠি কী খারাপ ছিলো? এরচেয়ে বরং... ঘুম আসে না যখন জেগে থেকেই দুঃস্বপ্ন দেখি। মোবাইল টিজিং বর্তমানে এত বেড়েছে যে এর প্রতিরোধ জরুরী। না-কি এর প্রতিরোধ নেই? আছে। অবশ্যই আছে।

কেননা, বরাবরের মতো এর শিকার মেয়েরা। এর শিকার আমাদের বোনেরা। প্রিয়জন কিংবা তার মতোই দেখতে আরেকজন... আগের একটা ঘটনা বলি। এক বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়েছি। তখন ডিজিটাল ক্যামেরা সবার হাতে হাতে মুড়ি-মুড়কির আসেনি।

কিছু বখাটে ছেলে ক্যামেরা দিয়ে শিকার করতে চেষ্টা করছে। সেখানে আমার বোনও আছে। এগিয়ে গেলাম। বললাম, বাইরে গিয়ে ছবি তুলেন। এইখানে আপনাদের কাজ কী ? আমার প্রশ্নে তাদের চোয়াল হাঙরের মতো শক্ত হয়ে গেল।

কেউ তাদের কিছু বলবে এটা তারা গেজ করতে পারেনি। আমি আবারো বললাম, বাইরে দাঁড়ায় ছবি তুলো। এইখানে কীসের ছবি তুলতেছো? তারা বাইরে গেল এবং অন্য কিছু ছেলের সাথে শলা-পরামর্শ চালাতে লাগলো। এদিকে আমি রাগে কাঁপছি। ক্লাস সেভেনে পড়ি।

বয়সের চেয়ে শরীরের বাড় বেশি... রিসেন্টলি সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। পার্থক্য, এই ছেলে অতি কৌশলে মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলছে মেয়েদের। দূর থেকে। অনেকের মনে হতে পারে ? আমার এত কীসের মাথা ব্যথা ? ওরা যা-ইচ্ছা তাই করুক তাতে আমার কী?আমি থাকি আমার মতো। কাপুরুষ হয়ে।

লম্পট হয়ে। মেয়েদের ছবি তুলে ইন্টারনেটে ফ্ল্যাশ করি। ফোন নাম্বার কালেকশন করে ছড়িয়ে দেই বন্ধুদের হাতে হাতে। এটাও একটা বাণিজ্য। ডিজিটাল বাণিজ্য।

সারা বিশ্বজুড়ে চলছে পর্ণোগ্রাফির রমরমা ব্যবসা। হট এমএমএস, নগ্ন ছবি, সুপার ইম্পোজ - এইসব নগ্ন স্রোতে নিজেদের নিশ্চিহ্ন করছি আমরা। অথচ আমরা তো হায়েনাদের হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছিলাম সোনালি সূর্য। ৩৭ বছর পর বিজয় দিবসের দিনে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দূর থেকে ছবি তুলছে এক লম্পট বখাটে। এগিয়ে গেলাম।

কাছে ক্যামেরা মোবাইল না পাওয়ায় করতে পারলাম না কিছুই... এখন পড়ি ইন্টারমিডিয়েট... আমার সাথে তার পার্থক্যটা কোথায় ? আমিও কী কাপুরুষ নই?আমার কী করা উচিত ছিলো আর আমি কী করলাম! সামান্য ধমক দিয়ে ছেড়ে দেয়াটা কী এমন ইঁচড়ে পাকামো?অবশ্য সাথে মা ছিলো। করলে তিনি এগিয়ে যেতেন এবং ইন্টারফেয়ার করতেন। উল্টো আমি লজ্জা পেতাম। আমাকে থ্রেট করা হতো। এত কীসের ভয়? কীসের লজ্জা? অন্যায়ের কাছে কেন এত সব অনুতপ্ততা? ভালো লাগে না কিছুই।

প্রযুক্তির উল্টো ব্যবহার করে মেয়েদের কী ক্ষতিই না করছি আমরা... যু্বসমাজ!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.