আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লজিং মাস্টার- শেষ পর্ব

দ্যা ব্লগার অলসো.....

লজিং মাস্টার- ১ম পর্ব কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। এবং এই সমস্যা লইয়া ভাবিতে ভাবিতে বহু রাত আবুল বাশার নির্ঘুম পার করিয়া দিয়াছে। তবু কোন সুরাহা করিতে পারে নাই। তাহার মনে হইতেছে, এ সমস্যার হাল বের করা তাহার কম্ম নহে। মায়মুনা যখন জানিবে, যাহার কদমে সে তাহার মন সঁপিবার চিন্তা করিতেছে, সেই হতভাগার মনের মানুষ তাহার মা(!!!), তখন বেচারির কি অবস্থা হইবে, ইহা কল্পনা করাও তাহার জন্য ভীষন যন্ত্রণাদায়ক।

হ্যাঁ। সমস্যা ইহাই। আবুল বাশার তাহার ছাত্রী মায়মুনা বেগমের মাতা সাহেবানির প্রেমে মজিয়া একদম তরল অবস্থা! আর ওদিকে মায়মুনা তাহার শিক্ষকের প্রেমে দিওয়ানা! অবস্থা জিলাপির চাইতেও প্যাঁচালো!! মায়মুনার মা সখিনা বেগম দুই সন্তানের জননী। কিন্তু তাহাকে দেখে কেহই মানিতে চাহিবেনা সেই কথা। তাহার স্বামী দুবাইতে থাকেন: P বছরে দুই মাসের ছুটিতে বাড়িতে আসেন।

আবুল বাশার ভাবিয়া কুল পায়না, এতো সুন্দরী বউ রাখিয়া লোকটা কি করিয়া বিদেশে পড়িয়া থাকে? শেষে সিদ্ধান্তে পৌঁছে, এ কারনেই বেচারি শুদ্ধ(?) প্রেমের সন্ধানে পরপুরুষের দিকে হাত বাড়ায়। তবে এ জন্য তাহাকে মোটেও দোষ দিতে পারেনা আবুল বাশার সখিনা বেগমের বড়ো বড়ো চোখ দুটোর দিকে তাকাইলে আবুল বাশার আর নিজের মধ্যে থাকেনা। মায়মুনাকে পাঠদানের সময়টাতে সে অপেক্ষায় থাকে কখন সখিনা বেগম চা লইয়া উহার কক্ষে আসিবে। আর চা দেবার ছলে উহার হাতখানি স্পর্শ করিবে। ওই স্পর্শ আবুল বাশারের কাছে ইলেকট্রিক শকের মতো লাগে।

তাহার শরীর ঝিমঝিম করে। সে ভাবিয়া কুল পাইনা, ওই নারীকে যদি সে পূর্ণ রুপ পায়, তাহা হইলে....... অবশেষে একদিন আবুল বাশারের অপেক্ষার অবসান হইলো। তাহার কল্পনার ফানুস তাহার হাতে আসিয়া ধরা দিলো। সময়টা ছিলো মধ্যাহ্ন। বেলা দ্বিপ্রহর।

আবুল বাশার নিজ কক্ষে শুইয়া সখিনার কথা ভাবিতেছিলো। আচানক তাহাকে বিস্মিত করিয়া ঘরে প্রবেশ করে তাহার কল্পনা এবং মনের মানুষ। কোনকিছু বুঝিয়া উঠিবার আগেই সখিনা তাহার হাত দু'খানি ধরিয়া অনুনয়ের স্বরে বলিলো, ''চলো, আজই আমরা পলায়া যাবো!!'' আবুল বাশার তখন এই ধরাতে ছিলোনা। আচানক সখিনার কক্ষে প্রবেশ, কোন বাক্য বিনিময়ের আগেই কোমল স্পর্শ এবং সর্বোপরি পলায়নের প্রস্তাব: আবুল বাশারের চমকিত হইবার জন্য এর যে কোন একটিই যথেষ্ঠ ছিলো। সখিনার প্রস্তাবে রাজি না হবার কোন কারন দেখিলোনা সে।

একটিবারের জন্যও তাহার মনে হইলোনা; ইহা গুরুতর পাপ! সে তখন সখিনার সাথে ঘর বাঁধিবার স্বপ্নে বিভোর। ক্ষনিকের জন্য তাহার মনে হইলো; বউকে লইয়া থাকিবে কোথায়, খাইবে কি? তখনই তাহার চোখ পড়িলো সখিনার হস্তপানে। দেখিলো, বড়েসড়ো একটা ব্যাগ উহার হাতে ঝুলিতেছে। মনে মনে দারূন প্রসাদ অনুভব করিলো আবুল বাশার। দুবাইঅলার বউ, নিশ্চয়ই সোনা-দানা লইয়াই বাহির হইয়াছে।

ঘর হইতে বাহির হইবার আগ মূহুর্তে কেন জানি আবুল বাশারের মনের কোথাও মায়মুনা বেগমের জন্য হাহাকার করিয়া উঠিয়াছিলো। ***** বাস স্টেশানে দাঁড়িয়েছিলো আবুল বাশার এবং সখিনা। সখিনা বেগম ক্ষনিক পরেই ইতিউতি তাকাইতেছিলো। আবুল বাশার শুধাইতেই সে জানাইলো- একজন লোক আসবে উহাদের লইয়া যাইবার জন্য। আবুল বাশার সখিনা বেগমের বুদ্ধির তারিফ করিলো মনে মনে।

আগে ভাগেই সব ব্যবস্থা করিয়া রাখিয়াছে সখিনা। একটু পরেই সুদর্শন এক যুবা পুরুষ উহাদের নিকটে আসিলো। এবং ইহার পর যাহা ঘটিলো আবুল বাশার কোন অবস্থাতেই উহার জন্য প্রস্তুত ছিলোনা। সখিনা বেগম সেই যুবা পুরুষের বাহুর মধ্যে নিজেকে সঁপিয়া দিলো!!!! তাহাদের ভালোবাসাবাসি লোকজনের সামনেই মঞ্চস্থ হইতে লাগিলো। আবুল বাশারও দর্শকগনের একজন হইয়া ফ্যাল ফ্যাল করিয়া তাকাইয়া ছিলো।

তাহার পর সখিনা বেগম বলিলো- ''শুনো, অর নাম মাহফুজ। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। মাহফুজ আমারে নিতে আইছে। আমার বাড়ি পর্যন্ত যাইবার সুযোগ অর আছিলেনা, তাই তোমার সাহায্য নিতে অইলো। এই টাকা গুলো নেও, আর তোমার গ্রামে ফিইরা যাও।

'' আবুল বাশারের কানে কথাগুলো প্রবেশ করিলো কিনা বোঝা গেলোনা। সে টাকাগুলো হাতে লইয়া উহাদের গমনপথের দিকে তাকিয়া রহিলো। *******

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।