বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
লালন ছিলেন উচ্চাঙ্গের সাধক।
তিনি জীবনভর জীবন ও জীবনযাপনের মানে খুঁজেছেন। যা মূলত জানা যায় না।
তারপরও যতটুকু উপলব্দি করেছেন- সে সব কথা আমাদের জন্য গানরুপে লিখে রেখেছেন। সমস্যা হল-আজ যারা সাধকের মূর্তি ভাঙ্গছে তারা গান শোনে না। তাদের নিষিদ্ধ বস্তুর তালিকায় সঙ্গীত একটি। অবশ্য গান আমরা শুনি। বুঝি।
গান, প্যারিসের লোকেও বোঝে।
কেন বললাম কথাটা?
ফরিদা পারভীন যখন প্যারিসে বসে লালনের গান করেন, শুনেছি, ওরা কাঁদে। (এবং ওদের কাঁদানো ভীষন জরুরি- ওরা একটা নিষ্ঠুর সাম্রাজ্যবাদী আবহে বেঁচে আছে বলে ...)
প্যারিসের লোকে লালনের গান শুনে কাঁদে-এভাবে লালন হয়ে উঠছেন পূর্বপশ্চিমের মধ্যে অনিবার্য এক সেতুবন্ধন। যেমন, তুরস্কের লেখক ওরহান পামুক।
সেদিন ফরিদা পারভীন জাপানের বড় একটা স্বীকৃতি পেলেন।
সে দিন পাকিস্থানী একটি সাইটে আমি লালন সম্বন্ধে একটি আবেহপ্রবন লেখা পড়লাম। পড়ে অভিভূত হলাম। ইংরেজি, ফরাসী-এমন কী মনিপুরী ভাষাও লালন অনূদিত হচ্ছে। কাজেই, আমাদের যেটুকু সম্মান তা লালন-বরীন্দ্রনাথের জন্যই। উগ্রপন্থিদের জন্য নিশ্চয় নয়।
উগ্রপন্থিদের জানিয়ে রাখি লালনের গুরু মোহাম্মদ। তবে আলে মোহাম্মদ।
এর কি মানে?
জগৎ সতত পরিবর্তনশীল বলেই বাউলরা কোনও ধ্রব সত্যে বিশ্বাস করে না। ( এই ধারনাটি বাউলেরা বৌদ্ধদর্শনের কাছে পেয়েছে। ) জগৎ সতত পরিবর্তনশীল বলেই কাউকে অন্ধভাবে অনুসরণ করা বাউলদের পক্ষে সম্ভব নয়।
সে মানুষটি যতই সুগন্ধী-ছড়ানো মানুষ হোক না কেন। জগৎ যে অর্থহীন নয় মোহাম্মদের জীবন তাই প্রমাণ করে। মোহাম্মদ পৃথিবীর বুকে একটা নজীর বা দৃষ্টান্ত। এর বেশি কিছু না। এখানেই জানিয়ে রাখি, মোহাম্মদকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ কিছু লেখেননি বলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাউদের মধ্যে রবি ঠাকুরের ওপর যথেষ্ট ক্রোধ ও অভিমান আছে।
উপরোন্ত লালন নিজেও তো নিরাকার আল্লায় অবিশ্বাসী নন। তাঁর একটি গানে পাই-
ধর্মকর্ম আপনার মন
করে ধর্ম সব মোমিন গন।
লালন বল কর ধর্ম
প্রাপ্তি হবে নিরঞ্জন। ।
এই নিরঞ্জনই আল্লা।
এই বর্ণহীন সত্ত্বার সরুপই জগতের যে কোনও সচেতন মানুষ বোঝার চেষ্টা করে। জীবনভর।
তখন বলছিলাম, লালন বিশিষ্ট সাধক। সাধক এই জন্য যে, তিনি জীবনভর জীবন ও জীবনযাপনের মানে খুঁজেছেন। যা মূলত জানা যায় না।
তারপরও যতটুকু উপলব্দি করেছেন- সে সব কথা গানরুপে লিখে রেখেছেন।
জীবনভর জীবন ও জীবনযাপনের মানে অনেকেই খোঁজেন। তবে এভাবে কজন লিখতে পারেন-
ভেবে অন্ত নাহি দেখি
কার বা খাঁচায় কে বা পাখি
আমি এই ভাবনা ভাবছি মিছে
আমার চমকজ্বরা বইছে গায়।
লালন এই জন্যই উচ্চাঙ্গের সাধক।
তাই বলছিলাম- সাধকের মূর্তি ভাঙ্গা ঠিক নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।