আল বিদা
আপনাদের আরেকটি পোস্টে বলেছিলাম গত শুক্রবারে আমি চুপি চুপি বসুন্ধরা সিটিতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি দুইজন বসে আছেন। মিলটন ভাইকে ছবি দেখে চিনেছি। তার পাশে কাচাপাকা চুল গোফের এক সুপুরুষ। সৌমদর্শনের এই ভদ্রলোককে চিনতে পারিনি তখন।
আরও প্রায় দুই ঘন্টা পার হল। আমি কখনও আড়াল থেকে কখনও সামনে থেকে এই গ্রুপটাকে দেখছিলাম। সবার মাঝেই তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে।
তিনি রাজশাহীর ৩ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে একটি গেটে দাড়ালেন। গেট দিয়ে ঢুকা প্রত্যেকের কাছে তিনি শ্বাশতর জন্য সাহায্য চাইলেন।
প্রত্যেক মানে প্রত্যেকই, Each n Every. ততক্ষনে মিলটন ভাই যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন! আমি মজা করার সুযোগটা হাতছাড়া করলাম না। তার সাথে কিছুক্ষন পরিচয় গোপন করে কথা বললাম। তখন কেন জানি মনে হয়েছিল তিনি ভাল ছবি তোলেন। এখনও জানিনা সত্যিই তিনি ছবি তোলেন কিনা। পরে মিলটন ভাই জানালেন তিনি ক্যামেরাম্যান নামে ব্লগে লিখেন।
এব্যাপারে আমার 'গতকাল @ বসুন্ধরা সিটি' তে কিছু লিখেছি।
আমি সাহিত্য বিজ্ঞান ইতিহাস মহাকাশের মত জটিল লেখা পড়ি না তাই তার লেখা খুব একটা পড়া হয়নি। আর যেহেতু তিনিও আজেবাজে লেখা পড়েন না তাই আমার ব্লগেও তার পদার্পন হয়নি।
গতকাল শনিবারেও বিকাল ৪ টায় গেলাম বসুন্ধরা সিটি। প্রায় ১ ঘন্টা দূর থেকে প্রিয় এ মানুষদের দেখলাম।
দেখলাম ক্যামেরাম্যান অর্থাৎ আমাদের রন্জু ভাই ৩টি গেটই সামলাচ্ছেন। একটু পরপরই গেট বদলে বদলে দেখছেন। আমি ভাবলাম আমাকেও উনি হয়ত এভাবে খাটাবেন। তাই একটু দেরি করেই সামনে গেলাম। গিয়ে দেখলাম উনার ভাব বেশী! আমার সাথে পরিচিত হওয়ার কোন আগ্রহই নাই।
তিনি যে কাজ করছিলেন তাই করতে থাকলেন। এর ফাকেই টুকটাক কথা বললেন। কিন্তু চোখ রাখলেন মার্কেটে আসা ব্যাক্তিদের দিকেই। রাতমজুর নাইম মেজবাহ শামীম মিলটন অদ্ভুত আধারসহ অন্যরা কাজের ফাকে কিছুটা আড্ডা মারলেও রন্জুভাইকে দেখলাম কনস্ট্যান্ট। মূল গেটে লোকজন বেশী বলে আমরা এদিকেই বেশী আড্ডা দিচ্ছিলাম।
তিনি একাকী ৩ নম্বর গেটে দাড়িয়ে তার কাজ করে গেলেন। সবচেয়ে বেশী যা খেয়াল করলাম তা হচ্ছে তিনি অন্যকে কিছু করতে বলেন না। ৩ নম্বর গেটে যাওয়া দরকার তো তিনিই চলে গেলেন। মনে মনে ভাবি সম্পূর্ন অচেনা একটি ছেলের জন্য তিনি কিভাবে খাটছেন।
আমি শ্বাশতর জন্য বসুন্ধরা সিটিতে যাইনি।
গিয়েছিলাম এই প্রিয় মানূষদের দেখতে। সেখানের সব ব্লগারদের যে মমতা দেখলাম, মানবতা বোধ দেখলাম তা আমাকে নাড়া দিল। আমি এত বড় হৃদয়ের না এমনকি হওয়ার চান্সও নাই।
রন্জু ভাইকে সালাম জানাই। ধন্যবাদ জানাই আমাকে এমন একটি উদাহরন চোখের সামনে দেখানোর জন্য।
তার কথা ভাবতে ভাবতে এমনিতেই একটি গান মনে পড়ল -
'সকাতরে ঐ কাদিছে সকলে শোন শোন পিতা
কহো কানে কানে শোনাও প্রানে প্রানে মঙ্গল বারতা'।
(ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা মিলটন ভাইকে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।