দ্যা ব্লগার অলসো.....
পায়ে সুড়সুড়ি জনিত অনুভূতির উপক্রম হইতেই আবুল বাশার কেমন যেন অস্বস্তি বোধ করিল। আবার শুরু হইলো! বিগত কয়েকদিন যাবত এই উপদ্রবটা শুরু হইয়াছে। আগে কেবল চোরা চোখে চাহনির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। কিন্তু এখন এই নয়া কৌশল..।
আবুল বাশার উপেক্ষা করিবার সিদ্ধান্ত লইলো।
গলা খাঁকাড়ি দিলো, তারপর গুরুগম্ভীর স্বরে বলিলো-''মায়মুনা বেগম, তোমারে ইতিহাসের যে পাঠ দিছিলাম, সেইটা কি পড়িয়াছো?''
''জ্বি, সার, পড়ছি। ''
''উত্তম; এখন মুখস্থ বলো। ''
মায়মুনা বেগম একটু সময় নিলো, তারপর গড়গড় করিয়া বলিয়া যাইতে লাগিলো ''শুধু মাত্র নিজের ভালোবাসাকে অমর করিয়া রাখিবার জন্য সম্রাট শাহাজাহান তাজমহল গড়েন। দেবদাস পার্বতীর প্রেমে পাগল প্রায় হইয়া তিলে তিলে নিজেকে শেষ করে দেন। চন্ডীদাস....''
''মোছাম্মৎ মায়মুনা!!''
আবুল বাশার গুরুগম্ভীর স্বরে মায়মুনাকে থামিয়া দিলো।
তাহার স্পষ্ট মনে আছে, তাহার ছাত্রীর গতকল্যর পাঠ্যতালিকায় এই পাঠ ছিলোনা। এই বালিকা পরিকল্পনা মোতাবেক এই পাঠ পড়িয়া যাইতেছে।
''জি সার?'' যেন কিছুই হইনাই এমন স্বরে মায়মুনা তাহার শিক্ষকের পানে তাকাইলো।
''আজকে আমি খুব একটা ভালো বোধ করিতেছিনা, তুমি আজ প্রস্থান করো। ''
ইহার পর মায়মুনা বেগম এমন একটা কান্ড করিলো, যাহার জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিলোনা আবুল বাশার।
ত্বড়িৎ গতিতে তাহার হাতখানা আবুল বাশারের কপালে ঠেকাইয়া কোমল গলার শুধাইলো, ''খুব খারাপ লাগতাছে সার? গায়ে জ্বর?''
''আস্তাগফিরুল্লাহ!!!'' বলিয়া একরকম চমকি উঠিয়া নিজেকে সরাইয়া নিলো আবুল বাশার। তারপর বিষ দৃষ্টিতে মায়মুনার দিকে চাহিয়া বলিলো,'' তোমার কি লাজ-লজ্জা বলিতে কিছুই নাই?''
'' জে না, কারন সব লজ্জা আপনি একাই পাইতেছেন সার!'' বলিয়া গটমট করিয়া প্রস্থান করিলো মায়মুনা।
আবুল বাশার তাহার গমন পথের দিকে চাহিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলিলো। ভাবিলো; এই নাদান বালিকাকে কে বোঝাইবে, আবুল বাশার তাহার এই প্রেম কিছুতেই গ্রহন করিতে পারেনা। কারন, তাহার মন অনেক আগেই বান্ধা পড়িয়া আছে আর এক জায়গায়।
উহার কথা মনে পড়িতেই আনমনা হইয়া গেলো আবুল বাশার। ওই নারী তাহার ফ্যাকাসে জীবনে রঙের বান বইয়ে দিয়াছে। তাহার চাহনি, কপট রাগ, কোমল অভিমান এবং সর্বোপরি তাহার........!
ওই নারী জানে কি করিয়া ভালোবাসিতে হয়। আবুল বাশার পূর্বে কখনোই এরুপ মমতার জালে জড়াইবার কথা চিন্তাও করেনাই। কিন্তু এই জালের কথা আলাদা।
ইহা জাটকা জালের চাইতেও অধিক শক্তিশালী। বড়ো বড়ো মহাপুরুষ ইহার ফাঁক গলিয়া বাহির হইতে পারেন নাই। আবুল বাশার তো কোন ছাড়!!
আগামী পর্বে সমাপ্য..
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।