সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com
রঙ ফর্সা করার বিজ্ঞাপন নিয়ে খুব বেশি না হলেও কিছু কথাবার্তা হয়েছে। রঙ ফর্সা করার মধ্যে যে, বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রচারণা চলে সেটাও বলা হয়েছে। ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী নানা বিতর্কের পর একটু সতর্ক হয়েছে। ফর্সার বদলে তারা এখন রঙ উজ্জ্বল করে দিচ্ছে।
কিন্তু মেয়েরা কিছুটা মুক্তি পেলেও এখন পুরুষের পেছনের লেগেছে ফর্সা রঙ। মেনজ অ্যাকটিভ মোটামুটি পুরুষদের ফর্সা করেই ছাড়বে। বিজ্ঞাপনের প্রভাব, বিজ্ঞাপনের নীতি-নৈতিকতা নিয়ে এই ব্লগেও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। পণ্য বিক্রি করাই বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য। ব্যস আর কী? সমাজ সংসারের প্রতি তার দায় ওই পণ্য বিক্রির সঙ্গেই জড়িত।
কিন্তু পণ্য বিক্রি ছাড়াও বিজ্ঞাপনের নানা প্রভাব থাকে। আমি দুটি শিশুকে চিনি যারা টেলিভিশনে প্রধানত যা দেখে তা হলো বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন শেষ হলেই তারা নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বিজ্ঞাপনের সাউন্ড তুলনামূলকভাবে বেশি। রঙও বেশি।
আর উপস্থাপনাও চটকদার। আমরা বিজ্ঞাপন যখন দেখি না, তখনও আসলে বিজ্ঞাপনই দেখি।
কিছু দিন ধরে দেখছি বাংলা লিঙ্ক অথবা ওয়ারিদের একটা দুটা বিজ্ঞাপন। পুরুষের দুনিয়ায় পুরুষেরা কাজ করছে। মেয়েরা বাড়িতে বসে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।
এই তোমার পাঁচটা? উনি সারাদিন ঠোঁট ফুলিয়ে বসে ছিলেন পাঁচটায় তার স্বামী চলে আসবে। অফিস ছুটির পর এক সেকেন্ডের মধ্যে বাড়ি পৌঁছাবে। ওনারা শপিংয়ে যাবেন। অফিসে কাজ কর্ম করে স্বামী এসে কলার টিউন ব্যবহার করে বউয়ের রাগ ভাঙাতে শুরু করলেন। মেয়েরা এরকমই? তারা কাজ করে না।
বাসায় বইসা স্বামী ফেরার অপেক্ষায় বইসা থাকে। অযথা রাগ করে। মেয়েদের এই চেহারাটা দাঁড় না করালেই কি চলতো না?
আরেকটা বিজ্ঞাপনে দেখি, এক মেয়ে ফোন করছে তার প্রেমিক অথবা স্বামীরে। উনি মিটিংয়ে। একটা গান বাজলো, মেয়ে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেল।
কল্পনা থেকে ফিরলো যখন তখন প্রেমিক/স্বামী কইলো আমি মিটিংয়ে। মেয়ে বোকা একটা হাসি দিয়া কইলো ওকে। মানে কী? মেয়েটা ফালতু কামে মিটিংয়ের সময় ফোন করে? তার হাতে মোয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য একটা কলার টিউন?
এই রকম আরও মেলা বিজ্ঞাপন পাওয়া যাবে। মেয়েদের যেইগুলাতে আকাইম্মা, অলস, অথর্ব হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন যারা বানায় তাদের নীতি নাই সেইটা বুঝলাম।
কিন্তু তারা যে সোসাইটিতে থাকে খায় সেইখানে মেয়েরা কি এই রকম নিকি? বা মেয়েদের সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এইরকম নিকি?
কিছু বিজ্ঞাপন অবশ্য সত্যি মন ভাল করে দেয়। বিজ্ঞাপনের নীতি নাই। পণ্য বিক্রি ছাড়া আর কোনো শুভকামনা নাই। তারপরও গার্নিয়েরের বিজ্ঞাপনে যখন আস্তে করে বলে ভালো থাকুন, তখন ক্যান জানি সত্যিই ভালো থাকতে ইচ্ছা করে। ইন্ডিয়ার এয়ার টেলের বিজ্ঞাপনে যখন কিছু বন্ধন চিরস্থায়ী... তখন সেটাকে আপ্তবাক্য বলে ভাবতেই ইচ্ছা করে।
ইদানিং আর একটা বিজ্ঞাপনও ভাল লাগছে। একেবারে নতুন একটা উইশ। অভিনব। চমকে গেছি কথাটা শুনে। হুইসপারের বিজ্ঞাপনে যখন বলে, হ্যাভ আ হ্যাপি পিরিয়ড তখন সেটার মধ্যকার সকল কূটাভাসের অবকাশ সত্ত্বেও মনে হয় সত্যিই তো।
এই ভাল উইশ!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।