ভালবাসায় বিশ্বাসী প্রেমে নয়..
(একসময় টাইন্যা টুইন্যা পাস (অধিকাংশ) রাজনীতিবিদ যখন দেশ চালতো তখন আফসোস করতাম...ইস! যদি উচ্চশিক্ষিত, দক্ষ লোকের হাতে দেশ চালানোর দায়িত্ব থাকত, তাহলে হয়তো আমরাও মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানের মতো হতে পারতাম। )
নয় বছরের দীর্ঘ স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে যখন মুক্ত হই তখন ভাবি অচিরেই একটা সুখি সমৃদ্ব জাতি হিসেব আমরা পৃথিবীর বুকে জায়গা করে নেব। আমরা মুক্ত পরিবেশে আনন্দচিত্তে একটা রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন করি যারা আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কারিগর হবে। যারা ক্ষমতাকে ভোগের উপলক্ষ নয় বরং দায়িত্ব হিসেবে মনে করবে। নির্বাচিত সরকার শাসন ব্যবস্হায় পরিবর্তন আনে যাতে আর কোন লম্পট স্বৈরশাসক জন্ম নিতে না পারে।
আমরা নিশ্চিতবোধ করি। দীর্ঘদিনপর ভবিষ্যৎত সুখের কথা ভেবে আমাদের মনে একটা সুখী সুখী ভাব আসে।
এভাবে দিন যায় রাত আসে, মাস পেরিয়ে বছর। কিন্তু আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কোন কিছু চোখে পড়ে না। আমরা ভাবি দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনে জমে থাকা জঞ্জাল সরাতে ব্যস্ত সরকার।
তাই হয়তো দেরি হচ্ছে। কিন্তু যখন বছর পেরিয়ে যায় আমাদের মনে সন্দেহ জাগে। আস্তে আস্তে সরকারে স্বরূপ প্রকাশিত হয়। আমরা দেখতে পাই কিভাবে একটা রাজনৈতিক দল জনগণের কথা বলে, জনগণের সাথে প্রতারণা করে পরিবাতন্ত্র, লুটপাট আর সীমাহীন দূর্নীতিতে ডুবে থাকে। আমাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
ভেঙ্গে যাওয়া টুকরোগুলো জমিয়ে রাখি আর অপেক্ষা করতে থাকি কবে মিথ্যেবাদী প্রতারক সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। অপেক্ষার প্রহর খুব দীর্ঘ আর কষ্টকর।
দীর্ঘ প্রহর শেষে একসময় সেই সময় আসে, আসে সুযোগ। আমরা এবার আগের দলকে ছুড়ে দিয়ে অন্যদলকে নির্বাচন করি। ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নের টুকরোগুলো জুড়া দেই।
আগের বারের সেই উচ্ছ্বাস যদিও নেই তারপরও ভাল লাগে। ভাল লাগাবোধ নিয়ে আমরা দিন গুনতে থাকি। একসময় বুঝতে পারি সরকার পরিবর্তিত হয়েছে ঠিকই কিন্তু তার রূপের কোন পরিবর্তন হয়নি । সেই পরিবাতন্ত্র, লুটপাট আর দূর্নীতি- যা পার, যে ভাবে পার সবকিছু নিজের করে নাও। জমি, বাড়ী, গাড়ি, নারী.. কোন কিছু বাদ যায় না।
সময়ের পরিক্রমায় আবার সরকার বদল হয়। আবার সেই প্রতারকের দল। তবে এবার তারা অনেক কৌশলী। সবকিছু তারা এমনভাবে করে যাতে সহজে চোখে না পড়ে। কিন্তু বিশালতা এত ব্যাপক যে একসময় হাজার চেষ্টা করে লুকোতে পারে না।
তখন তারা ভিন্নকৌশল খুঁজতে থাকে কিভাবে চিরষ্হায়ীভাবে ক্ষমতা দখলে রাখা যায়। আর মুক্তির উপায় না পেয়ে এটাকে আমরা নিয়তি হিসেবে মেনে নিই।
হঠাৎ ১/১১ আসে। আর আমরা দেখতে পাই ঝকঝকে তকতকে সুট টাই পরিহিত কিছু উচ্চশিক্ষিত লোকজন দেশ চালানোর দায়িত্ব নেয়। আমরা তখন আবার বিভিন্ন স্বপ্নের রঙ বেরঙের বেলুন নিয়ে তাতে চাওয়া পাওয়ার ইচ্ছেগুলোকে বাতাস বানিয়ে ভরতে থাকি।
আমরা এতটাই আবেগতাড়িত হই যে বেলুনগুলিকে একসময় মনের আনন্দে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেই।
কিন্তু হায়! কিছুদূর যাবার পর যখন দেখতে পাই বেলুনগুলি একে একে ফাটতে থাকে তখন আবার কষ্টের সাগরে ভাসতে থাকি। আর অপেক্ষা করতে থাকি হয়তো আমাদেরই কেউ আসবে আমাদের খোঁজে। যদিও জানি অপেক্ষার প্রহর খুব দীর্ঘ এবং কষ্টকর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।