কোন আপডেট নেই।
প্রথম লেখায় কিছু বেসিক আর বিরক্তিকর ইতিহাস নিয়ে কথা বলেছি। এবার চেষ্টা করব আরো একটু গভীরে যাবার। তার পরও এডভান্স ইউজারদের কাছে এটাও পুরোনো লাগতে পারে ভেবে আগেই জানিয়ে রাখলাম।
কিছু বেসিক ডিভাইস এর সাথে পরিচয় হওয়া দরকার।
অবশ্যই ওয়াই-ফাই নিয়ে মাতব্বরি করতে আপনার প্রয়োজন হবে ওয়াই-ফাই এডাপটার বা কার্ড যেটিকে ওয়ারলেস ল্যান কার্ড ও বলা হয়। এই কার্ডগুলো আমার জানামতে চার ধরণের হয়।
(ক) পিসিআই কার্ড (আপনার পিসির পিসিআই স্লট এর জন্য)
(খ) ইউ এস বি ডংগেল (Wi-Fi USB Dongle)
(গ) ওয়াই-ফাই ডাটা কার্ড (ল্যাপটপের জন্য)
(ঘ) ল্যাপটপের বিল্ট-ইন কার্ড
ওয়াইফাই নিয়ে খেলতে চাইলে ইউ এস বি ডংগেল ইজ মাস্ট ... এটা ব্যবহার করে নানা জাতের জ্ঞিয়ানি ফাইজলামি করতে পারবেন।
এরপর আসি খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশে ...একসেস পয়েন্ট (এপি) এর কথায়। এটি আসলে আপনার জন্য অদৃশ্য এক তরঙ্গজাল সৃষ্টি করবে এর কার্যকরী সীমার মধ্যে।
একসেস পয়েন্ট অনেটা হাব/সুইচ এর মত কাজ করবে।
চিন্তা করুন... হাব বা সুইচ এ যেমন দৃশ্যমান তার মাধ্যম দিয়ে গণকযন্ত্র গুলো সংযুক্ত থাকে , এপি এর সাথে সংযোগুলো হয়ে থাকে অদৃশ্য বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে (তারছেড়া )। অবশ্য একসেস পয়েন্ট এর সাথে কয়েকটি আরজে৪৫ পোর্ট ও থাকে ওয়ারর্ড কানকেশন এর জন্য। একসেস পয়েন্টগুলোর মধ্যে বেশিরভাগেরই রাউটার ফিচার থাকে। তার মানে আপনি এটি ব্যবহার করে নেট শেয়ারিংও করতে পারবেন।
এপি আর ওয়াই-ফাই এডাপ্টার একই ব্রান্ডের হলে ভাল পারফরমেন্স পাওয়া যায়। তবে আপনার ল্যাপটপের বিল্ট ইন এর জন্য তো সেটা করা কঠিন হয়ে যাবে। তাই এপি টা ভাল কেনা উচিত।
তবে আমার সাজেশন হচ্ছে এমন ব্রান্ড আর মডেল সিলেক্ট করা উচিত যেটাতে ওপেন সোর্স লিনাক্স বেজড ফার্মওয়ার ফ্লাশ করা যায়। তাহলে আপনি ফাটা-ফাটি সব ফিচার পাবেন আপনার এপিতে।
যেমন ...এপির ট্রান্সমিশন পাওয়ার অনেকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারবেন, উদাহরণ হিসেবে আমার বাসায় ব্যবহার করা লিংকসিস ডব্লিউআরটি ৫৪ জিএস মডেলের এপির কথা বলা যায়। এর ডিফল্ট ট্রান্সমিশন পাওয়ার হচ্ছে ২৯ mW, আর ডিডি ডব্লিউ আরটি ব্যবহার করে আমি এটিকে 251mW পর্যন্ত করতে পারি। আরো বলা যায় চমৎকার পার ইউজার বেসড ডেটা রেট কন্ট্রোল এর কথা বা এই সস্তা রাউটার বেজড এম-আর-টিজির কথা। তবে এরও ভাল খারাপ দুই দিকই আছে। সেগুলো নিয়ে আরেক পর্বে অন্যদিন বলব।
আরো কিছু যন্ত্র আছে আরেকটু এডভান্স লেভেল এর জন্য। ওয়াই ফাই ডিটেক্টর ...এটি কোন লোকেশনে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক এর উপস্থিতি জানায়। ছোট ম্যাচ বাক্স সাইজের এই বস্তুটি বেশ কাজের। যদি অন্যের নেটওয়ার্কে তস্করি করতে চান... এটি সাইট সার্ভেতে বেশ কাজে দেবে।
আরেকটি কাজের বস্তু হচ্ছে রেন্জ এক্সটেন্ডর।
এটি ওয়াই-ফাই এর দুবলা সিগনাল এ পুষ্টিদান (এম্পলিফিকেশণ) এর মাধ্যমে কার্যকর সীমা বাড়িয়ে দেয়।
ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কগুলো কে তাদের (অ)কাজের উপর ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
(১)এডহক মোড (Ad-Hoc)
(২)ইনফ্রাস্ট্রাকচার মোড (Infrastructure)
এডহক মোড... অনেকটা আপনি যখন মোবাইল টু মোবাইল ব্লুটুথ দিয়ে ডেটা (!! ) ট্রান্সফার করেন সেরকম।
এক্ষেত্রে আপনাকে ডিভাইস গুলোতে এড হক মোড সিলেক্ট করতে হবে এবং প্রতিটা ডিভাইস শুধু মাএ তার এড হক পেয়ার এর সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। এই রকম ব্যবস্থায় আপনার কোন মধ্যবর্তী যোগাযোগ মাধ্যম (যেমন একসেস পয়েন্ট) এর উপর উপর নির্ভর করতে হবে না।
তবে সব থেকে বেশি ব্যবহার করা আর্কিটেকচার হচ্ছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার মোড।
এক্ষেত্রে ছবিটা আসলে আমাদের বেশ পরিচিত। ঠিক ওয়ারড নেটওয়ার্কের মতই যেখানে একটা হাবে বা সুইচে সব গণকযন্ত্র তাদের আনন্দ-দুঃখ্যের ডেটা গুলো প্রতিবেশির সাথে বিনিময় করতে আসে। ওয়াই-ফাই এ তারের বদলে থাকে বেতার তরঙ্গ আর হাব/সুইচের বদলে থাকে একসেস পয়েন্টটি যেটি বেতার তরঙ্গের বিনিময় নিয়ন্ত্রনের মোড়ল হয়ে থাকেন।
একসেস পয়েন্টটিকে দুভাবে কনফিগার করতে পারেন।
এক. ব্রিজ মোডে, দুই. বাউটার বা ন্যাট মোডে।
ব্রীজ মোডে কনফিগার করলে একসেস পয়েন্টটি আপনার আগের তার যুক্ত নেটওয়ার্কে তারহীন ব্যবস্থা ব্যবহার করা সিস্টেম গুলোর জন্য একটি প্রবেশ দ্বার হয়ে থাকবে। মানে... তারযুক্ত ও তারহীন সিস্টেমগুলো একই নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে থাকবে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় কোন সার্ভার বা রাউটার এর মাধ্যমে আপনার নেটওয়ার্কের ডেটাগুলো রাউট হয়ে বাইরে ঢাকা-চিটাগং হাইওয়ে ধরে কলাতলী সৈকত দিয়ে বঙ্গোপোসাগরে ডুব দেবে।
আর আপনার সস্তার একসেস পয়েন্ট কাম রাউটারটাই যদি সবেধন ডিজিটালমনি হয়ে থাকে তবে আপনাকে এটি রাউটার বা ন্যাট (নেটওয়ার্ক এড্রেস ট্রান্সলেশন) মোডে কনফিগার করতে হবে।
আমার মত আমজনতার জন্য ন্যাট (নোট... ন্যাটা না) মোডই পারফেক্ট। যার মাধ্যমে আপনার একসেস পয়েন্ট কেন্দ্রীক ওয়ারলেস বা ওয়ারড নেটওয়ার্কটি এপি ব্যবহার করে একটি মাএ আইপির মাধ্যমে অন্য নেটওয়ার্কের (হতে পারে সেটি আপনার আইএসপি) সাথে বাৎচিত করবে।
আজকের জন্য এটুকুই ...বহুত আজাইরা প্যাচাল পারলাম। এখন নিজের যুদ্ধের মহড়ায় (মানে পড়ার টেবিলে ) নামতে হবে।
সামনের শনিবার সকাল-দুপুর দুটো মিড ...মাফ ও দোয়া দুটোই চাই।
শুভ রাত্রি।
আর এর মধ্যে যারা প্রথম বারের মত তারছেড়া হতে চাইছেন তারা চমৎকার কিছু ছোট সাইজের ভিডিও দেখে আসুন :
Click This Link
আর যাদের ইতিমধ্যেই ল্যাপটপে বা ডেস্কটপ কম্পুতে তারছেড়া ডিভাইস আছে ...তারা আগ্রহী হলে তাদের বেতার প্রতিবেশীদের খুজতে পারেন এই সফটওয়ারটা দিয়ে :
http://www.netstumbler.com/downloads/
এটির শৈল্পিক দিকগুলো নিয়ে সামনে কথা বলব। আপাত নিরিহ এই বস্তুর হ্রদয় গলানো কিছু হিডেন ফিচার আছে।
ওয়াইম্যাক্স ও ব্লুটুথের কথা ওয়াই-ফাই এর পরে আসবে।
বিঃদ্রঃ এগুলা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান সম্বল করে লেখা।
ভুল থাকতেই পারে। আর এর বাইরেও রিলেটেড আরো কথা থাকতে পারে ...এবং আছে। সেগুলো কেউ শেয়ার করলে সবাই মনে হয় খুশি হব।
প্রথম পর্ব :
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।