আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোন পথে যাবেন?

অনেক হাসি-কান্না মিথ্যা হতে পারে কিন্তু প্রতিটি দীর্ঘশ্বস'ই সত্য।
ইসলামের মুল ভিত্তি পাঁচটির একটি হলো হজ্জ। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যাক মুসলিম এই মহান ব্রত পালন করতে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। এবছর সরকারী ও বেসরকারী এজেন্সির মাধ্যমে ৬৫০০০ হাজার ধর্মপ্রান মুসলিম হজ্ব করতে যাবেন। উদ্দেশ্য মুসলিম হিসাবে পাঁচটি স্তম্ভের সবকটি পালন করে পূর্ণতা লাভ এবং পরকালের জন্য পুণ্য সঞ্চয়।

পুন্য কি গননা করা য়ায়? তাহলে হজ্বের জন্য কত নম্বর? আর কত নম্বর হলে পুর্নতা প্রাপ্তি হবে? এমনি অনেক প্রশ্ন নাড়া দেয় মনে যখন দেখি আমাদেরই প্রতিবেশী একজন লাখ-লাখ টাকা খরচ করে পুন্য কামাতে জান আর আরেকজনি ছিন্যবস্ত্র অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপন করে। ছোট বেলায় মিলাদ মহফিলে প্রায়ই যেতাম, একদিন এক মৌলবী বয়ান করছিলেন : " একদা এক আরব হজ্বে যাওয়ার সংকল্প করলেন। কিন্তু তার টাকা-পয়সার বড়ই অভাব। অনেক কষ্টে এক পয়সা দু পয়সা করে জমাতে থাকলেন অবশেষে হজ্বে যাওয়ার জন্য যতটুকু না হলেই নয় তা জোগাড় হলো। অবশেষে সেই দিন এল।

তিনি রওয়ানা করলেন হজ্বের জন্য মক্কার উদ্দেশ্যে। খুব বেশী দুর যাওয়া হয়নি, তিনি দেখলেন তারই একজন প্রতিবেশী রাস্তার ধারে পড়ে থাকা এক মৃত পশুর গোশত সংগ্রহ করছে। তিনি দ্রুত সেখানে গেলেন। প্রতিবেশীটি তাকে দেখে লুকানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে ধরা পড়ার মত অবস্থায় ল্জ্জায় মাথা নিচু করে রাখলেন। হজ্ব যাত্রী : আপনি এসব কি করছেন? আপনি জানেন না মৃত পশুর গোশত হারাম।

প্রতিবেশী : জানি, কিন্তু কি করব? গত দুই দিন যাবৎ আমার পরিবারে সবাই না খেয়ে আছে আর আমার কাছে খাবার কেনার মত কোন পয়সা নাই। আমি নিরুপাই হয়ে...... হজ্বযাত্রী দ্বিধায় পড়লেন কি করা উচিত? তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন হজ্বের জন্য পরে আবার চেষ্টা করা যাবে আপাতত এই প্রতিবেশীটির পাশে দাড়ান উচিত। তিনি হজ্বে না গিয়ে প্রতিবেশীকে নিয়ে বাড়ী ফিরে তার সংগৃহীত টাকা দিয়ে খাবার কিনে নিজে প্রতিবেশীর বাড়ী গেলেন এবং সবাই একসাথে আহার করলেন। সে দিন রাতে তিনি স্বপ্ন দেখলেন, তিনি কাবা প্রাঙ্গনে হজ্ব আদায় করছেন। সকালে তিনি স্থানীয় ইসলাম বেত্তার কাছে সেদিনের সব ঘটনা বললেন, জবাবে ঐ ইসলাম বেত্তা জনালেন আল্লাহ আপনার হজ্ব কবুল করেছেন।

" উপরের ঘটনাটির সত্যতা যাচায়ের কোন সুযোগ নাই বটে তবে বিশ্বাস যোগ্যতা যথেষ্টই আছে। কারন ঘটনাটি সর্বশক্তিমান ও পরম করুনাময় আল্লাহ্ র নির্দেশনা ও বৈশিষ্ট্যের সমর্থক। বছেরর পর বছর বৃহত্তর রংপুরের মঙ্গা পরিস্থিতিতে যে মানুষগুলো অনাহারে মরছে আমাদের হজ্ব যাত্রীরা কি তাদের নিয়ে একটু ভাববেন? রংপুরে নাই গেলেন আপনার মহল্লাতেও এরকম দুস্থ্য অনেক মানুষ আছে তাদের জন্য কি কিছু করা যায় না? কুড়িগ্রাম মঙ্গা গ্রস্থ্য একটি জেলা যার লোক সংখ্যা ১৭৮২২৭৭ জন। যদি মোট লোকসংখ্যার ৯০% ভাগ মঙ্গা পিড়ীত হয় তা হলে ১৬০৪০৪৯ জন মঙ্গাক্রান্ত। প্রতি পরিবারে ৪ জন সদস্য হলে মঙ্গাক্রান্ত পরিবার ৪০১০১২ টি।

মোট হজ্ব যাত্রী ৬৫০০০। জনপ্রতি খরচ গড়ে ২০৭৯৯৭(প্যাকেজ)+২৫০০০(ব্যাক্তিগত আনুসাঙ্গিক)=২৩২৯৯৭ টাকা। মোট খরচ ৬৫০০০ X ২৩২৯৯৭= ১৫১৪৪৮০৫০০০ টাকা। এই টাকা যদি আকান্ত পরিবার গুলোকে সাহায্য করা হয় তবে ১৫১৪৪৮০৫০০০ / ৪০১০১২ = ৩৭৭৬৭ টাকা পরিবার প্রতি। এই পরিমান অর্থ দিয়ে একটি দরিদ্র পরিবারকে উপার্জনক্ষম কিছু করে দেওয়া-সম্ভব, যেমন রিক্সা, ছোট্ট দোকান, গবাদি পশু ইত্যাদি।

আমার মনে হয় এতে করে হজ্ব করতে ইচ্ছুক রা যথেষ্ট পুন্য সঞ্চয় করতে পারবেন আর এই লাখো মানুষের দোয়া তাদের বেহেশত নিশ্চিত করতে পারবে। আল্লাহ সবজান্তা এবং সুক্ষ বিচারক। তা না হলে বরং ঐ সব অসহায় দুস্থ্য মানুষ গুলোর দীর্ঘশ্বাস আপনার হ্জ্ব পালনের পুন্যকে কুলষিত করার সম্ভনা আছে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।