'লিটল বুদ্ধা' মুভিটির নাম শুনেছিলাম ভালো সাউন্ড এবং এডিটিং এর কারনে। সামান্য কিছু অংশ দেখার সৌভাগ্যও হয়েছিল কিন্তু পুরোটা দেখতে পারিনি সময়াভাবে। ইচ্ছেটা সুপ্তাবস্থায় ছির, জাগ্রত হবার সাথে সাথেই টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করে নিলাম এবং দেখে ফেললাম। দারুন একটি মুভি!
পরিচালকের নামা বার্নার্দো বার্তোলুসি, নামটা আগে কোনদিন শুনিনি, ফিল্মোগ্রাফি পড়ে অন্য কোন মুভির নামও চিনলাম না। তবে সে যে একজন ভালো নির্মাতা তা বোঝার জন্য বোধহয় লিটল বুদ্ধা দেখলেই হয়।
আমেরিকান মুভি কিন্তু আমেরিকার ছাপ নেই, কোন বিখ্যাত কোম্পানি থেকেও বের হয়নি।
কাহিনীর শুরুটা ইন্টারেস্টিং। ভুটানে বসে একজন লামা যার নাম নরবু হঠাৎ করেই বহু প্রতিক্ষিত সংবাদটি পান। সেই চেলেটির খোজ পাওয়া গেছে, তবে তার অবস্থান সিয়াটলে। সুতরাং তিনি চললেন।
লামা নরবু তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তাদের গুরু লামা দরজের পুনর্জন্ম খুজে বেড়ান। তিনি এবং তার সতীর্থ ও শিষ্যরা বিশ্বাস করেন নয় বছর আগে মারা যাওয়া লামা দরজে পুনরায় জন্ম গ্রহন করেছেন সিয়াটলে জেসি কর্ণাডের দেহে। তাই তাকে খুজতে যান লামা নরবু এবং আরও কয়েকজন। জেসিকে তিনি একটি বই উপহার দেন যার নাম 'রিটল বুদ্ধা'।
এই বইটির মাধ্যমে পরিচালক একই সময় দুটো সময়কে তুলে ধরেেছন, একই সময় দুটো গল্প বলেছেন।
জেসি গল্প পড়ে আর পর্দায় আমরা বুদ্ধাকে দেখি - পরিচালক বুদ্ধার নির্বান লাভ পর্যন্ত তুলে ধরেছেন এই মুভিতে। লামা নারবু জেসিকে ভুটানে নিয়ে যেতে চান পরীক্ষা করার জন্য কিন্তু তার বাবা- মা দুজনেই বাধ সাধেন। পরে অবশ্য বাবা রাজী হন এবং জেসির সাথে কাঠমান্ডু যান।
মজাটা শুরু হয় জেসির মত আরও দুজন ক্যন্ডিডেট পাওয়ার পরে - একজন রাজু, সে সার্কাসে খেলা দেখাতো, অন্যজন গীতা, সে এক মেয়ে যে কিনা শৈশবই সংস্কৃতে কথা বলেছিল। সবাই-ই সমান উপযুক্ত, কেউ কম নয়।
তিনজনকেই সমান পরীক্ষা করা হয়, সকলেই পাশ করে। অবশেষে লামা নরবু তিনজনকেই লামা দরজের পুনর্জন্ম হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। দায়িত্ব পালন শেষ হয় , ধ্যানমগ্ন অবস্থায় লামা নরবু মৃত্যুবরন করেন।
১৯৯৩ সালের মুভি, পরিচালক সাধ্যমত এফেক্টস ব্যবহার করেছেন। তবে বুদ্ধের সময়ের সেটগুলোকে আধুনিক কালের মুভিগুলোর তুলনায় অনেক সেকেলে মনে হয়, অবশ্য বিশ্বাসযোগ্যতা কমে নি একটুও।
অতীত এবং বর্তমান সময়ের পার্থক্য বোঝা যায় ছবির কালারের মাধ্যমে। পরে জানলাম, দুধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছিল।
বুদ্ধা বা সিদ্ধার্থ চরিত্রে ম্যাট্রিক্স খ্যাত কিয়ানু রিভস অভিনয় করেছেন। আমার কাছে বড় অদ্বুত লেগেছে তাকে, প্রথমে চিনতেই পারিনি।
মিউজিক হিসেবে ভুটানের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
এটা অভিনন্দনযোগ্য। আমার ভালো লেগেছে, আপনাদেরও লাগবে আশা করি।
লেখাটি সিনেমাখোর গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।