তখন আমি অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। কয়েকদিন ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উপলক্ষে কয়েকজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসবেন। তাঁরা হলেন- এন্ড্রু কিশোর, রফিকুল ইসলাম,আবিদা সুলতানা প্রমুখ। এন্ড্রু কিশোরের গান আমার অসম্ভব প্রিয়। গুঞ্জন অবশেষে সত্যি হল; তাঁরা এলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে মঞ্চ তৈরি হল। । কিন্তু দ’ুদিন(আক্ষরিক অর্থেই) পর আমার ফাইনাল পরীক্ষা। আমি কি করে সময় নষ্ট করি? অনুষ্ঠান শুরু হল সন্ধ্যার পর। স্টেডিয়াম থেকে রফিকুল ইসলামের গান ভেসে আসছে।
মনকে অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে পড়ায় মনোনিবেশ করলাম। রাত বাড়ার সাথে সাথে গানের শব্দ বাড়তে লাগল। হঠাৎ ভেসে এল ”আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি....”। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। প্রিয় শিল্পীকে এক নজর দেখার জন্য ছুঠলাম স্টেডিযামের দিকে।
পৌঁছে দেখি মঞ্চ স্টেডিয়ামের মাঝখানে, আর ছেলে দর্শকদের স্থান গ্যালারীতে; যেখান থেকে শিল্পীদের দেখার কোন উপায় নেই। মেয়েদের স্থান কিন্তু মঞ্চের সামনে! ভেতরে না যেতে পারলে প্রিয় শিল্পীকে দেখব কি করে? মাঠের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া, যা ডিঙানো অসম্ভব। কি করা যায়? কে যেন বললো, ”আসুন, কাঁটাতারের বেড়ায় হাত লাগাই। ” বলামাত্র শত হাত কাজ শুরু করে দিল। সম্মিলিত শক্তির কাছে কে কবে অনমনীয় থেকেছে? কাঁটাতারের বেড়াও পারলো না।
আমরা নুয়ে পড়া বেড়া ডিঙিয়ে ছুটলাম ভেতরে। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তৃপক্ষ মাইকে সবাইকে ভেতরে যেতে দেবার ঘোষনা দিল। আমরাও সুবোধ বালকের মত মঞ্চের সামনে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে লাগলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।