আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিউট....সুইট....পুচ্চি গুলো....

*~*জীবনে যত কম প্রত্যাশা থাকবে ... .. . তত বেশী ভালো থাকা যাবে*~*

ছোট ভাইকে কোলে করে নিয়ে আছি,ঘুম পড়াচ্ছি কিংবা খাইয়ে দিচ্ছি এমন কোন স্মৃতি মনে নেই। কারণ,৩ জনের বয়সের ব্যবধান বেশী ছিলো না। মারামারি করে বড় হওয়া,স্কুল-কলেজে যাওয়া এমনিকি জবে জয়েন ও করলাম কাছাকাছি সময়ে। তাই আমাদের আফসোস ছিলো কোলে নেওয়ার মতন পুচ্চি ভাই-বোন ছিলো না বলে। আফসোস কমানোর জন্যই বোধহয় ক্লাশ টেনে পড়ার সময়৪টা কাজিনের(মামাতো,খালাতো,ফুফাতো,চাচাতো সব মিলিয়ে) জন্ম হলো একই বছরে।

কে,কতটা খুশী হয়েছে জানি না কিন্তু ওদের বাবা-মাদের বলে দিলাম পরের বছর যখন হোষ্টেল থেকে বাসায় ফিরে আসবো তখন সব পুচ্চি গুলোকে আমার কাছে পাঠাতে। যদি ও ওরা সর্ম্পকে কাজিন তবু ওদের কেন জানিনা বাবুন ডাকতে ভালো লাগতো। পুচ্চি গুলো ঢাকার বাইরে থাকতো বলে বছরে কয়েকবারের জন্য বাসায় আসতো। ওদের যতই আদর করি না কেন ওরা ততবেশী বেয়াদবি করতো তা-ও আমার সাথেই। বেশী রাগ লাগতো হাটুর সমান বয়সী পুচ্চি গুলো যখন তুই-তোকারি করে কথা বলতো।

পুচ্চিদের নিয়েই আজকের আবজাব লেখা.........। ~~~~নিশাত হলো মামাতো ভাই। ঘরের সবাইকে তুই-তোকারি করে কথা বলে। ওকে যদি বলি নিশাত তো মেয়েদের নাম। উল্টো বলে...."তোর নামটাও তো ছেলেদের নাম"।

কিছু দরকার পড়লে বলে--"এটা দে ,পানি দে ,খাবো"। বলতাম তুমি করে বললে দেব। তখন ঠিকই তুমি বলতো একটু পর দূরে গিয়ে বলতো "তুই,তুই,তুই,তুই"। গত বছর ওর বোনটা যখন হলো তখন হসপিটালে দুষ্টামি করলে ধমক দিলে ও লুকিয়ে থাকতো তা-ও গাইনি ওর্য়াডে রোগীদের বেডের নীচে। আশে-পাশের লোকজন দেখতো একটু পর পর আমি সবার বেডের নীচে কি জানি খুঁজছি।

মান ইজ্জ্বত আর কিছু থাকলো না। ~~~~যমজ-কাজিন হিসেবে দীপ,শিখার তুলনা নেই। সব কাজে একে-অন্যকে অনুকরণ করে। ওরা বাসায় বেড়াতে আসলে আমরা ৩ জন দৌড়ের উপর থাকতাম । থু থু ,খামচি,কামড় দেওয়া আর শয়তান বলে গালি দেওয়ার কাজ গুলো ওরা আনন্দের সাথে করতো।

শাসন করলে শিখা দীপকে বলতো----"ঐ,দীপ তুই একটারে ধর আর আমি আরেকটারে ধইর‌্যা মাইর দেই.....৩ শয়তানরে বেশী কইর‌্যা মাইর দেই...."। শিখা তুই বলার সাথে সাথে সবাইকে আপনি সম্বোধন করতো। এমন ও দেখা গেছে বাসায় পুরুষ গেস্ট আসলে ও সেখানে এভাবে কথা বলবে......"আপনার নাম কি,আপনার স্বামী কই, আপনি কই থাকেন"? পাগলীটাকে কে বুঝাবে পুরুষদের স্বামী থাকে না। ~~~~দেখতে পুচ্চিটা কিউট কিন্তু মনের দিক থেকে বুড়ো বাবুনটা হলো অনিরুদ্ধ। যদি ও বয়স কম,কথা বলে জ্ঞানী স্টাইলে ।

একই বিল্ডিং থাকি দেখা হলে কেমন আছে জানতে চাইলে মন ভালো না থাকলে হাত নেড়ে জবাব দেয়...."মন ভালো নেই,পরে কথা বলবো"। কেউ গান শুনতে চাইলে শ্রীকান্তের গান শোনায়। ওকে বলেছিলাম শ্রীকান্তের বৃষ্টি তোমাকে দিলাম গানটা শিখতে। অবাক করে দিয়ে ক'দিন আগে গানের কয়েকটা লাইন শুনিয়ে গেলো। ভাবলাম,এতো ছোট মানুষ না-ই-বা বুঝলো গানের কথা গুলো কিন্তু মনকে যে কতটা ছুঁয়ে গেলো ,সেটা নিজে বুঝি।

গানের জন্যই ওর সব দুষ্টুমি বলতে ভুলে গেলাম.....। ~~~~অয়ন যতটা কিউট ঠিক ততটাই টাউড( দুষ্টু )। আন্টি অফিসে চলে গেলে সারাদিন ঘরে বসে হিন্দি,বাংলা ছবি দেখতো। বাসায় গেলে কথা বলতো না কিন্তু ফোনে ঠিকই কটর-পটর করতো। যখনই ফোন করতো খালি ওর বড়ভাইয়ের নামে নালিশ করতো যার বেশীর ভাগ বিষয়বস্তু ছিলো বড়ভাই বনাম ভাইয়ের বান্ধবীদের ফোনালাপ।

একবার ফোন দিয়ে বললো...."দি, ভাইয়া আমাকে টাইটানিক ছবি দেখতে দেয়না। এটা নাকি ছোটদের ছবি না......ও দেখলে আমি কেন দেখবো না...ঈঁ,ঈঁ,ঈঁ,ঈঁ,...ঈঁ,ঈঁ,ঈঁ,ঈঁ"। সেবার অয়নকে রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি কিনে দিয়ে ওর বড়ভাই ওকে শান্ত করেছিলো। হাই স্কুলে উঠেই বাবা-মাকে বলে মোবাইল নিলো। আমাকে ৩ টা নাম্বার দিলো।

বললাম.... -"এতো গুলো সীম কেন? আমিই তো কবে থেকে ১ টা সীমই ব্যবহার করি " -"এ গুলো হলো ফ্যাশন,দি। তোমার সাথে কথা বলবো মাঝে মধ্যে রাগ করবে না তো" -"বাবুন,তুমি সব বলতে পারবে খালি সিনেমার গল্প আর বড়ভাইয়ের নালিশ বাদে"। বেচারা অনেক হতাশ হলো । কারণ, এতদিন এসব কথা আমাকেই বলতো। অয়নকে একটা কবিতা শোনাতাম আগে আমি ।

এখন ও আমাকে শোনায় .........। "দুষ্টের শিরোমনি তুমি লংকার রাজা, চুপিচুপি খাও তুমি চানাচুর ভাজা"। । আদরের কিউট,সুইট পুচ্চি গুলো কেন যে এত তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাচ্ছে। থাকুক না ছোট ওরা সব সময়.....।

বড় হয়ে গেলেই তো দুনিয়ার বাস্তবতার গ্যাঁড়াকলে পড়ে যাবে....। ভালো থাকুক .....ভালোবাসায় থাকুক........পুচ্চি গুলো ........। (অয়নকে কথা দিয়েছিলাম ওকে নিয়ে লিখবো। "অয়ন বাবুন,দি সব সময় ফাঁকি দেয় না। কথা যে রাখতে জানি এটা তার প্রমাণ"...........।

)


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।