অক্ষমতার অনুভব তাড়িত করে সারাদিন, গত এক সপ্তাহ ধরেই অক্ষমতার অনুভুতি পীড়িত করছে। ৮ই আগস্ট বিডিনিউজ২৪.কম এ প্রকাশিত প্রতিবেদন সন্ত্রস্ত করেছে। সংঘবদ্ধ বর্বরতার আক্রমনে আমরা চুড়ান্ত ভাবেই অসহায়। টুটুল ক্রস ফায়ারে মারা গেলো, তপন মালিথা মারা গেলো ক্রস ফায়ারে, একই ভাবে মারা গেলো তপন মালিথার ভাই আকাশ, মারা গেলো জনযুদ্ধের শিমুল, দীর্ঘদিন পুলিশ হেফাজতে থাকবার পরে হঠাৎ করেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে, গ্রেফতারকৃত শিমুল সেখানে লাইন অফ ফায়ারে নিহত হয়।
এভাবেই গত ৪ বছরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষী বাহিনীর হাতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে খুন হয়েছে ১১০০ জনেরও বেশী মানুষ।
বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষী বাহিনীই আসলে আমাদের দেশের সবচেয়ে সংগঠিত সন্ত্রাসী বাহিনী। যারা খুন হয়েছে এদের হাতে গত ৪ বছরে তাদের সম্মিলিত খুনের সংখ্যাও কি ১০০০ পার হবে? দৈনিক পত্রিকার বিবরণ কি সাক্ষ্য দেয় না, উর্দি ছাড়া সন্ত্রাসী বাহিনীর চেয়ে উর্দি পড়া সন্ত্রাসী বাহিনী অধিক অপরাধ প্রবণ।
গল্পগুলো একই রকম, একই উদ্ধৃতি দিয়ে শুরু হয়, আমরা আমাদের অসহায়ত্বে শরীর কুঁকরে বসে থাকি। অপেক্ষা করতে থাকি এই বর্বরতার শেষ হবে কবে? অবিরাম অমানবিকতার আঘাতে অনুভুতি ভোঁতা হয়ে যায়। পুলিশি হেফাজতে ধর্ষিত মেয়েটার জন্য কষ্ট পেতে না পেতেই দেখি সে লাশ হয়ে কবরে চলে যাচ্ছে, সুরত হালের রিপোর্ট আসে, সেখানে ধর্ষণের আলামত খুঁজে পাওয়া যায় না, খুন হওয়া মেয়েটার শরীরে আঘাতের চিহ্নও থাকে না, তবে এটাকে পরিকল্পিত হত্যা না বলে পুলিশ জানাতে চায় এটা আত্মহত্যা।
এবং আমরা নিশ্চিত হই, শুধুমাত্র পুলিশের হাতে আটক হওয়ার লজ্জায় মেয়েটা আত্মহত্যা করে । সংবাদ পত্রে ছাপা হওয়ার পরে এই ঘটনার পরবর্তী সংবাদ জানা যায় না। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার কিছুদিন পুলিশ লাইনে ক্লোজড থেকে পরবর্তীতে অন্য কোনো থানায় বদলী হয়ে যান এবং আরও একটা সংবাদ জন্মের প্রতীক্ষা করে থানার আঁতুর ঘরে।
পুলিশের এই চরিত্র কম বেশি সব ঔপনিবেশিক দেশের জন্য সত্য- গত কাল সন্ধ্যায় যখন প্রবাসী বন্ধুরা সচেতনতামূলক ই মেইলে জানালো সাক্ষরের অনুরোধ, সেই মেইলটা পড়লাম- ৩ বছরের এক মেয়ে শিশু গণধর্ষিত হয়েছে। একই সময়ে একই শহরে ধর্ষিত হয়েছে ৯ মাসের এক শিশু।
আমি খবরটা পড়ে স্থানু হয়ে বসে থাকি। মানুষ কোথায় নামছে?
সচেতনতার প্রয়োজন হলো, কারণ সেই দেশের পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগে আটককৃত ব্যক্তিদের সসম্মানে জামিনে মুক্তি দিয়েছে।
বৈশ্বিক গোলোযোগ আর অমানবিকতায় আমার আগ্রহ আপাতত কম। আমি বরং বাংলাদেশের অমানবিকতায় দৃষ্টি রাখতে চাই। ৮ই অগাস্টের প্রকাশিত সংবাদে বলা হচ্ছে তপন মালিথা এবং তার সঙ্গীনি রিক্তার মৃত্যু ক্রস ফায়ার জনিত কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, এবং একই সময়ে সেখানে কুষ্ঠিয়ার পুলিশ সুপার যখন বলেন, মাঝে মাঝে একজন কুখ্যাত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ধরতে গিয়ে ১০ জন নিরীহ মানুষ খুন হয়ে যেতেই পারে তখন পুলিশকে মানুষের বন্ধু ভাববার কারণ খুঁজে পাই না।
একই প্রতিবেদনে র্যাবের ক্যাপ্টেন বলেছে- আমাদের নিরীহ ১০ জনকে খুন করা ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা ছিলো না, আমাদের যেকোনো মুল্য তপনকে হত্যা করতে হতো।
তপনকে খুন করা হয় ১৮ই জুন , সেদিন র্যাবের ভাষ্য ছিলো, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রিক্তার বাসার দিকে যাওয়ার সময় অতর্কিতে তাদের উপরে হামলা চালায় রিক্তার বাসায় অবস্থান নেওয়া সন্ত্রাসীরা। পরে গোলাগুলি থামলে তারা উদ্ধার করে সেখানে তপন মালিথা মৃত- এবং তার শরীরে ৬টা গুলি বিদ্ধ হয়েছিলো। একই সময়ে তার পাশে পড়ে ছিলো তার কথিত বান্ধবী রিক্তার লাশ- রিক্তার মাথা এবং পায়ে গুলি বিঁধেছিলো।
একই ঘটনা নিয়ে তপনের ভাই আকাশের বক্তব্য হচ্ছে- তাকে রাত দুইটার সময় বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় রিক্তার ওখানে, সেখানেই তপন অবস্থান করছিলো।
র্যাব অফিসার প্রথমেই আকাশকে লাথি মেরে ফেলে দেন এবং তার পাঁজরের হাড় ভেঙে দেন, এর পর আহত আকাশকে নিয়ে তারা রিক্তার বাসায় যান, সেখানে তারা ঠান্ডা মাথায় তপনকে খুন করেন, এবং পরবর্তীতে রিক্তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা হয় এবং একটা গুলি করা হয় পায়ে।
রিক্তা অবশ্য তপনের পরিচিত, এবং পরিচিতির কারণেই রিক্তাকে খুন হতে হয়, এমনি তে তার নামে কোনো থানায় কোনো মামলা নেই, তবে তার সবচেয়ে বড় অপরাধ তপন তার পরিচিত এবং তপনের মৃত্যু দিনে তপন তার সাথে অবস্থান করছিলো। যদিও র্যাব নিশ্চিত হয়ে জানাতে পারে নি রিক্তা তপনের বান্ধবী কিংবা স্ত্রী- তবে তারা নিশ্চিত হয়েই খুন করে এসেছে।
রিক্তার শরীরে আঘাতে আলামত খুঁজে পাওয়া গেছে সুরত হালের প্রতিবেদনে। রিক্তা মৃত্যুর আগে প্রতিরোধ করেছিলো, নিজেকে বাঁচাতে চেয়েছিলো।
তবে বর্তমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটা গোপন বিধি হলো অপরাধী এবং অপরাধীর স্ত্রীরা সমান অপরাধী। তাই বাংলা ভাইয়ের স্ত্রীর ৫ বছরের জেল হয়ে যায়। তাই অপরাধীর পরিচিতদের খুন হয়ে যেতে হয়। একই কারণে আদালতের জামিন পেয়েও সিগমা হুদা কারাগার থেকে মুক্তি পান না ৩ দিন, পরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে যখন বাধ্য হয়েই জামিনে মুক্তি দিতে হবে তখনও অলৌকিক দেবদুত হয়ে উড়ে আসে নির্দেশনা, নতুন একটা অজামিনযোগ্য অপরাধে তাকে আটক করতে হবে।
এই হলো বাংলাদেশ তত্ত্বাবধায়কদের আইন ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র তৈরির ছাপচিত্র।
আজ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন তারা দুই নেত্রীর প্রতি সমান আচরণ করতে চেয়েই অনেক আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়াকে তারা মুক্তি দিবেন।
আমি হতবাক হয়ে শুনতে থাকি তার বক্তব্য- এই মানুষটাকে নিয়ে আমার প্রত্যাশা কমতে কমতে শূণ্যের কোঠায় চলে যায়। অবশ্য সমস্যা তার নয়, তার উপরিকাঠামো তাকে নিয়ন্ত্রীত করছে।
যেমন ভাবে পুলিশ অধ্যাদেশ নিয়ন্ত্রন করছে পুলিশের রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে পুলিশের ব্যবহার। পুলিশের নিয়ন্ত্রন এ সব বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের হাতে, তারা যেই নির্দেশ দিবে, পুলিশ সেটা পালন করতে বাধ্য, তারা নির্মম বর্বর এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিনত হয়েছে এরই ধারাবাহিকতায়।
পুলিশকে এই ক্ষমতাসীনদের খবরদারি থেকে মুক্তি দিয়ে যে নতুন পুলিশ অধ্যাদেশ জারি করবার কথা সেটা অবশ্য আলোর মুখ দেখবে না, কারণ কোনো কোনো মহল এটা চাইছে না।
বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকের শেষ দিকে গড়ে উঠা গণআন্দোলন দমন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যবহৃত পুলিশ প্রশাসন ১৯৭১ এর মার্চ মাসে আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের কাজে ব্যবহৃত হয় নি, তারা অবশ্য ২৬শে মার্চ থেকে পাকিস্তান সৈন্যদের সহযোগীতার নির্দেশ পায় কেন্দ্র থেকে, এবং এদের কিছু কিছু সদস্য পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন, অনেকেই তাদের কর্মস্থলে নিয়োজিত ছিলেন। এইসব পলাতক পাকিস্তান পুলিশ এবং কর্মরত পাকিস্তান পুলিশদের নিয়েই ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের পুলিশ জন্ম নেয়।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বামপন্থী জাসদের উত্থানকে রাজনৈতিক ভাবে দমনের চেষ্টা করা হয়, এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে এদের দমনের জন্য গঠিত হয় জাতীয় রক্ষী বাহিনী। তারা উগ্র সহিংস বামপন্থীদের এনকাউন্টারে হত্যা করতো বিচারবহির্ভুত ভাবে।
এই বিচার বহির্ভুত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করা, পুলিশি হেফাজতে আসামীর খুন হয়ে যাওয়া ঔপনিবেশিক দেশগুলোর সাধারণ ঘটনা। এসবের ধারাবাহিকতা ক্ষুন্ন হয় না, বরং শব্দের খোলস পাল্টে যায়।
বামপন্থী দলগুলোর দাবি ১৯৭৫ এ ৪ঠা অক্টোবর বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করবার মাধ্যমে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর অঙ্গীভুত হওয়ার আগেই এই বিশেষ এলিট বাহিনীর হাতে রাজনৈতিক মতাদর্শিক বিরোধের কারণেই খুন হয় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
এর পরে চিতা, কোবরা, সম্মিলিত বাহিনী, যৌথ বাহিনী, অপরাদ দমনের নানাবিধি এলিট ফোর্স রাষ্ট্রের নির্দেশে গঠিত হয়। একই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালে জন্ম নেয় বিশেষ এলিট ফোর্স র্যাব-
র্যাব রাষ্ট্রের নির্দেশে যেকোনো অপরাধের তদন্ত করবার বিশেষ ক্ষমতা অর্জন করে, এবং এ কাজে তাদের জবাবদিহিতা রাষ্ট্রের নিকটে।
তবে বাংলাদেশ পুলিশের জনগনের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়, তবে তাদের ভরণপোষণ এবং তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের অর্থ সংস্থান হয় জনগণের করের অর্থে।
তারা আসবার পরে একটা নতুন শব্দের জন্ম হয়, ক্রস ফায়ার, এই শব্দটা দিয়ে রাষ্ট্র একটা ঘটনাকে প্রকাশ করতে চায়, পুলিশ এবং র্যাব যখন তাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত ছিলো তখন অতর্কিতে তাদের কাজের উপরে হস্তক্ষেপ করা হয়, এবং এই সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে গিয়ে র্যাব পাল্টা গুলি ছুড়ে। এবং কোনো এক দুর্ঘটনায় এই গোলাগুলির সময়ে নিহত ব্যক্তি লাইন ওফ ফায়ারে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে যায়। এবং পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার ঘোষণা করে তিনি মৃত।
রাষ্ট্রের কাছে সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বের বয়ান এই ক্রস ফায়ার শব্দটি।
এটা দিয়ে অনেক অন্যায় বৈধ করে নেওয়া হয়। যেমনটা হয়েছে সেন্টুর ক্ষেত্রে- তাকে নীলক্ষেতে আটকের সময়ই গুলি করা হয়। তাকে যখন বরিশালের নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করা হয়, তখন তার আশে পাশে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ছিলো না।
সেখানকার অধিবাসী জানায়, হঠাৎ বৃষ্টির ভেতরে আসে র্যাবের জীপ, তারা আকাশে গুলি ছুড়ে, এবং ক্ষেতে একজনকে রাখে, পরে একে একে উদ্ধরকৃত অস্ত্রগুলো সাজিয়ে রাখা হয় লাশের পাশে। এবং সেখানের জমির অবস্থা দেখে অনুমাণ করা যায় সেখানে কোনো সন্ত্রাসী ওঁত পেতে ছিলো না মোটেও।
বাংলাদেশে ২০০৪ সালে র্যাব গঠিত হওয়ার পরে র্যাব এবং পুলিশের হাতে ক্রস ফায়ারে খুন হয়েছে ৭৩৮ জন, একই সময়ে পুলিশি হেফাজতে খুন হয়েছে ১৫৬ জন মানুষ।
সে সময়ে নিহত মানুষদের জন্য আক্ষেপ নেই, তখন ক্ষমতায় ছিলো রাজনৈতিক সরকার, তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য যেকোনো ভাবেই হোক পুলিশ এবং র্যাবের অনৈতিক ব্যবহার করতে পারে। তবে ২০০৭ সালের বাস্তবতা কি?
১২ই জানুয়ারী থেকে ৩১শে মে পর্যন্ত সরকারী বিভিন্ন উর্দিধারী বাহিনীর হাতে খুন হয়েছে ২০৭ জন মানুষ। এদের ভেতরে ১০৩ জন র্যাবের হাতে, ৭৪ জন পুলিশের হাতে, যৌথ বাহিনীর হাতে ৭ জন, র্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযানে ৪ জন, সামরিক বাহিনীর হাতে ৭ জন, নেভীর হাতে ৩ জন, এবং অন্যান্য সংস্থার হাতে খুন হয় ৯ জন।
এদের ভেতরে ১৪৯ জন ক্রস ফায়ারে, ৩৪ জন আইন শৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনীর হেফাজতে এবং ২৪ জন অন্যান্য ভাবে খুন হয়।
এবং গত ২ মাসে আরও ৬৩ জন খুন হয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনীর হাতে।
তবে এত খুন করবার পরেও এদের নিয়ন্ত্রন কিংবা বিলোপের কোনো আগ্রহ নেই সরকারের, এই সরকার মানবাধিকার সনদে সাক্ষর করেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষী বাহিনীর খুনগুলোর বিচার করে নি, কোনো স্বচ্ছতা নেই এদের কার্যক্রমে, সাধারণ মানুষের ভেতরে উদ্বেগ বাড়ছে, সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব বাড়ছে , তবে কেউ প্রতিবাদ করতেও সাহস পাচ্ছে না।
আমাদের সুশীলকূল শিরোমণিরা বিন্দুমাত্র বিদ্রোহ সহ্য করতে পারেন না, তারা জরুরী অবস্থার সাথে আরও একটা অধ্যাদেশের অংশ জারি করেন, যেখানে বলা হয়েছে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো উপদেষ্টাকে নিয়ে কোনো বিদ্রুপ সহ্য করা হবে না, বরং কেউ যদি এমন বিদ্রুপ ছাপায় তবে সেই সংবাদপত্রকে এর উপযুক্ত পরিণাম ভোগ করতে হবে।
সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার নিয়মিত টেলিফোন, সম্পাদকদের সাথে নিয়মিত বৈঠক, সেমিনার, নানাভাবে একটা অলিখিত সেন্সরশীপ চাপিয়ে দিয়েও গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছরে সাংবাদিক নির্যাতন কমে নি।
সহকর্মীর পিঠে লাথি হজম করেও সাংবাদিকরা মুখ বুজে চলছেন, এবং সংবাদপত্রগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।
নিয়মিত ভাতা পাচ্ছে না অনেক পত্রিকার সাংবাদিক। কণ্ঠরোধের যাবতীয় আয়োজন চুড়ান্ত করবার পরে আমরা জানছি আমাদের ভেতরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবার একটা সম্ভবনা আছে। তাই নির্ধারিত নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা ক্ষমতাসীন হইবার আগ পর্যন্তই জরুরী অবস্থা বলবত থাকিবে। আমাদের সংবিধান বিশেষজ্ঞ কামাল হোসেন যুক্তির ম্যার প্যাঁচে বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন, যদিও জরুরি অবস্থার সর্বোচ্চ মেয়াদকাল ১২০ দিন, তবে সেখানেই বলা হয়েছে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার আসবার পরে সংসদ অধিবেশনের নির্দেশনায় এই জরুরি অবস্থা উঠিয়ে নেওয়া কিংবা এটাকে বলবত রাখবার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা যাবে।
আমার সংবিধান চমৎকার সতীচ্ছদ, এটা দিয়ে অমানবিক ধর্ষণের ছাপ আড়াল করা যায়।
এখানে বলা আছে জরুরী অবস্থা জারী হবে ১২০ দিনের জন্য, তবে এর পরে এটা বাড়ানোর জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অনুমোদন লাগবে, সংসদ বিলুপ্ত হইবার পরে জারি হইলে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ অধিবেশনে এটা নিষ্পত্তি হবে, তবে সবই একটা বিষয় মাথার রেখে করা , অবশ্যই একটা সংসদ বিলুপ্ত হইবার ৯০ দিনের ভেতরে অন্য একটা নির্বাচিত সংসদ আমরা পাবো।
সংবিধান প্রণেতা কামাল হোসেন কি এটা ভুলে গিয়েছিলেন? তবে আমার বর্তমানের প্রশ্ন আপাতত প্রশ্ন হলো কুইনাইন সারাবে কে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।