ইংরেজীতে বলা হয় কালেক্টিভ ইন্টেলিজেন্স । একটি সংজ্ঞা দেয়ার চেষ্টা করি - ধরা যাক আপনার কাছে কিছু বিচ্ছিন উপাত্ত (ডাটা) আছে, সেগুলোর উপযোগিতা অনেক বেড়ে যাবে যখন আপনি সেসব থেকে শ্রেনীবদ্ধ তথ্যে (ইনফরমেশন) রুপান্তরিত করতে পারেন। এই তথ্যের মধ্যে বিভিন্ন সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে কোন কোন পরিস্থিতি পর্যালোচনা অথবা উপযোগী নতুন তথ্যের জন্ম দিতে পারে।
একটি সহজ উদাহরনে আসি। ধরা যাক একটি আদমশুমারী হল।
এতে প্রত্যেক মানুষের বয়স, পেশা, শিক্ষা সহ আরও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হল। প্রত্যেক মানুষের এই তথ্যই আলাদাভাবে বিচ্ছিন্ন, অর্থাৎ বলতে গেলে প্রায় কোন উপযোগিতা নেই। কিন্তু একটি এলাকার সব বিচ্ছিন তথ্য একত্র করে হয়ত কোন নতুন ইনফরমেশন পাওয়া যেতে পারে। যেমন, এলাকার শিক্ষার হার কত, গড় আয়ু, গড় আয় ইত্যাদি। এভাবে আমরা সেই এলাকার বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্হা সম্পর্কে একটি ধারনা পেতে পারি।
এরকম আরও কয়েক বছরের অনুরূপ তথ্য যোগাড় করে একটি তুলনামূলক চিত্রও পাওয়া যেতে পারে, সেটি আরও পরিপূর্ন ও আরও উপযোগী ইনফরমেশন। কারন এই তুলনামূলক চিত্র দিয়ে আমরা হয়ত সেই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি/অবনতির একটি ধারনা পাব। একই সাথে হয়ত সেই উন্নতি বা অবনতির সাথে পারিপার্শ্বিক উপাদানগুলোর ভূমিকাও বের করতে পারব, যেটি আরও উপযোগী। এখন এসব অতীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে যদি সেই এলাকার ভবিষ্যত উন্নতির পরিকল্পনা করা হয়, অথবা অন্য কোন এলাকায় উপস্হিত পারিপার্শ্বিক উপাদানগুলো বিবেচনা করে, কোন জানা এলাকার ফলাফরের সাথে তুলনা করে, সেই এলাকার উন্নতি/অবনতির ভবিষ্যতবাণী করার চেষ্টা করা হয়, তবে সেটি হবে সামষ্টিক বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ।
অনেক বড় উদাহরন হয়ে গেল!!! যাহোক আমার আলোচনার মূল বিষয় এটিই, কিন্তু ব্যাপ্তি ছোট।
সেটি হচ্ছে এরকম বিভিন্নভাবে সংগৃহীত জানা তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোন অজানার ফলাফল সম্পর্কে ধারনা করা।
ধরা যাক আপনি কিছু কেনার জন্য amazon.com ব্রাইজ করেছেন। যখন আপনি বিভিন্ন পন্য দেখতে থাকেন তখন খেয়াল করলে দেখবেন নিচেই কিছু পন্য দেখাচ্ছে যা খুবই সম্পর্কিত। কিছুক্ষণ ক্যামেরার জন্য ব্রাউজ করলে দেখবেন সেই পরামর্শ করা পন্যগুলো প্রায় কাছাকাছি মূল্যের এবং একই ধরনের ফিচার সম্বৃদ্ধ। তাহলে কি তারা সব পন্যের শ্রেনীভুক্ত করে? না, সবসময় না।
এক্ষেত্রে তারা যা করে তা হচ্ছে ইতিমধ্যে অন্যন্য ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং বা ক্রয়ের আচরনের সাথে আপনার আচরনের প্যাটার্ন তুলনা করে আপনার অদেখা, কিন্তু যে ধরনের পন্য খুঁজছেন, সেগুলো ধারনা করার চেষ্টা করা। তথ্য প্রযুক্তির ভাষায় রিকমেন্ডেশন সিস্টেম বা কোলাবোরেটিভ ফিল্টারিং। বেশ কয়েকটি পদ্ধতি (অ্যালগরিদম) রয়েছে এজন্য । কিন্তু এর মধ্যে কোনটিই এককভাবে সকল ক্ষেত্রে কার্যকর, তা প্রমাণিত হয়নি। ক্ষেত্র অনুযায়ী বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
এমনকি অনেক সময় দু'তিনটি এলগরিদম মিলিয়েও নতুন পদ্ধতি তৈরী করা হয় কাজের ক্ষেত্র বিবেচনা করে।
এসকল ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন কোন ওয়েবসাইটে কোন পন্যটি আপনার বেশী পছন্দ হয়েছে তা বিভিন্নভাবে নির্ধারন করা যেতে পারে -
১. যে পন্যের পাতায় আপনি একাধিকবার গিয়েছেন
২. যে পন্যের পাতায় আপনি বেশী সময় ধরে ছিলেন। এক্ষেত্রে সেই সাইটের পরের যেকোন পাতায় যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে পূর্ববর্তী পাতায় ছিলেন বলে ধরে নেয়া যেতে পারে। আবার কোন পন্যের পাতায় কম সময় থাকলে সিস্টেম সেটি আপনার অপছন্দের তালিকাতেও যোগ করতে পারে।
একইভাবে, একটি ব্লগের ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। কোন পোস্টে কেমন সময় কাটিয়েছেন, তার পাশাপাশি বিভিন্ন পোস্টে দেয়া রেটিং কিংবা মন্তব্যের প্রবনতা বিবেচনা করে একজনের পছন্দ-অপছন্দের বিষয় বা ব্লগার সম্পর্কে ধারনা করা যেতে পারে।
এ পর্বে ভুমিকা আর তথ্য সংগ্রহ পর্যন্তই থাকলো। পরবর্তী পর্বে তথ্যের মধ্যে তুলনা ও সম্পর্ক স্হাপন।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।