যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
আসন্ন বিপদ। ট্রিগারে। পা ছুঁয়ে অপেক্ষায়। কুঁজো শরীর। চোখের সামনে মুছে গেল ট্রাক।
দূরত্ব, দৃশ্য, খন্ড খন্ড। সব শব্দ নিশ্চুপ হয়ে গেল। অধীর অপেক্ষায় কেবল শোনার অপেক্ষায় গুলির আওয়াজ। আওয়াজের ঠিক প্রথম মুহূর্তটাতে জাগুয়ারের মত লাফিয়ে নামতে হবে ট্রাকে। একশ মিটার স্প্রিন্ট।
গুড স্টার্ট লিডস দ্যা ট্রাক। প্রথম মুর্হূতের জন্য নিশ্বাস পুঁজি করে নিতে হবে। পাঁচ সেকেন্ড নিশ্বাস নেবার মত সময় মিলবে না। পিছিয়ে পড়তে হবে। পুরো ১২ সেকেন্ডে দুবার নিশ্বাস নেয়া যাবে।
ইস্ট্রাক্টর গিবেনস এর দ্বিতীয় টিপস ছিল এটা। প্রথমটা হচ্ছে পিস্তলের আওয়াজ চেনা। প্রতি হান্ড্রেড মিটার স্প্রিন্টে একটা ফলস আওয়াজ হতে পারে আশেপাশে থেকে। সুতরাং আওয়াজকে চিনতে হবে।
এ সময়টাতে নিজেকে সংক্ষুব্ধ করি সব প্রতিবন্ধকতা দৌড়ে অতিক্রম করতে।
সম্মুখের দূরত্ব নিমিষে সহজ হয়ে ওঠে। বন্ধ দুচোখে আমি নিরবিচ্ছিন্ন একটা ট্রাক দেখি। আমার পায়ের নিচের কার্পেট আর লাইনের সীমারেখায় উশখুশ করতে থাকে বালুকনা। রানিং শুয়ের ভেতরে পুরু মোজা ভেদ করে আঙুলের সাথে বালুকনার সম্বন্ধ তৈরী হয়। গ্রাউন্ডের একটা নিজস্ব ভাষা আছে।
সেটা সঞ্চালিত হতে থাকে শরীরে। অদ্ভুত যোগাযোগে। যেদিন এমনটি ঘটে বুঝতে পারি ট্রাকটা আজ দখলে থাকবে। জানিয়ে দেয় গ্রহণের অধীর অপেক্ষায়। সর্বোচ্চ গতিঝড়ের কাছে সমর্পিত হতে সে আজকে আনন্দিত হবে।
কেবল মাত্র আওয়াজের অপেক্ষায়। কানের মধ্যে নীরব হয়ে গেছে জগতের আর সকল গুঞ্জন। বাতাস প্রবাহের ক্ষুদ্র ফিসফাসও শোনা যায় স্পষ্টতর। প্রতিটি শব্দের ব্যবচ্ছেদ করা যায় মুখগহবের উচ্চারণের বিধিমালা, বস্তুর উপরিভাগের ঘনিষ্ঠতা বা শ্রেণী হিসাবে। পিস্তলের প্রার্থীত আওয়াজের পরে রক্তের মধ্যে ঘন্টায় হাজার মাইল বেগে আলোড়ন তৈরী হবে।
পায়ের তল থেকে মস্তিস্কের সুক্ষ্ম শিরার মধ্যে মুহূর্তে রক্তকনিকাগুলো দুই চক্কর ঘুরে আসবে। অদলবদল হবে অবস্থান।
এখন কেবল পিস্তলের আওয়াজের অপেক্ষায়। একশ মিটার স্প্রিন্ট সত্যিই এক ভয়াবহ রেস।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।