এর আগে "অর্থনীতির সহজ পাঠঃ বিষয়- বিদেশি বিনিয়োগ" শীর্ষক পোস্টে ( Click This Link) লিখেছিলাম-
"মুক্ত বাজার অর্থনীতি দ্বারা প্রচারিত দৃষ্টিভঙ্গীঃ তথাকথিত উদার অর্থনীতির দেশসমূহের শাসন ব্যবস্থা ‘পাঁচটি সত্য’ এর নির্ভর করে বিদেশী বিনিয়োগের সন্ধান করেঃ
১। বিদেশী বিনিয়োগ তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
২। বিদেশী বিনিয়োগ ছাড়া প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।
৩।
বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে- উচ্চতর মানের দক্ষ ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি এবং বিশ্ব বাজারে প্রবেশাধিকার অর্জিত হয়।
৪। কেউ তৃতীয় বিশ্বকে বিনিয়োগের জন্য বাধ্য করছে না- তৃতীয় বিশ্বই নিজের প্রয়োজনে এই বিনিয়োগের জন্য আবেদন-নিবেদন করে।
৫। প্রাইভেট সেক্টর হচ্ছে- উন্নতি ও প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন স্বরূপ।
তৃতীয় বিশ্বের অর্থনৈতিক-সাহিত্যের এবং সরকার নীতির ৯০% এরও বেশি এই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পরিচালিত"।
বাংলাদেশও এই দৃষ্টিভঙ্গীর বাইরে নয়। এখানকার সরকারগুলো, বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদেরা, সমস্ত মিডিয়াই বিদেশী বিনিয়োগকে খুব গুরুত্বের চোখে দেখে, বিদেশের টাকা কোন সরকার কতখানি দেশের অর্থনীতিতে লাগাতে পারলো সেটা দিয়েই সেই সরকারের কৃতিত্ব নির্ধারিত হয়। একইভাবে রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে একের পর এক বেসরকারীকরণ করাটাও এখানে সরকারের জন্য বিশেষ গর্বের। গত পোস্টে জানিয়েছিলাম, পাশ্চাত্যের কর্পোরেশনগুলো যখন প্রোফিটেবিলিটির ক্রাইসিসে ভোগে- তখন তারা মরিয়া হয়ে যায় এই ক্রাইসিস থেকে বের হওয়ার জন্য- পুঁজি নিয়ে বেরিয়ে যায় অন্য দেশে, বিশেষত তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহে যেখানে শ্রমমূল্য খুবই কম।
আর, একাজে পাশ্চাত্য সরকারসমূহকে মোটামুটি তিনটি পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়ঃ
১। তৃতীয় বিশ্বকে (প্রাচ্যে ও দক্ষিণের দেশসমূহকে) তাদের বাণিজ্যকে উদার বা মুক্ত করতে বাধ্য করে; এটা করা হয় পাশ্চাত্যের করপোরেশনগুলোর জন্য বাজার তৈরি করার উদ্দেশ্যে। (WTO এর প্রধান ভূমিকা)।
২। ক্যাপিটাল-ফ্লো’কে অবাধ করতে তৃতীয় বিশ্বকে বাধ্য করে, এটা করা হয়- করপোরেশনগুলোর বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করার ও একইসাথে সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ার উদ্দেশ্যে।
(IMF ও World Bank এর প্রধান ভূমিকা; বিনিয়োগ ও প্রতিযোগিতা কেন্দ্রিক বিষয় দেখে WTO)।
৩। তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের পাবলিক সেক্টরগুলোকে (যেমন- পানি, বিদ্যুত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এনার্জি প্রভৃতি এবং সরকারি প্রোকিরমেন্ট) প্রাইভেটাইজ করতে ও মুক্ত করতে বাধ্য করে। (WTO এর পক্ষ থেকে GAT এর প্রধান ভূমিকা)।
এই বাধ্যবাধকতা আমাদের বাংলাদেশেও বিদ্যমান।
বরং অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এখানকার সরকারগুলো এক কাঠি সরেস। রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাল্লা দিয়ে ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে, দেয়া হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে গঠিত হয় প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড এবং ২০০০ সালে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন। সেই ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৭৪ টি রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান প্রাইভেটাইজ করা হয়েছে, যার ৫৪ টি সরাসরি টেণ্ডারে বিক্রয় হয়েছে এবং বাকি ২০টি হয়েছে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে। এবারে এক নজরে প্রতিষ্ঠান গুলোর নাম দেখা যাকঃ
ক)টেণ্ডারের মাধ্যমে প্রাইভেটাইজ করা এন্টারপ্রাইজসমূহঃ
১।
মাদারিপুর টেক্সটাইল মিলস, মাদারিপুর
২। শারমিন টেক্সটাইল মিলস লিঃ, ঢাকা
৩। কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিলস, কিশোরগঞ্জ
৪। জোফাইন ফেব্রিকস লিঃ, ঢাকা
৫। বরিশাল টেক্সটাইল মিলস, বরিশাল
৬।
কোহিনুর স্পিনিং মিলস, ঢাকা
৭। বাংলাদেশ সাইকেল ইণ্ডাস্ট্রিজ, ঢাকা
৮। পুর্বাচল জুট ইণ্ডাস্ট্রিজ, যশোর
৯। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ, মুন্সিগঞ্জ
১০। রয়েল টেক্সটাইল, বান্দরবন
১১।
আই.কে ইণ্ডাস্ট্রিজ, চট্টগ্রাম
১২। ফিরোজ আটা ডাল মিলস, খুলনা
১৩। জাতীয় বরজ ফ্যাক্টরী, কিশোরগঞ্জ
১৪। বি.জি বাংলা রাইস মিলস, ঠাকুরগাঁও
১৫। ইঞ্জিনীয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, টঙ্গী
১৬।
ক্যান মেকিং এণ্ড টিন প্রন্টিং প্ল্যান্ট, চট্টগ্রাম
১৭। জিনাত টেক্সটাইল লিঃ, টঙ্গী
১৮। মেঘনা টক্সটাইল মিলস, টঙ্গী
১৯। অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলস, টঙ্গী
২০। মন্নু টেক্সটাইল মিলস, টঙ্গী
২১।
ফাইন কটন মিলস, টঙ্গী
২২। লক্ষীনারায়ন কটন মিলস, নারায়নগঞ্জ
২৩। পাইলন ইণ্ডাস্ট্রিজ লিঃ, চট্টগ্রাম
২৪। কেরিলাইন সিল্ক মিলস, ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম
২৫। ঢাকা কটন মিলস, ঢাকা]
২৬।
দেশবন্ধু সুগার মিলস, নরসিংদী
২৭। ময়মনসিংহ জুট মিলস লিঃ, ময়মনসিংহ
২৮। নিশাত জুট মিলস লিঃ, টঙ্গী
২৯। কর্ণ ফ্লাওয়ার মিলস লিঃ, নারায়নগঞ্জ
৩০। কেবিনেট ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট, দৌলতপুর, খুলনা
৩১।
উড ট্রিটিং প্ল্যান্ট, দৌলত পুর, খুলনা
৩২। ম্যানগ্রোভ তানিন প্ল্যান্ট, দৌলতপুর, খুলনা
৩৩। বাংলাদেশ অয়েল মিলস, খুলনা
৩৪। কালিয়াছাপড়া সুগার মিলস লিঃ, কিশোরগঞ্জ
৩৫। ফিশ এক্সপোর্ট, খুলনা
৩৬।
বাওয়া জুট মিলস, নারায়ন গঞ্জ
৩৭। সার্ভিস ফ্যাসিলিটিস সেন্টার (SFC), সিরাজগঞ্জ
৩৮। নোয়াখালী টেক্সটাইল মিলস, লক্ষীপুর
৩৯। কোহিনুর ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারাস লিঃ, টঙ্গী
৪০। নবারুন জুট মিলস, নারায়নগঞ্জ
৪১।
সাঙ্গু ভেলী টিম্বার ইণ্ডাস্ট্রিজ, চট্টগ্রাম
৪২। হাফিজ টেক্সটাইল মিলস লিঃ, চট্টগ্রাম
৪৩। ফিশারিজ নেট ফ্যাক্টরী, বিএসসিআইসি আই/এ, অশোকতলা, কুমিল্লা
৪৪। ফিশারিজ নেট ফ্যাক্টরী (মংলা), বিএসসিআইসি আই/এ, অশোকতলা, কুমিল্লা (শুধু মেশিনারি)
৪৫। ফিশারিজ নেট ফ্যাক্টরী, চট্টগ্রাম
৪৬।
সিলেট পাল্প এণ্ড পেপার মিলস লিঃ, সুনামগঞ্জ
৪৭। আমিন এজেন্সিজ লিঃ, চট্টগ্রাম
৪৮। কোকিল টেক্সটাইল মিলস লিঃ, ব্রাহ্মনবাড়িয়া
৪৯। ডকিয়ার্ড এণ্ড ইণ্জিনীয়ারিং ওয়ার্কস, নারায়নগঞ্জ
৫০। দশা এক্সট্রাকশন, চট্রগ্রাম
৫১।
বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট, জয়দেবপুর, গাজীপুর
৫২। আশরাফিয়া অয়েল মিলস, খুলনা
৫৩। শতরঞ্জ টেক্সটাইল মিলস, টঙ্গী, গাজীপুর
৫৪। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ, খুলনা
খ) সরকারী শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে প্রাইভেটাইজ করা এন্টারপ্রাইজ সমূহঃ
১। কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানী, ঢাকা
২।
চট্টগ্রাম সিমেন্ট ক্লিংকার কোম্পানী, চট্টগ্রাম
৩। ঈগল বক্স এণ্ড কার্টুন ম্যানুফেকচারিং কোম্পানী, ঢাকা
৪। স্কুইব (বাংলাদেশ) লিঃ, ঢাকা
৫। ঢাকা ভিজিটেবল অয়েল, ঢাকা
৬। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিঃ, চট্টগ্রাম
৭।
সেমেন্স বাংলাদেশ লিঃ, ঢাকা
৮। ভ্যান ওমেরান ট্যাংক টার্মিনাল লিঃ, চট্টগ্রাম
৯। ইন্টারন্যাশনাল অয়েল মিলস লিঃ, চট্টগ্রাম
১০। রেকিট এণ্ড কোলম্যান (বিডি) লিঃ
১১। মেটালেক্স কর্পোরেশন লিঃ
১২।
ন্যাশনাল আয়রন এণ্ড স্টীল লিঃ, চট্টগ্রাম
১৩। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ
১৪। ইস্টার্ণ ব্যাংক লিঃ
১৫। ন্যাশনাল ন্যাংক লিঃ
১৬। লিরা ইণ্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজ, টঙ্গী
১৭।
বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফেকচারিং লিঃ, সিদ্ধিরগঞ্জ
১৮। উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরী লিঃ, নারায়নগঞ্জ
১৯। টাইগার ওয়ার (রি-রোলিং) মিলস লিঃ, সিদ্ধিরগঞ্জ
২০। ইস্টার্ণ ইণ্ডাস্ট্রিজ লিঃ, তেজগাঁ, ঢাকা
মজার ব্যাপার হলো- অব্যাহত লসের জিগির তুলে প্রাইভেটাইজ করা এসব রাষ্ট্রায়াত্ত এন্টারপ্রাইজ সমূহ ব্যক্তিমালিকানায় তুলে দেয়া হয় নাম মাত্র মূল্যে। পানির দরে এ ৫৪ প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে সরকারী কোষাগারে জমা হয় মাত্র ৭০৭ কোটি টাকা!!!
এবারে আরেকটি তালিকা দেখি, যে তালিকার এন্টারপ্রাইজগুলো প্রাইভেটাইজড হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে ঘোষিতঃ
ক) ইস্পাত এবং প্রকৌশলঃ
১।
বাংলাদেশ ইস্পাত ইণ্ডাস্ট্রিজ লিঃ, তেজগাঁ, ঢাকা
২। বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট, জয়দেবপুর, গাজীপুর
৩। নারায়নগঞ্জ ডকিয়ার্ড, নারায়নগঞ্জ
খ) এনার্জীঃ POL (পেট্রোলিয়াম, অয়েল এবং লুব্রিক্যান্ট) প্রোডাক্টস এণ্ড ডিস্ট্রিবিউশন
১। পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিঃ
২। যমুনা অয়েল কোম্পানী লিঃ
৩।
মেঘনা অয়েল কোম্পানী লিঃ
৪। এল.পি. গ্যাস লিঃ
৫। ইস্টার্ণ লুব্রিক্যান্ট লিঃ
৬। স্ট্যাণ্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিঃ’
৭। বাংলাদেশ অয়েল মিলস লিঃ, খুলনা
৮।
কর্ণ ফ্লাওয়ার মিলস লিঃ, নারায়নগঞ্জ
৯। আশরাফিয়া অয়েল মিলস লিঃ, খুলনা
১০। দশা এক্সট্রাকশন লিঃ, চট্টগ্রাম
গ) টেক্সটাইলসঃ
১। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস লিঃ, নারায়নগঞ্জ
২। চিত্তরঞ্জন কটন মিলস লিঃ, গোদনাইল, নারায়নগঞ্জ
৩।
কোকিল টেক্সটাইল মিলস লিঃ, ব্রাহ্মনবাড়িয়া
৪। চিশতী টেক্সটাইল মিলস লিঃ, দৌলতপুর, কুমিল্লা
৫। আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিলস লিঃ, ডেমরা, ঢাকা
৬। মাগুরা টেক্সটাইল মিলস লিঃ, মাগুরা
৭। দারোয়ানি টেক্সটাইল মিলস লিঃ, দারোয়ানি, নীলফামারী
৮।
ওরিয়েন্ট টেক্সটাইল মিলস, মিরেরবাগ, ঢাকা
৯। কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস লিঃ, কুড়িগ্রাম
১০। রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলস লিঃ, রাঙ্গামাটি
১১। সিলেট টেক্সটাইল মিলস লিঃ, ইসলামপুর, সিলেট
১২। ভালিকা উলেন মিলস লিঃ, নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম
১৩।
টাঙ্গাইল কটন মিলস, গড়াই, টাঙ্গাইল
১৪। কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস, টঙ্গী, গাজীপুর
ঘ) হ্যাণ্ডলুম
১। সার্ভিস ফ্যাসিলিটিস সেন্টার (SFC), বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ
২। সার্ভিস ফ্যাসিলিটিস সেন্টার (SFC), টাঙ্গাইল
৩। সার্ভিস ফ্যাসিলিটিস সেন্টার (SFC), বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া
৪।
টেক্সটাইল ফ্যাসিলিটিস সেন্টার (TFC), চৌমুহানি, নোয়াখালী
৫। হ্যাণ্ডলুম ফ্যাসিলিটিস সেন্টার, রায়পুর, নরসিংদী
ঙ) সিল্কঃ
১। রাজশাহী রেশম ইণ্ডাস্ট্রি, রাজশাহী
২। ঠাকুরগাঁও রেশম ইণ্ডাস্ট্রি, ঠাকুরগাঁও
চ) অন্যান্য শিল্পঃ
i) রসায়নঃ
১। কর্ণফুলী রেয়ন এণ্ড কেমিক্যালস লিঃ, কাপ্তাই
২।
চট্টগ্রাম কেমিকেল কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম
ii)চামড়াঃ
১। ঢাকা লেদার কোম্পানী, নয়াহাট, সাভার, ঢাকা
iii)ব্যাটারীঃ
১। কোহিনুর ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানী লিঃ, টঙ্গী, গাজীপুর
iv)মণ্ড, বোর্ড এবং কাগজঃ
১। খুলনা হার্ডবোর্ড মিলস লিঃ, খুলনা
২। নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস লিঃ, পাকশী, পাবনা
৩।
সিলেট পাল্প এণ্ড পেপার মিলস লিঃ, সিলেট
৪। খুলনা নিউজপ্রিন্টস মিলস লিঃ, খুলনা
ছ) চিনি এবং খাদ্যঃ
১। আমিন এজেন্সীজ লিঃ, চট্টগ্রাম
২। শেখ মোজতবা এণ্ড কোং
৩। সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস লিঃ, সেতাবগঞ্জ, দিনাজপুর
৪।
রংপুর সুগার মিলস লিঃ, মহিমাগঞ্জ, গাইবান্ধা
জ) উড, টিম্বার এবং বোর্ডঃ
১। চট্টগ্রাম কেবিনেট ম্যানুফেকচারিং ইউনিট, চট্টগ্রাম
২। ঢাকা কেবিনেট ম্যানুফেকচারিং ইউনিট, ঢাকা
৩। খুলনা কেবিনেট ম্যানুফেকচারিং ইউনিট, খুলনা
৪। উড ট্রিটিং ইউনিট, চট্টগ্রাম
৫।
উড ট্রিটিং ইউনিট, খুলনা
৬। চট্টগ্রাম বোর্ড মিলস, চট্টগ্রাম
৭। ইস্টার্ণ উড ওয়ার্কস
৮। ফিডকো ফার্ণিচার কমপ্লেক্স
৯। কর্ণফুলী টিম্বার এক্সট্রাকশন ইউনিট
১০।
ল্যাম্বার প্রোসেসিং কমপ্লেক্স
১১। পার্টিকেল বোর্ড ভিনীয়ারিং প্ল্যান্ট
১২। প্রোকিউরমেন্ট এণ্ড সেলস অরগানাইজেশন
১৩। সাঙ্গু-মাতামহুরি টিম্বার এক্সট্রাকশন ইউনিট
১৪। সাঙ্গু ভ্যালী টিম্বার ইণ্ডাস্ট্রিজ
জ) সিভিল অ্যাভিয়েশন এবং ট্যুরিজমঃ
১।
মোটেল লাবনী, কক্সবাজার
২। হোটেল পশুর, মংলা, বাগেরহাট
৩। পর্যটন মোটেল, রংপুর
৪। পর্যটন মোটেল, সিলেট
ঝ)পাটঃ
১। মনোয়ার জুট মিলস লিঃ, নারায়নগঞ্জ
২।
স্টার জুট মিলস, চন্দনীমহল, খুলনা
৩। দৌলতপুর জুট মিলস লিঃ, খালিশপুর, খুলনা
৪। নিশাত জুট মিলস লিঃ, টঙ্গী, খুলনা
৫। হাফিজ টেক্সটাইল মিলস লিঃ, চট্টগ্রাম
৬। নবারুন জুট মিলস লিঃ, নারায়নগঞ্জ
৭।
বাওয়া জুট মিলস লিঃ, নারায়নগঞ্জ
৮। ময়মনসিংহ জুট মিলস লিঃ, শম্ভুগঞ্জ, ময়মনসিংহ
৯। ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ, আত্রা, খুলনা
১০। পিপলস জুট মিলস লিঃ, খুলনা
ঞ) চাবাগানঃ
১। পটিয়া চা বাগান, পটিয়া, চট্টগ্রাম
২।
বিমলা নগর চা বাগান
ট) ফিন্যান্স এণ্ড ইণ্ডাস্ট্রিয়াল ক্রেডিটঃ
১। বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা (BSRS)
এছাড়া আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারেও সরকারী অনুমোদন পাওয়া গেছে।
উপরের তালিকাটি জ্বল জ্বল করে শোভা পাচ্ছে বিনিয়োগ বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে, যে ওয়েব সাইটটি তৈরী করাই হয়েছে বিদেশী বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশে। যদিও এই তালিকা থেকে প্রাইভেটাইজড করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হওয়ারো প্রায় বছরের বেশী সময় পরেও কোন প্রতিষ্ঠান প্রাইভেটাইজ করা হয়নি এবং এর কারণে অর্থনীতিবেদেরা-বিনিয়োগকারীরা-মিডিয়া মাঝে মধ্যেই হায়হায় করে উঠছেন; কিন্তু বুঝতে হবে যে- এ প্রতিষ্ঠান গুলোকে ইতোমধ্যেই মেরে ফেলা হয়েছে বা প্রায় মেরে ফেলা হয়েছে। প্রাইভেটাইজেশনের সাধারণ নিয়ম অনুসারে দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত লসের মুখে ঠেলে দিয়ে, তার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রচারণা চালিয়ে সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম করেই টেণ্ডারে তুলে বা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এগুলোকে বেসরকারীকরণ করা হয়।
তাইতো গত ৯ আগস্ট, ২০০৮ যুগান্তরের রিপোর্টে বিগত অর্থবছরে একটিও এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেটাইজ না হওয়ার জন্য প্রাইভেটাইজেশন কমিশনকে একহাত নেয়া হলো। ১৬,৭৪৯ কোটি টাকা লোকসানের গান শোনালো হলো! এই লোকসানের গানই হলো প্রাইভেটাইজ করার উপযোগী পরিবেশ তৈরীর অপর নাম। অথচ সেই রিপোর্টে ঘুনাক্ষরেই আসেনা এই লোকসানের প্রকৃত ইতিহাস, প্রকৃত কারণ। তেমনি আসেনা- এর মধ্যেই বন্ধ করে দেয়া- মুখ থুবড়ে ফেলে দেয়া এন্টারপ্রাইজের কথা। ২৬ টি কোম্পানী অচিরেই প্রাইভেটাইজ করার সরকারী পরিকল্পনায় উল্টো হতাশাই ব্যক্ত হয়- হতাশা একারণে যে এই ধীর গতিতে বেসরকারীকরণ করলে নাকি অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাবে সমস্ত এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেটাইজ করতে!!
অথচ এসময়কালে খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত পিপলস জুট মিল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী জুট মিল ও ফোরাত-কর্ণফুলী কার্পেট ফ্যাক্টরি, সিরাজগঞ্জের কওমি জুট মিল সহ অনেকগুলো শিল্প বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, অর্থাভাবে বাকিগুলো ধুকছে।
এগুলোর হাজার হাজার শ্রমিকের কান্না শোনার মত কেউ নেই- শোনানোর মত কেউ নেই! কেউ জানে না এই কারখানাগুলো কবে খুলবে!
এই যে তালিকা, গত ১৫ বছরে প্রাইভেটাইজড হওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং আগামীতে প্রাইভেটাইজড হওয়ার জন্য প্রস্তুত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকাঃ এগুলোই আমাদের এককালীন শিল্প। দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা, দেশীয় কাঁচামাল ও দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর এসব প্রতিষ্ঠান একসময় আমাদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছিল, হাজার হাজার মানুষের মুখে অন্ন জুগিয়েছে। এই তালিকার সাথে যুক্ত করুন আদমজী জুট মিল, মংলা বন্দর সহ প্রাইভেটাইজ না করে শ্রেফ বন্ধ করে দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম।
তাহলে প্রশ্ন হলো- তালিকার শিল্পগুলো বাদে আমাদের আর কি অবশিষ্ট থাকে? আমাদের শিল্প গুলো ধংস করে, আমরা কি গড়ে তুলেছি? আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কি তাহলে?
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।