http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002
আমার মার গান শোনার খুব শখ ছিলো এক সময়। মা তার প্রিয় শিল্পীদের গানের ক্যাসেট সংগ্রহ করতেন এবং খুব যত্ন করে সংরক্ষণ করতেন। তার প্রিয় শিল্পীদের মধ্যে বিশেষ ভাবে ছিলেন, আশা ভোসলে, লতা মঙ্গেশকর, মান্না দে, হৈমন্তী শুক্লা, হেমন্ত। বুঝতাম মা খুব কষ্ট করে তার শিল্পীদের গান সংরক্ষণ করতেন। কিন্তু ছেলেবেলার দুষ্টমী বলে কথা।
আমি আবার ছিলাম মাইকেল জ্যাকসনের পাগল, ব্যান্ড সঙ্গীতের পাগল।
রেডিও তে দুপুর ৩টার ওয়ার্ল্ড মিউজিকের একজন নাছোড়বান্দা লিসেনার ছিলাম আমি। আমি করতাম কি, আমার পছন্দের ইংরেজি গান গুলো সংরক্ষণ করার জন্য মার সংগ্রহের ক্যাসেটগুলোতে ওসব রেকর্ড করে ফেলতাম। মার সংগ্রহের সব ক্যাসেটেই আমি আমার প্রিয় ওয়ার্ল্ড মিউজিকের গান গুলো তুলে রাখতাম। মা আমাকে এ জন্য অনেক বকাঝকা ও গায়ে হাত পর্যন্ত তুলতো! কিন্তু আমি দমে যেতাম না।
একসময় মা গান শোনাই ছেড়ে দিলেন। আসলে তার গানের প্রতি আগ্রহই মিইয়ে গেল।
আজ ঢাকার চীন মৈত্রী সম্মেলন ভবনে জনপ্রিয় ভারতীয় দুজন শিল্পী, হৈমন্তী শুক্লা ও শ্রীকান্ত আচার্যের কনসার্ট। আমার মা অনেক দিন পর খুব শখ করলেন যাবেন। আমাকে বললেন টিকেট ম্যানেজ করতে! আমি বললাম, আমি তোমাকে টিকেট এনে দিচ্ছি কিন্তু আমি যেতে পারবো না!! আমি অন্য আরেকটি কনসার্টে যাচ্ছি।
আম্মা জানতে চাইলেন কোন কনসার্ট? আমি বললাম আমার এক বড়ভাইয়ে মাত্র সাত মাস বয়সী মেয়ে নয়ন্তী, ওর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ও চিকিৎসার জন্য ৫০,০০০০০ (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা দরকার। গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠে কতোগুলো ব্যান্ড ওর জন্য কনসার্ট করছে, আমি সেখানে যাবো।
মা খানিকক্ষণ চুপ করে সোফাটাতে বসে রইলেন। আমি বললাম, মা তোমার আর বাবার জন্য হৈমন্তী শুক্লার টিকেট এনে দিচ্ছি, তোমরা যাও! মা নিশ্চুপ উঠে গিয়ে ফিরে এলেন টাকা নিয়ে। বললেন, তোরা তিন ভাই বরং নয়ন্তীর কনসার্টে যা।
আমি টাকা দিচ্ছি। আমি হৈমন্তীর কনসার্টে যাচ্ছি না।
আমি জানি মার মনে পড়ে গেছে উবর্শীর কথা। আমার যে বোন মাতৃগর্ভেই মারা গিয়ে ছিলো। মার সারাজীবনের একটা চাওয়া ছিলো একটা মেয়ে সন্তান।
আমরা তিন ভাই উবর্শীকে কখনো দেখিনি। আজ হয়তো উবর্শী বেঁচে থাকলে আমাদের সাথে ও যেত নয়ন্তীর জন্য কনসার্টে!!
নয়ন্তী কে বাঁচাতে হবে...
বিলিয়ারি অ্যাট্রেসিয়ায় আক্রান্ত মাত্র সাত মাস বয়সী সামিয়া মাহজাবিন নয়ন্তীর জীবন বাঁচাতে অক্সিফায়ার আয়োজন করেছে "লাইভ এইড কনসার্ট ফর নয়ন্তী"। মরণব্যাধি বিলিয়ারি অ্যাট্রেসিয়া থেকে রক্ষা পেতে নয়ন্তীর অতিদ্রুত লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। এর জন্য দরকার প্রায় ৫০ লাখ টাকা। নয়ন্তীর জীবন বাঁচাতে এই কনসার্ট আজ বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হবে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠে।
কনসার্টে অংশ নেবে ওয়ারফেইজ, অর্থহীন, ব্ল্যাক, আর্টসেল, ইয়াত্রী, ফুয়াদ ও পাওয়ারসার্জ। টিকেটের মূল্য মাত্র ১২০ টাকা। কনসার্ট থেকে প্রাপ্ত টাকার পুরোটাই দেয়া হবে নয়ন্তীর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার কাজে।
কনসার্ট উপলক্ষে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠের গেট ওপেন হবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে। টিকেট পাওয়া যাবে ধানম-ির কফি ওয়ার্ল্ড, অ্যামেরিকান বার্গার ও তেহারি ঘর, গুলশান ও বনানীর অ্যামেরিকান বার্গার ও ক্লাব গেলাটো, নীলক্ষেতের রাফিন প্লাজা ও এলিফ্যান্ট রোডের গিতাঞ্জলী এবং কনসার্টের আগে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠের গেটে।
কনসার্টটির মিডিয়া পার্টনার রেডিও ফুর্তি।
এছাড়া কেউ যদি নয়ন্তীকে বাঁচাতে তার চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসতে চান যোগাযোগ করুন : জনাব গাজী মোস্তাক :০১৭১৩০১৫০৮৮ (নয়ন্তীর বাবা)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।