দেখো ওই দিগন্ত সীমানায়, যেখানে মাটিকে চুমু খায়...
মাওলানা এন্তেজার ছাহেবকে চিনেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। আশেপাশের দশ গ্রামে ওনার মতো এতো বড় মাওলানা আর নাই। চারদিকে মাওলানা ছাহেবের শুধু জয় গান। যেখানেই যান কেউ ওনাকে সহজে ছাড়তে চান না। এভাবে মাওলানা ছাহেবের চলতে লাগলো দিন-মাস-বছর।
প্রায় পনের-বিশ দিন পর আজ সকালে বাড়ি ফিরলেন মাওলানা ছাহেব। বাজার থেকে কিছু আলু আর শাক-সবজি আনলেন। দুপুরে গোসল সেরে, জোহরের নামাজ পড়তে গেলেন পাশের মসজিদে। নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে গিন্নিকে সঙ্গে নিয়ে খেতে বসলেন। শাক-সবজি খাওয়ার পর তরকারি নিতে গিয়ে বাধলো যতসব গন্ডগোল।
মাওলানা ছাহেব বললেন ঘরে মুরগীর গোস্ত আসলো কোন জায়গা থেকে। আমিতো বাজার থেকে মুরগী আনিনি। গিন্নি বললেন আস্তে কথা বলেন লোকজন শুনতে পাবে। পাশের বাড়ি মুরগী আজ সকালে আমাদের উঠানে ধান খেতে আসলে আমি হাতের লাঠি ছূঁড়ে মারি। এতে মুরগী মরে মরে অবস্থা।
কেউ দেখার আগে আমি মুরগী জবেহ করে ফেলি এবং আপনাকে ভালো-মন্দ খাওয়াবো বলে রান্না করি। কি বললা তুমি? আমারে হারাম জিনিস খাওয়াতে চাও। তোমার এতো বড় সাহস। গিন্নি ভয়ে তরকারির বাটি সরিয়ে, ডালের বাটি এগিয়ে দেন। তখন মাওলানা ছাহেব বললেন এইটা কি করলা।
তরকারির বাটি সরাইলা কেন? গোস্ত আমার না হোক, আলু,তেল, মরিচ, নুন-মসলা এগুলো তো আমার। দেও একটু ঝোল দাও। ঝোল দিতে গিয়ে এক টুকরো গোস্ত মাওলানার প্লেটে পড়ে গেলো। গিন্নি গোস্তের টুকরা তুলতে গেলে মাওলানা তার হাত চেপে ধরে বললেন গোস্তের টুকরা নিতেছো কেন? গিন্নি বললো আলু, তেল, মরিচ,নুন-মসলা আপনার কিন্তু গোস্ত তো আপনার না, তাই নিতেছি। আর আপনি তো বললেন যে জিনিস আপনার না তা খাওয়া হারাম।
এবার মাওলানা ছাহেব জোরে ধমক দিয়ে বললেন, আহাম্মক মেয়ে-লোক এইটাও জাননা-" জোঁ চিজ আপনা আপনা আঁয়া ও চিজ বিলকুল হালাল...
( ফুটনোটঃ বিগত সরকার সিন্ডিকেট করে অর্থাৎ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা বা ঘুষ খেয়ে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার বাহাদুর ক্ষমতায় আসার পর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে হালের জ্বালানী সিএনজি গ্যাস পর্যন্ত দ্বিগুন থেকে প্রায় চারগুন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ কি? না-কি, অধিক মুনাফার আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ওনাদের কাছে মুরগীর গোস্ত নিজ থেকে পৌঁছে দিয়েছে। আর সরকার বাহাদু মাওলানা এন্তেজার ছাহেবের মতো-"জোঁ চিজ আপনা আপনা আঁয়া ও চিজ বিলকুল হালাল" পদ্ধতি গ্রহন করেছেন। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।