আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভুতের মুখে রাম নাম



দেশের গুরুজনেরা মাদরাসার ছাত্রদের প্রতি খড়গহস্ত কেন! বিষয়টি অনেকেইরই বোধগম্য নয়। ঢাবিতে আটটি বিষয়ে মাদরাসার ছাত্রদের ভর্তি বন্ধের প্রেক্ষিতে বলছি। যারা মাদরাসা থেকে এসে ঢাবিতে ভর্তি হচ্ছে এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে চমৎকপ্রদ সাফল্য প্রদর্শন করছে ,এটা কি দেশের এসব মেধাবীর প্রতি অবজ্ঞা দেখানো নয়। গুরুজনেরা দাবি করছেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বাংলা ও ইংরেজীতে ৪০০ নম্বরের বদলে ২০০ নম্বরের পড়ে আছে। তাই তারা কলেজ পড়ুয়াদের থেকে অদক্ষ ও পিছিয়ে।

একজন ডীনকে বিবিসির সাক্ষাৎকারে এ কথা বলতে শুনেছি। তার এ বক্তব্য ভুতের মুখে রাম নামের মতই লাগল। কারণ, সবারই জানা কথা,এ ডীন তার আদুরীনি কন্যাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নুন্যতম যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে ভর্তি করেছিল। নিজ বিভাগে। পড়ে যদিও তাকে এজন্য অনেক তিরস্কার সহ্য করতে হয়।

কিন্তু তাতে তার কিছু যায় আসে না। কারণ, গ্রামের একটি প্রচলিত প্রবাদ বাক্য হচ্ছে এই যে, নির্লজ্জকে কচু দিলে মনে করে তাকে খেতে দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়ানোর এ পদক্ষেপ যখন আমাদের গরুজনেরা নিয়েছেন, তখন আপনারা অবশ্যই অবগত আছেন, দেশসেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বের আড়াইশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যায়গা করে নিতে পারেনি। শুধু তাই নয়, গবেষণার ক্ষেত্রে ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে। শিক্ষার এ মান অবনমনের জন্য তবে কারা দায়ী।

মাদরাসার ছাত্ররা! গুরুমশায়দের কথা শুনে তাই মনে হয়। কিন্তু গুরুমশায়রা ক্লাস না নিয়ে নোংড়া রাজনীতিতে ব্যাস্ত থাকেন তার দায়ভার কার কাধে চাপবে। এমনকি তারা ক্লাসে শিক্ষাথীদের নোংড়া রাজনীতির দীক্ষা দেন, এমন প্রমান একটু চেষ্টা করলে আপনি হাতের কাছে পেতে পারেন। সামান্য স্বার্থের জন্য শিক্ষার্থীদের রাজনীতির ময়দানে প্রতিদন্দি ছাত্রদের সাথে দন্দে যুদ্ধে নামিয়ে দেন। এসব কথা সবারই জানা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অবনমনের জন্য যে কারণগুলো সবচেয়ে বেশি দায়ী সেগুলোর খোজ নিয়েছেন কি(?) কখনো এসব শিক্ষকরা। নিবেন না এটাই স্বাভাবিক। কারণ,তাদের হাতে এত সময় কোথায়! হলগুলোতে গণরুমের নামে যে ছাত্রনীপিড়ন হচ্ছে, ছাত্রদের ক্লাস ফাকি দিয়ে রাজনৈতিক মিছিলে যেতে বাধ্য করছে। সন্ধ্যার পর ঘন্টার পর ঘন্টা গেস্টরুম নামের নির্যাতন সেলে দাড় করিয়ে রাখে। বা নীলখেতের দোকান গুলো সামান্য খুনসুটির দরুণ ভাঙ্গার দায়িত্ব কাদের উপড়,এতে হয়ত অবাক হওয়ার কিছু নেই।

কিন্তু বিদ্যাপীঠে কেন এসব চলবে। প্রতিটি হলে হাউজটিউটর নামের কিছু প্রাণি থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কেন তাদের কে হাউজটিউটর হিসেবে রেখেছেন এ দায়িত্বানুভূতি কাজ করে এমন একজন শিক্ষককে খুজে বের করতে আপনাকে দশটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে মাদরাসার ছাত্ররা কি রকম মেধার স্বাক্ষর রাখছে তা কেউ হল ডিবেটিং ক্লাবগুলোর অন্দরমহলে খোজ নিলে জানতে পারবেন। প্রতিটি হলে যারা ভাল বিতর্ক করে তারা অধিকাংশই মাদরাসা থেকে আগত।

কারণ বিভিন্ন কারণে তারা অদম্য পরিশ্রমি হয়ে ওঠে। যেসব বিভাগীয় প্রধানরা মাদরাসার ছাত্রদেরকে তাদের বিভাগে ভর্তির অযোগ্য ঘোষণা করছেন তাদেরকে ও বা এ ক্ষমতা দিয়েছেন কে! তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির ৯০ জনের একজন সদস্য মাত্র। কাজেই তারা কেনই বা এ অবৈধ গুরু দায়িত্ব নিতে গেলেন। যেখানে ইংলিশ মিডিয়াম থেকে একটি ছেলে এসে বাংলায় ভর্তি হতে পারে, সেখানে মাদরাসার ছাত্ররা কোন দোষে সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে ভর্তি হতে পারবে না। তারা বুয়েটে ভর্তি হতে পারবে, মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারবে, অথচ ঢাবি'র এ আটটি বিষয়ে তারা আচ্ছুৎ হল কেন! কাজেই সকল সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠে,মনের ভিতরে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প জমে আছে তা পরিষ্কার করে মাদরাসার ছাত্রদেরকে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে।

শিক্ষাকে ঘিরে এ বৈষম্য দেশের জন্য কোন সফল বয়ে আনবে না। বরং কিছু মেধা নষ্ট করে দেবে। দেশের সার্বভৌমত্ব যে খাদের কিনারে দাড়ানো তা আরেকটু ঝুকে পড়বে। এ অপরাজেয় বাংলা দেশের সকল শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন। কিন্তু কুচক্রিরা হয়ত অনেক শিক্ষার্থীদের মেধা কে শত্রভাবছে


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।