বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
ভদ্রলোকের সাথে আমার পরিচয় আজ থেকে প্রায় ১০/১১ বছর হবে। উনাকে মালেক ভাই নামেই চিনি। আমার চেয়ে প্রায় ৫/৬ বছর বয়সে বড় হবেন। আমি একটি কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কিছু কোর্স করতাম।
মালেক ভাইও সেখানে কোর্স করেছেন তবে আমার আগে। ওখানেই উনার সাথে আমার পরিচয়। তবে ওনাকে ওখানে বেশীক্ষণ সময় বসে বসে ঘুমাতে দেখতাম।
উনি কোন চাকুরী করতেন না। হয়তবা চাকুরী পাননি।
উনার স্ত্রী চাকুরী করতেন। ভদ্রলোকের সারাদিন কোন কাজ ছিল না তাই ওখানে এসে সবার সাথে কথা বলতেন আর আড্ডা মারতেন। আবার দুপুরে খাবার টাইম হলে বাসায় গিয়ে আবার বিকেলে চলে আসতেন, থাকতেন প্রায় রাত অবধি।
এরপর প্রায় ২/১ বছরের মধ্যে আমি চাকুরীতে জয়েন করি। তাই ওখানটায় আর খুব একটা যাওয়া হতো না।
কিন্তু মাঝে মাঝে অফিস থেকে ফেরার পথে বা ছুটির দিন গুলোতে যেতাম। তখনও মালেক ভাইকে দেখতাম। মালেক ভাই ছিলেন নিঃসন্তান। উনি কখনও প্রকাশ করতেন না তার এই মনের কষ্টটা। তবে বুঝতাম।
অনেক চেষ্টা করেছেন একটা সন্তানের জন্য। অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন। একবার সন্তান ভুমিষ্টের একদম শেষ প্রান্তে এসে ভাবীর গর্ভের সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়।
এরমাঝে কয়েকবছর আগে তার এক পরিচিত আত্মীয় তার ফ্যাক্টরীতে তাকে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ এর পদে চাকুরী দেয়। ব্যাবসাটা ছিল টেক্সটাইল কালার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা।
সেটা মনে হয় সে ভালো ভাবেই করতে পেরেছে। এরপর অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সে গাজীপুরে একটা দোকান দেয় এই কালারের উপরে। ভালোই চলছিল মনে হয়। এর কিছুদিন পরে সে আমাদের এলাকায় একটা ফ্ল্যাট কিনলো।
আজকে অনেকদিন পরে মালেক ভাই এর সাথে দেখা হলো বাজারে।
কুশল জানলাম। জানলাম উনি গাড়ীও কিনেছেন। সেই গাড়ী নিয়েই ঈদে গ্রামের বাড়ী গিয়েছিলেন। আমার শুনে খুব ভালো লাগলো, মালেক ভায়ের কথা। উনি এখন সাবলম্বী একটা মানুষ।
১১ বছর আগের মালেক ভায়ের সাথে এখনকার মালেক ভায়ের অনেক পার্থক্য। যে মালেক ভাই তার স্থুলাকার দেহ নিয়ে দিশাহারা হয়ে কোন কাজ না থাকায় সারাদিন চেয়ারে বসে বসে ঘুমাতো সেই মালেক ভাই এখন একটা বড় ব্যাবসার মালিক। তবে তার আন্তরিকতা মনে হয় কমেনি। যদিও খুব অল্প সময় তার সাথে কথা বলতে পেরেছি।
খুব ভালো লাগে যখন কোন মানুষের ভালো কিছু শুনি।
এমন করে আমাদের সব মালেক ভাইরা যদি ভালো থাকতো তবে আরো ভালো হতো। সত্যিই আমাদের মালেক ভাই একজন দৃষ্টান্ত। নিজ চেষ্টায় সে তার ভাগ্যের উন্নতি করেছে। সাবাস মালেক ভাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।