আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যামেরার সামনে যৌন কেলেঙ্কারি (১৮+) !!!!!!!!!!

তাশফী মাহমুদ জনপ্রিয় এক উপস্থাপকের যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিবিসি টেলিভিশন। তাঁর হাতে নির্যাতনের শিকার প্রায় ২০০ নারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ পুলিশ। জিমি সেভিল নামের ওই উপস্থাপক মারা গেছেন বছর খানেক আগে। ৮৪ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে টেলিভিশন উপস্থাপক, ডিস্ক জকি (ডিজে) এবং তহবিল সংগ্রহকারক হিসেবে জিমি সেভিল এত সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন যে তাঁকে ব্রিটেনের সম্পদ হিসেবে অভিহিত করা হতো। এখন অভিযোগ উঠেছে, নিজের এই সুনামকে কাজে লাগিয়ে তিনি নারীদের, বিশেষ করে কিশোরী ও তরুণীদের যৌন হয়রানি করতেন, এমনকি বিবিসির কার্যালয়েও তিনি এ কাজ করেছেন।

ব্রিটিশ পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জিমি সেভিলের যৌন হয়রানির মাত্রা ছিল অকল্পনীয়। তাঁর হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এমন দুই শতাধিক নারীর হদিস পাওয়া গেছে। তাঁদেরই একজন, সিলভিয়া এডওয়ার্ড। বর্তমানে দুই সন্তানের মা পঞ্চাশোর্ধ্ব এই নারী তাঁর কিশোরী বয়সে হেনস্তা হয়েছিলেন সেভিলের হাতে। ‘টপ অব দ্য পপস’ অনুষ্ঠানে অন্য তরুণীদের সঙ্গে তিনি ছিলেন সেভিলের পাশে।

এ সময় এক হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে পরবর্তী গানের ঘোষণা দেওয়ার সময় সেভিলের অন্য হাত চলে যায় সিলভিয়ার স্কার্টের নিচে। তাঁর হাত ঘুরে বেড়াতে থাকে সেখানে। মাঝেমধ্যে চাপ দিতে থাকেন সিলভিয়ার নিতম্বে। এই দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরায়। বিপর্যস্ত সিলভিয়া অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যান।

এরপর তিনি বিবিসির এক কর্মীর কাছে সেভিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু ওই কর্মী তাঁকে একরকম ঘাড় ধরে বের করে দেন বলে অভিযোগ করেছেন সিলভিয়া। কিন্তু কে এই জিমি সেভিল? কীভাবে তিনি এত সুখ্যাতি অর্জন করলেন, আর মৃত্যুর পর এমন অভিযোগের মুখে পড়লেন। জানতে হলে তাঁর ৮৪ বছরের জীবনের ওপর চোখ রাখতে হবে। জিমি সেভিলের জন্ম ১৯২৬ সালে ইংল্যান্ডের লিডসে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তরুণ সেভিল কাজ করতেন একটি খনিতে। যুদ্ধের ওই ডামাডোলের মধ্যেও খনির কাজ অব্যাহত রাখার অবদান হিসেবে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন তাঁকে পুরস্কৃত করেন। ১৯৫০-এর দশকের দিকে সেভিল কুস্তি ও সাইকেল চালানো প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শুরু করেন। ৭০ বছর বয়সেও তাঁকে দেখা গেছে দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিতে। ২০০০ সালে ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে সেভিল বলেন, ‘আমি তিন শতাধিক সাইকেল চালানো প্রতিযোগিতা, ২১২টি ম্যারাথন দৌড় এবং ১০৭টি কুস্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি।

’ সেভিলের টেলিভিশনে উপস্থাপনার জীবন শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে; যদিও তিনি দাবি করেন, ১৯৪০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি এ কাজ করেন। রেডিও লুক্সেমবার্গে ডিজে হিসেবে যোগ দেন ১৯৫৮ সালে। কিন্তু হঠাত্ তাঁর জীবন পাল্টে যায় ১৯৬৪ সালে। ওই বছর তিনি বিবিসি টেলিভিশনে ডাক পান ‘টপ অব দ্য পপস’ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনার জন্য। তিনিই ছিলেন ওই অনুষ্ঠানের প্রথম উপস্থাপক।

অনুষ্ঠানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। সঙ্গে ঘুরে যায় সেভিলের জীবনের মোড়। এরপর তিনি একের পর এক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে পৌঁছে যান জনপ্রিয়তার শিখরে। ব্রিটেনের একটি প্রজন্মের কাছে আদর্শ ছিলেন পোশাক-পরিচ্ছদ আর চালচলনে খামখেয়ালি লম্বা চুলওয়ালা এই লোকটি। এ ছাড়া দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য।

২০০০ সালে তাঁর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, সারা জীবনে তিনি বিভিন্ন সংগঠনের জন্য ছয় কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছেন। এ কাজে অবদানের জন্য ১৯৯০ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্মদিনে সেভিলকে নাইট উপাধি দেওয়া হয়। কর্মজীবনে খ্যাতি সেভিলকে এনে দিয়েছিল দেশের অভিজাত সম্প্রদায়ের সঙ্গে মেলামেশার। এ জন্য তাঁর মৃত্যুতে শোকের সাগরে ভেসেছিলেন ব্রিটিশ প্রিন্স চার্লস এবং তাঁর স্ত্রী। সেভিলকে সমাহিত করা হয় যে সোনালি রঙের কফিনে, তা উপহার দেয় ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনী।

কিন্তু মৃত্যুর পর বছর না যেতেই ডুবে যেতে বসেছে সেভিলের সুনাম আর খ্যাতির জাহাজ। সেভিলের যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছে বিবিসি। আর দেশের মানুষের অনুভূতির প্রতি সম্মান জানাতে সেভিলের সামাধিক্ষেত্র থেকে সমাধিফলক সরিয়ে ফেলেছে তাঁর পরিবার। সিএনএন ও ডেইলি মেইল। বিস্তারিত ছবি ও ভিডিও এই লিঙ্কে সুত্র- প্রথম আলো ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।