আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড: প্রশংসা না ইর্ষা

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

সেদিন একটা পুরস্কার পেলাম। স্বয়ং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের হাত থেকেই পুরস্কারটি হাতে এল। পুরস্কার বিতরণী শেষে উপাচার্য সাহেব, বিশেষ অতিথি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন (সদ্য জেল হতে মুক্ত) ও আমাদের বিভাগীয় প্রধান তাদের গৎবাঁধা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। ভিসি স্যারের বক্তব্যে সুন্দর কিছু কথা ছিল, আনোয়ার স্যার রাজনৈতিক কথা বেশি উল্লেখ করলেও কিছু মনকাড় কথা বলেন। এছাড়া অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন যে খুবই সুন্দর করে কথা বলেন তা তার ছাত্র-ছাত্রী নির্বিশেষে ক্যাম্পাসে অনেকেই জানেন।

যাই হোক যা বলছিলাম, সম্মানিত অতিথি উভয়েই তাদের বক্তৃতায় গর্ব ভরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন গৌরব ফিরিয়ে এনে একে "প্রাচ্যের অক্সফোর্ড" হিসেবে পুনরায় প্রতিষ্টিত করবার প্রতিজ্ঞা ও উপদেশ ব্যক্ত করলেন। আজকের এই পোস্টের মূল প্রতিপাদ্য এটাই। ছোট্ট বেলা হতে শুনে আসছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পজিটিভ অর্থে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়। কখনও শুনতাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা, যা কিনা বিলেতের অক্সফোর্ড, ক্যাম্ব্রীজের সমতুল্য একারনেই প্রাচ্যের অক্সফোর্ড আখ্যা দেওয়া। কখনও শুনেছি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস টেস্টের ব্যবস্থার জন্য একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে সম্মানিত করা হয়।

খুব সম্ভবত উভয় ব্যাখ্যাতেই খানিকটা গলদ থাকতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মূলত ঈর্ষা করেই প্রাচ্যের অক্সফোর্ড আখ্যা দেওয়া হত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের প্রথম দিকের ছাত্র ও শিক্ষকবিশিষ্ট সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অমলেন্দু বসু তার "স্মৃতির ধূসর সরণিতে" প্রবন্ধে লেখেন, " আমরা যারা আবাসিক ছাত্র ছিলাম না... আমাদের মত ছাত্রদের জন্য ভাইস চান্সেলর স্যার ফিলিপ হার্টগ ব্যবস্থা করেছিলেন, নন রেসিডেন্ট ছাত্রদের কোন না কোন হল -এ সংশ্লিষ্ট থাকতে হবে। পরবর্তীকালে নিজে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে এই প্রথা দেখেছিলাম। .......... এই প্রথা ক্যাম্ব্রীজে ছিল, ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজেও ছিল।

সাধে কি আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ইর্ষামথিত প্রাণীগন ঢাকাকে ঠাট্টা করতেন অক্সফোর্ড অব দি ইষ্ট বলে! অমলেন্দু বসু তার "অবিস্মরণীয়" প্রবন্ধে লিখেছেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে যেমন "অক্সফোর্ড অব দি ইষ্ট" নামক সংবাদপত্রী আখ্যা দেওয়ায় হয়েছিল তেমনি একই সঙ্গে "মেক্কা অব দি ইষ্ট" অর্থাৎ এটি মূলত মুসলমানদেরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলা হত..... ........ ... ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দু শিক্ষ ও ছাত্রের সংখ্যা দীর্ঘকাল মুসলমানদের অনুপাতে বেশি ছিল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.