ভাল মানুষ
অনেক ছোট বেলা থেকেই ভাবছি মাকে কিছু কিনে দেব। মা যখন আমাদের নিয়ে ঈদের মার্কেটে যেতেন তখন আমাদের সব কেনা হয়ে গেলে আমরা মাকে ধরতাম কিছু কেনার জন্য। স্বল্প আয়ের সংসারে খরচ বাচানোর জন্য কোনোদিনও কিছু কিনতেন না। বলতেন তোরা বড় হয়ে কিনে দিবি!
তখন থেকেই ভাবছিলাম কবে বড় হব ?মাকে কিছু কেনার জন্য বলব না । নিজেই কিনে দিব।
প্রায় ১৭ বছর পার হয়ে এখন আমি ভার্সিটিতে পড়ি।
স্কলারশিপের টাকায় ভালভাবেই দিন কাটাচ্ছি।
ঈদ সামনে আসতেই মনে পড়ে গেল সে দিন গুলোর কথা। নিজের কাছে যা ছিল আর কিছু ধার করে মায়ের জন্য শাড়ী কিনতে ছলে গেলাম ঢাকা থেকে নরসিংদী। শুনেছি সেখানে নাকি কম দামে ভাল শাড়ী পাওয়া যায়।
দোকানে গিয়ে সবচেয়ে ভাল শাড়ি টা কিনে নিলাম । মনে মনে মায়ের হাসি ভরা মুখ আর আমার কেনা রঙীন শাড়ি কল্পনা করে খুব পুলকিত হচ্ছিলাম।
অনেক উৎসাহ নিয়ে বাড়ি গেলাম । মাকে চমকে দিব বলে যেইনা শাড়ী বের করলাম মা আমার হাসতে হাসতে পাগল হলেন।
কিন্তু সে হাসিতে পাওয়া উপহারের জন্য কোনো উৎসাহ ছিলনা ।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
মা অবশেষে বললেন বাবা তুই কি পাগল হয়েছিস ?আমার কি আর এ রঙীন শাড়ী পরবার বয়স আছে?
আমার বুকের মধ্যে কে যেন সজোরে একটা আঘাত করল। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে দেখলাম তাই তো !মায়ের চেহারায় সে উজ্বলতা আর নেই। বয়সের ভারে ফিকে হয়ে গেছে সব।
মনের গহীনে কান্না র জোয়ার বইতে লাগল।
মার যখন সময় ছিল তখন সব বিসর্জন দিয়ে আমাদের বড় করলেন আর যখন আমরা বড় হলাম তখন তার বয়স আর নেই।
হায় মা জননী সারা জীবন দিয়েই গেলে কাউকে দেবার সুযোগ দিলে না!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।