যন্ত্রের ঠাপে আহত ভারাক্রান্ত অসুস্থ হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ।
তার মুখেঠোঁটেহাতেতালুতে দেখা যাচ্ছে কালো কালো দাগ। আর তথাকথিতেরা চাউর করে যাচ্ছেন যন্ত্রপ্রযুক্তির নানা কেচ্ছাকাহিনি।
যন্ত্রই এখন বোকা বাঙালির একমাত্র গন্তব্য। একমাত্র স্বপ্ন।
পূর্বে যে ছেলেটি বা মেয়েটি রাতে কিংবা দুপুরে শোবার সময় বুকে বই জড়িয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পড়তো , সে এখন যন্ত্রে ফোনাফুনি করতে করতে অস্থির হয়ে পড়ে । অস্থির হতে হতে কান্ত। কান্ত হতে হতে আবার অস্থির।
এখনকার শিশু-কিশোরোরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যতটা না দেখে বইয়ের স্বপ্ন ; তার চেয়ে বেশিন ডুবে থাকে যন্ত্রের স্বপ্নে। যান্ত্রিক ক্ষমতায়নের অপক্ষায়! বাবা-মার কাছ থেকে ফোনাফুনির একটা যন্ত্র অধিকার করাই এখন তাদের অন্যতম গন্তব্য!
বিশ্বায়নপ্রযুক্তিউন্নয়ন বলে বলে বুদ্ধিজীবিরা পাগল হচ্ছেন।
উন্নয়ন কর্মীরা দিকে দিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন উন্নয়নের বীর্য। মোবাইল কোম্পানিগুলো সেবা দিতে দিতে শব্দময় করে তুলছেন গোটা বাংলাদেশকে।
মোবাইল অপারেটরদের দানে সেবায় গ্রামের আলুপটল ব্যবসায়ী রহিম-করিম-কুদ্দুসেরা পাকা ব্যবসায়ী হয়ে উঠছেন! গামীন ফোনের কল্যানে আমাদের মায়েরা তো সব কুড়েঘর ভেঙে দালান গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন!
আমাদের দিন বদলে ফেলছেন মহামান্যরা। আর কিছু নয় ; কেবল আমাদের কথাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তাদের যত
হা-হুতাশ। বাঙালির কথা বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিজেদের ব্যবসার তি হলেও তারা দিচ্ছেন লোভনীয় নানা প্রস্তাব।
বাঙালির কথা বেঁচে থাকুক । ইহা ইশ্বরের বানীর চেয়েও হয়ত তাৎপর্যপূর্ন।
আর তাই বাঙালিকে কথা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। যন্ত্র কিনতে হবে। যন্ত্রের স্বপ্ন দেখতে হবে।
ভোক্তা হতে হবে। যন্ত্রকেই করে তুলতে হবে দিন বদলের হাতিয়ার।
বনিকেরা বাঙালির দিন বদলের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
দিন বদলও হচ্ছে । সবোচ্চ বিদ্যালয়ে পড়া বন্ধু তার বান্ধবীর নগ্ন ভিডিও তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছে মুঠোফোনে মুঠোফোনে।
আমরা বাঙালিরা এখন যন্ত্রে ভালোবাসি বলছি। যন্ত্রে সক্সমম করছি। যন্ত্রে প্রেমিকাকে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ করছি।
যন্ত্র বাংলাদেশ জুড়ে পালে পালে জন্ম দিচ্ছি একটি মেধাহীন অসুস্থ অস্থির প্রজন্ম। যে প্রজন্মটি সবচেয়ে ভালো জানে মিথ্যা বলতে।
সবচেয়ে ভালো জানে কথা বাচিঁয়ে রাখতে।
যন্ত্র আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে বিচ্ছিন্নতর দেয়াল। আমরা এখন আর স্বজসমুখো হই না। ফোনাফুনি করে জেনে নিই
আত্নীয়স্বজনের হালহকিকত। আমার সবাই বড় একা হয়ে যাচ্ছি।
অথচ কউ বুঝছি না যে আমরা একা হয়ে পড়ছি । ক্রমাগত নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।
এখন যন্ত্র দানবের যুগ। এখন কেবল যন্ত্র বেঁচে থাকবে। যন্ত্র বেঁচে থাকুক।
মানুষ মরে যাক। মানুষ মরে গিয়ে হয়ে উঠুক এক একটা যন্ত্র চালিত রোবট। সামজিক সম্পর্ক ছিড়ে যাক। মানুষ পরস্পরকে বিশ্বাস করা ভুলে যাক। অবিশ্বাস-ই হয়ে উঠুক বাঙালির একমাত্র ধর্ম।
আমাদের বর্তমান প্রজন্ম; আমাদের স্বপ্ন সম্ভাবনার সব এলাকা অন্ধ হয়ে যাক।
(লেখাটা পুনরায় পোষ্ট করলাম; একটা সুন্দর ছবি সমেত। আর অনেক পাঠকেরই লেখাটা পড়া প্রয়োজন!
তাই; কারো বিরক্তি উৎপাদন করলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন!)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।