(সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঐশী প্যানিক অবলম্বণে সমপূর্ণ কাল্পনিক গল্প। কেন ঐশীরা বিপথগামী হয় তার কারণ অনুসন্ধানের ক্ষুদ্র প্রয়াস)
অর্পিতা। দারুন একা। মা বাবার স্নেহ বঞ্চিত। সান্নিধ্য বঞ্চিত একটা মেয়ে।
ছোট বেলায় ঘুম থেকে ওঠেই দেখত বাবা মা বাসায় নেই। তার খেলার সাথী বলতে দারোয়ান রহমান চাচা,আর কজের বুয়া রহিমা। বাবা মাকে ছাড়া তার একা থাকতে ভাল লাগেনা। রহমান চাচা তাকে স্কুলে দিয়ে আসে। আর সব বন্ধুদের সঙ্গে তাদের আম্মু যায়।
ওদের কত মজা। সহপাঠিরা তাদের বাবা মার স্নেহের কথা বলে বেড়ায় । ওদের বাবা মা কত ভাল। আর অর্পিতার বাবা মা স্বর্থপর। তারা অফিস থেকে এসে পারে শুধু ঝগড়া করতে।
আর অর্পিতাকে শাসন করতে। অর্পিতার পড়ালেখা ছাড়া আর কোন দিকে তাদের মাখা ব্যথা নেই। পুতুলের বাবা তাকে প্রতি শুক্রবার বেড়াতে নিয়ে যায়। মৌমিতাকে ও। অর্পিতার বাবা পারে শুধু ঝগড়া করতে।
বাবা মার ঝগড়া দেখতে দেখতে অর্পিতা ক্লান্ত। বুয়াটাও তার সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করে। এর জন্যও বাবা মাই দায়ী। তারা বুয়াকে বকাঝকা করে। বুয়াও তাই অর্পিতাকে ঠিকমত খেতে দেয় না।
সুযোগ পেলেই চিমটি কাটে। কড়া গলায় কথা বলে। সেসব কিছুই সে বাবা মাকে বলে না। কারণ বুয়াই তার একমাত্র সঙ্গী। বাবা মা প্রায়ই এটা সেটা নিয়ে তর্ক করে।
এসব তর্কও যা ইচ্ছে টাইপের। অর্পিতা যাওয়ার কোন জায়গা পেলে সেখানে চলে যেত। এভাবেই অর্পিতার বেড়ে ওঠা ।
পাড়ার এক বখাটে তাকে উত্যক্ত করতে থাকে। সকাল বিকাল সন্ধ্যা তিন বেলা ।
ছেলেটা নেশা করে। সে একদিন অর্পিতাকে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। অর্পিতা অস্বীকার করে। যদিও একাকিত্বের যন্ত্রণা তাকে কুড়ে কুড়ে খায়। রনির দেয়া যন্ত্রণার শেষ নাই।
ক্রমাগত তার পিছু লেগেই থাকে।
অর্পিতার মা সমাজ কর্মী চাকুরী শেষে করে তার সামাজিক কর্মকান্ড নিয়ে ব্যস্ত। সেসব শেষ করে বাসায় ফিরে রাত দশটার পরে। বাবারও সেই একই অবস্থা। তারপর ঝগড়া।
বিয়ে ব্যাপারে তারা চরম হতাশ। এটিকে তারা উটকো ঝামেলা মনে করে। মনে করে স্বাধীনতাহীনতা। স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায়?ওয়েস্টার্ন লাইফই ভাল ব্লা ব্লা ব্লা। কথা বার্তা ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায়।
এক ছাঁদের নীচে থেকেও তারা আলাদা বাস করে। অর্পিতা জানে তার বাবার অনেক নাম ডাক। মার ও। সেসবের আড়ালে পরিবারে তারা শুধু ঝগড়াটে স্বামী ইস্ত্রী ছাড়া আর কিছু নয়। তার বাবা মা পরকালে বিশ্বাস করে না।
পরকালের শাস্তি তাদের ভাবনায় শুধুমাত্র মানুষকে ভোগবিলাসিতা করা থেকে বঞ্চিত করার হাতিয়ার।
মোদ্দাকথা স্রষ্টাপ্রদত্ত সকল নিয়মকানুন তারা কুসংস্কার ভাবে। তবে সঠিক জিনিসটি কি হবে তা তারা জানে না্ । মনে যা আসে তাই। মন চাওয়া জীবন।
পশু পাখির মত। তবে এটা বুঝে না পশুর জীবন থেকে সব শিক্ষা গ্রহণ যোগ্য নয়। আর কিছু জ্ঞানী দার্শনিক যারা স্রষ্টা মানেন না । যারা বোঝে প্রকৃতি তাদের অসম্পূর্ণ মতাদর্শ নিয়েই তাদের জীবন যাপন। এতে কমপক্ষে স্বাধীনতা আছে।
অর্পিতার বাবা মার চিন্তা ভাবণা মৃত্যুর পর আর এগোয় না। সে ব্যাপারে মহান দার্শনিকরা কিছু বলেন না। মৃত্যু মানে শেষ। এর আগে জীবনটা উপভোগ করা্ । তারা সময় কাটায় সময় গড়ে না।
দুনিয়ার আমলের প্রতিদান আখেরাতে। বিশ্বাস হয় না। বিয়ে ব্যবস্থাই তাদের অযৌক্তিক মনে হয়। কালেমা পড়ল মুসলমান হলো । অবশ্য বিয়ে ব্যবস্থাও তো তেমনই শুধু বিশ্বাস।
সমাজের দশজনের কাছে একজনের প্রস্তাব আরেকজন কবুল করে নিল ব্যাস। কয়েকজন স্বাক্ষী আর ইমাম সাহেব বিয়ে পড়িয়ে দিলেন হয়ে গেল। বিয়ে হয়ে গেল। এ মন্ত্র মেনে নেয়ার মাধ্যমে তারা একে অপরের শরীরীক সম্পর্কেরও বৈধতা পেল। সেটা বরঞ্চ একটা ভাল আমলে পরিণত হলো।
সঙ্গে এক গাদা দায়িত্ব। সন্তান উৎপাদন থেকে সব কিছু । সব কিছুর বিনিময়ে অনেক পূণ্যি হয়ে গেল। বিয়ের মন্ত্র না পড়লেই সব পাপ মহাপাপ। একে অপরকে দেখা পর্যন্ত পাপ!এসব চিন্তা নিয়ে দর্শন নিয়েই অর্পিতার বাবা মার হাহুতাশ।
তাছাড়া ভন্ডপীরদের কান্ডকীর্তি ,৭১ এ জামাতীদের কান্ডকীর্তি সব কিছু সব কিছু ধর্ম সম্পর্কে তাদের উন্নাসিকতার জন্ম দিয়েছে। ধর্ম আর অধর্মের দ্বন্দ্বে তারা ধর্মহীন।
অর্পিতার কাছে মা হলো এমন একজন মহীলা যে সারাক্ষণ দূরে থাকবে । বাসায় আসলে পড়াশুনার কথা জিজ্ঞাসা করবে শাসন করবে তারপর তার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে রাতে ঘুমোতে যাবে। অর্পিতা সকালে ঘুম থেকে ওঠে তাদের দেখবে না।
বাবাও তেমন। তার কাজ শুধু টাকা পয়সা জোগার করা। অর্পিতা জানে তার বাবার অনেক টাকা। বাবার কাছে টাকা পাওয়া যায়। তার সন্নিধ্য বা স্নেহ পাওয়া যায় না।
অর্পিতার মার নতুন বন্ধু জোটেছে তাকে নিয়েই পার্টিতে সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যাস্ত। তার বাবাও তেমনি। তারও আছে বন্ধু বান্ধবী আড্ডা । আর টাকা। টাকাই জীবনে সব বাকি সব মিথ্যে।
অর্পিতাকে নিয়ে ভাবার সময় নেই তাদের। ধর্মীয় অনুশাসন নেই। নেই কোন নীতি শিক্ষা। বাবা মার সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলা যাবে না। মার পায়ের নীচে জান্নাত।
জীবনে বড় হতে হলে মা বাবার আশীর্বাদ লাগে। তাদের অভিশাপে ধ্বংস। মা বাবাকে নেক নজরে একবার দেখলে হজ্জ্বের নেকি পাওয়া যায়। এসব সে জানে না। তার কাছে মা বাবা হলেন শুধু বিড়ম্বণা।
মানসিক নির্যাতন !স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ।
সহপাঠীরা বাবা মার সঙ্গে বেড়াতে যায় এক সঙ্গে ঘুরে খেলা করে। আর বিপরীতে অর্পিতার বাবা তাকে দিয়েছে একাকিত্ব আর বঞ্চণা। আর্থিক অভাব নয়। মানসিক দৈন্যতা।
সেই একদিন পথে রনিকে বলে সে তার সঙ্গে বেড়াতে যেতে চায়। রনিতো মহা খুশি। অর্পিতা আর রনি সোনারগায় লোকশিল্প যাদুঘরে বেড়াতে যায় তারপর মেঘনা নদীর তীরে। একটা চর এলাকায় । সেখানে নৌকা মাঝি ,পান কৌড়ি, মাছ ধরা দেখতে দেখতে সময় পেড়িয়ে যায়।
রনি চেইন স্মোকার । অর্পিতাকে সিগারেট সাধে সে খায় না। তবে রনি বেশ তৃপ্তি সহকারে তা টেনে চলছে। পারলে একটানে শেষ করে দেয়। রনি জোর করে অর্পিটার ঠোটে সিগারেট ভরে দেয়।
টান দিতে বলে। সিগারেট টেনে সে কাশতে থাকে। অর্পিতার সঙ্গে রনির অনেক কথা হয়। পৃথিবীতে কেউ কারো নয়। খাও দাও ফূর্তি করো ব্যস।
রনির মা নেই। মারা গেছেন। আর বাবা থেকেও নেই। রনির দিকে তাকানোরও সময় তার নেই। রনিও অবশ্য জীবনের প্রকৃত অর্থ খোঁজে পায় ;খাও দাও ফূর্তি করো সঙ্গে রূপসী থাকলে আর লাগে কি?কলেজ ফাকি দিয়ে অর্পিতার ঘুরতে বেশ ভাল লাগছে।
এভাবেই চলতে থাকে রনির আর অর্পিতার নতুণ উপলব্ধি। নতুন জীবন। যে জীবনে তাদের অজান্তেই আবর্জনা ঢুকে যায়। তারা সমাজের কীটে পরিণত হয়। একে একে গাজা হিরোইন কোন কিছু বাদ থাকেনা।
জীবনটা উপভূগের তারা তাই করে। ইয়াবাতেও আসক্ত হয়। তারা শারীরীক সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। এগুলোতে রনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। জোর করেই রনি অর্পিতাকে দৈহিক মিলনে বাধ্যকরে।
অর্পিতাও রনিকেই তার জীবনের একমাত্র পুরুষ হিসেবে মেনে নেয়। জীবনটা তাদের কাছে বিনদাস। উপভোগ কর। উপভোগ কর। আর উপভোগ কর।
যে যাত্রা শুরু হয় সোনাগায়ে সেটি চলতে থাকে ঢাকার নাম করা সব রেস্তোরা,পার্টি ,ক্লাব থিয়েটার কখনো বা রমনায়। নিষিদ্ধ অনিষিদ্ধ সবকিছুর বৃত্তে ঘুরতে থাকে তাদের অদৃষ্টের চাকা। রনির বন্ধুদের সঙ্গেও মেশার সুযোগ ঘটে অর্পিতার। রনির বন্ধুরা রনিকে দারুণ সমীহ করে। বন্ধুরা প্রায়ই বলে রনি ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন করতে পারে।
অর্পিতার রূপে সবাই মুগ্ধ হলেও তা মুখে বলার কেউ নেই। অর্পিতা জানে রনির বন্ধু মহল খুব খারাপ মদ নারী আর জুয়ায় সিদ্ধ হস্ত। নোংরা কথার এক্সপার্ট। অন্যদের কথায় তাই বুঝা যায়। অর্পিতার সিক্সথ সেন্স তাই বলে।
ওই দলে কিসলু বোধ হয় ব্যতিক্রম। সে খুব বন্ধু বৎসল বলে তাদের সঙ্গে থাকে। সারাদিন বন্ধুদের সিগারেটের ধোয়ার মধ্যে বাস । মদের আড্ডায় ও থাকে । মদের গন্ধ সিগারেটের গন্ধ নাক দিয়ে ঢুকে ফুসফুসে ঢুকে মুখে নিয়ে সে সেগুলো সেবন করেনা।
কিসলুর চোখে চোখ পরলেই অর্পিতা চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টা করে। কি যেন বলতে চায়। ও কি বলতে চায়। খুব সম্ভবত ও বলতে চায় অর্পিতা পালাও। এসব নোংরাদের কাছ থেকে সর।
সে আকুতি খুব দূর্বল। কিসলু একটি কথাই বলে দারুণ নোংরা কথা। যার দুইঠোটের মাঝখানের জিহবা খারাপ অনিয়ন্ত্রিত তার দুইপায়ের মাঝখানের লজ্জাস্থানও অনিয়ন্ত্রিত। নাহলে কেন কোর আনে এমনটি আসবে যে তোমারা আমার জন্য তোমাদের জিহবা ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করো তবে আমি তোমাদের জন্য বেহেশতের জিম্মাদর হব। ।
এ কথায় রনি নড়েচড়ে বসলেও অন্যরা মুখটিপে হাসে। অর্পিতা বুঝেনা কিছুই। রনির বন্ধুদের মুখ খুব খারাপ। ভদ্র বলতে রনি আর কিসলু।
কিসলু একদিন অর্পিতাকে একা পায়।
রনি সহ সবাই তাদের আনন্দ উপভূগের উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্ত। কিসলু অর্পিতাকে বলে রনির চরিত্র আর তার মুখ নিসৃত বানীর ক্ষমতা যার ভয় করে না এমন কোন বান্দা নেই। কিসলু অর্পিতাকে বলে রনির বহুগামিতার কথা। কিসলু তার পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য এতদিন তাদের সঙ্গে থেকেছে। সব না পেলেও কিছু অংশ পেয়েছে্ ।
আর দরকার নেই। অর্পিতাকে সে ওদের থেকে সরতে বলে । পালাতে বলে। কিসলু এটাও বলে অর্পিতার জন্য সে ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত আছে। সে এও বলে সে জানে রনির সঙ্গে থাকতে অর্পিতা আর পবিত্রটি নেই।
এটা ধ্রুবতারার মতই সত্য। তারপরও কিসলু তাকে নিয়ে নতুন জীবনের শুরু করতে চায়। তাকে বাঁচাতে চায়। আল্লাহ ক্ষমাশীল। অর্পিতা ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকায় কিসলুর দিকে।
কতটা লোভী কিসলু। টাকার লোভে রনিদের সঙ্গে থাকতে চেয়েছে আর এখন টাকা পেয়ে চম্পট দিতে চাচ্ছে। আবার অর্পিতাকেও চাচ্ছে। অর্পিতা তাকে সরাসরি রিফিউজ করে। কিসলুকে বলে দেয় তার মত লোভীদের সে জানে ।
রনি তাকে কিসলুর ব্যাপারে সব বলেছে। তার মেয়েঘটিত নোংরামীর কথা । বেশ কয়েকটা নামও বলে। তারা অর্পিতাকে বলেছে কিসলুর ব্যাপারে। কিসলু আর এগুয় না।
বলেনা যে তারা রনির মেয়ে বন্ধু। রনি তাদের অর্পিতার মত ব্যবহার করে। কিসলুর মুখে রহস্যজনক হাসি। সেই হাসিতেই দূর অজানায় মিলিয়ে যায় কিসলু। তার আর দেখা মেলে না।
অর্পিতা একটা কথা ভাবে সাহস আছে কিসলুর। সাহসের পিছনে থাকে সততা। কিসলুর শেষ কথা সামনে খুব খারাপী আছে তোমার। শুধু অন্ধকার। সব হারাবে।
উপভোগের উপকরণের জন্য দরকার শুধু টাকা। আর কিছুই নয়। মা বাবা পরিবার পরিজন সব স্বার্থপর। আপন হলো বন্ধু রনি আর ইয়াবা। বিবাহ শাদী মার্কা ভালবাসা হলো ব্যাক ডেটেড জঞ্জাল।
সন্তান জন্মদানের মত বিড়ম্বনা আর দুটি নেই। কেন যে খামাখা মানুষ এই সব করে। ইয়াবা আর রনি ছাড়া তার একদিনও চলবে না। বিয়ে মানে বাইন্ডিং। অর্পিতার দরকার স্বাধীনতা সীমাহীন।
তবে সমস্যা হলো টাকা পয়সা। অর্পিতার বাবা মা আর আগের মত টাকা দিতে চায় না । আসলে তারা অর্পিতার সুখ চায় না।
সারাজীবন কষ্ট দিয়েছে এখনও যে একটু সুখে থাকবে তাও তারা দিবে না।
অর্পিতা রাত করে বাড়ী ফেরে ।
রনির সঙ্গে বেসামাল অবস্থায় তার পদার্পন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। এলাকায় কানা ঘুষা চলে । অর্পিতার বাবা প্রচন্ড ক্ষেপে গিয়ে তাকে গৃহবন্দী করে। তার উপর কড়া অবরোধ জারি করে। ।
অর্পিতা মদের নেশায় উন্মাদ হয়ে যায়। ইয়াবা নাই রনি নাই বন্দি জীবন। নীরস নিথর বন্দীত্ব তাকে হিংস্র করে তোলে। বিরক্ত বাবা মা সম্পর্কে তার ধারণা স্বচ্ছ্ব কাচের মত পরিষ্কার । তারা অর্পিতাকে শান্তিতে বাচতে দিবে না।
তারা আসলে অর্পিতার জানের শত্রু। এমন মাছের মার দরকার কি জীবনে।
পথ অবশ্য একটা খোলা আছে। ঐশীর বাবা মাকে হত্যা করে সব টাকা ছিনিয়ে নেয়া । এ ব্যাপারে রনির সঙ্গে পরামর্শ করে ঐশী ।
বদমাশ দুটোকে হত্যা করে সব টাকা হাতিয়ে নিতে হবে। তারপর আর পায়কে। টাকার অভাব থাকবে না। ইচ্ছে মত এনজয় করতে পারবে। জীবনে টাকা সবচেয়ে গুরত্বপূর্ন টাকা হলে সব জোটে।
অর্পিতা রনিকে তার বাসায় নিয়ে আসে। রাতের বেলা তার বাবা মাকে খুন করে কার্যসিদ্ধি করতে হবে। দিনের বেলা দুটোকে পাওয়া যাবে না। রনি দুটো ধারালো দা জোগাড় করেছে। সেটি সযতনে বালিশের নিচে রেখে দেয়।
বাসায় বুয়াও নেই দেশের বাড়ি গেছে।
আজ সারদিন রনি আর অর্পিতা ফূর্তি করবে । তারপর রাতের বেলা আসল কাজটি করে ফেলবে। তারপর আর পায় কে?
কফির মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ফেলে অর্পিতা। বাবা মা দুজনে কফি খেয়ে ঘুমে ঢুলু ঢুলু।
ব্যাস এই সুযোগে রনি আর অর্পিতা মিলে তাদের দুজনকেই হত্যা করে । বাবা মায়ের রক্তে রঞ্জিত হয় তার হাত। তাতে কিছু যায় আসে না অর্পিতার । সে তার চলার পথের কাটা সরিয়েছে। আর তার দরকার টাকা সেটি সংগ্রহ করেছে।
টাকা পয়সা গহনা নিয়ে চম্পট দেয় অর্পিতা আর রনি।
তারা রনির খালার বাসায় ওঠে। সেখানে রনি সমস্ত টাকা পয়সা নিজের করায়ত্ত করে। সারারাত আমোদ ফূর্তি আর ইয়াবার পর ভোরে সূর্য ওঠার আগে অর্পিতাকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে রনি চলে যায় তার নাগালের বাইরে।
ঘুম থেকে ওঠে অর্পিতা আর রনিকে পায় না।
পায়না তার টাকা পয়সার হদিস। বেডের নিচে একখানি চিরকুট। তা পড়ে বেহুশ হয়ে যায় সে। তার এখন কেউ নেই কিছু নেই। সামনে সমূহ বিপদ।
পুলিশ আসবে আইনী ঝামেলা। সামান্য আশ্রয় নেই পালানোর জায়গা নেই। যে রনিকে তার এত ভরসা সে ভরসাও নেই।
রনির বাসার ঠিকানা অনুযায়ী সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে রনি নামের কেউ সেখানে থাকেনি। অর্পিতা মনক্ষুণ্ণ হয়।
রনির ব্যাপারে জানার চেষ্টা করলে তার নষ্টামী আর লাম্পট্যের খবর পায়। এদিক দিয়ে তার মা বাবা মারা যওয়ার খবর আসে। পত্রিকায় দারুণভাবেই তা ছেপেছে। রক্তাক্ত বাবা মার ছবি দেখে অর্পিতা। দুই দুইটি খুন।
আর সেই খুনের আসামী সে। মৃত বাবা মার চেহারা দেখে কেঁদে ওঠে। ছোট্ট বেলার স্মৃতিরা সব জড় হতে থাকে। মনে পরে কিসলুকে যে তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাকে সতর্ক করেছিল ।
অর্পিতা তার সঙ্গী হলে এমন পরিণতি হত না। আর চোখে ভাসে সেই রহস্যের হাসি।
রনি একটা বেইমান,প্রতারক, জঞ্জাল। তার নিষ্ঠুরতা সীমাহীন। রনির পরিচিত টিংকুর কাছে গিয়ে অর্পিতা তার অসহায়ত্তের কথা বলে।
সুযোগ সন্ধানী টিংকু অর্পিতাকে হাতের মুঠোয় পেয়ে মহাখুশি। সে তাকে যা খুশি তাই করতে পারবে। একটা রূপসী তন্বী তরুণীর ব্যবহার কত প্রকার ও কি কি তা করে তাকে শেষ যে ব্যবহারটি করবে তা হলো তাকে বাইরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাচার করে দেয়া। মানুষের কিডনী ,চোখ এগুলো অনেক দামী । তাছাড়া নরকংকাল ও।
অর্পিতাকে কোন প্রস্টিটিউশনে বিক্রি করে দেয়ার কথা ভাবলেও তা ঝুকিপূর্ণ মনে হয় টিংকুর কাছে। টিংকুর কাজ হবে ঝুকি মুক্ত। অর্পিতা বেঁচে থাকা মানেই একটা ঝুকি। এতদিন রনি বাধা ছিল এখন আর সেটি নেই। টিংকুর চোখে লোভী হাসি আর অর্পিতা চোখে অজানা অচেনা ভবিষ্যতের তীব্র আশংকা,নিরাপত্তাহীনতা আর সংশয়।
রনি তার জীবনে ছিল ঘুণপোকা। ঘুণপোকা কেটে ছিড়ে আজ তার এ অবস্থা করেছে।
চারিদিকে ঘুণ পোকা। ধর্মীয় কুসংস্কার ঘূণপোকা,ধর্মহীনতা ঘুণপোকা,নীতিহীনতা ঘুণপোকা,বিত্ত ঘুণপোকা,বিত্তহীনতা ঘুণপোকা ,মমতাহীনতা ঘুণপোকা,অজ্ঞানতা ঘুনপোকা ভালবাসা ঘুণপোকা। সব ঘুণপোকা কেবল ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।